৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


কবি মোশাররফ হোসেন খান

-

মোশাররফ হোসেন খান স্বভাব কবি, কথাশিল্পী, সার্বক্ষণিক লেখক। সাহিত্যের অঙ্গনে একজন ঈর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব।
আমি তার সাহিত্যের ভুবনে নবাগত পথচারী। যতই তার লেখালেখির জগতে ঢুকছি, ততই বিস্ময়ে অভিভূত।
১৯৫৭ সালে তার জন্ম যশোর জেলার বাঁকড়া গ্রামে। ছয় দশকের সিঁড়িতে এখন তিনি দাঁড়িয়ে আছেন। স্বাধীনতা সৃষ্টির প্রথম লগ্নে প্রসব বেদনা তিনি দেখেননি। মুসলিম জাতিগোষ্ঠীর স্বকীয় সত্তার অন্বেষণে অগ্নিস্রাবী উৎসাহের বাঁধভাঙা জোয়ারও দেখেননি। ১৯৪৭ সালের ১০ বছর পরে তার জন্ম হলেও অবাক বিস্ময়ে লক্ষ করছি, তার লেখনীর ফল্গুধারায় পূর্বপুরুষের সেই চেতনারই অগ্নিকণা বিচ্ছুরিত হচ্ছে।
নিজেদের সাহিত্য-সংস্কৃতি, কৃষ্টি, তাহজিব ও তমদ্দুনের ভিতকে শক্ত করার জন্য লড়াকু সৈনিকের মতো তিনি কলম যুদ্ধে নেমেছেন। তারই দীপ্র আভা ছড়িয়ে আছে তার সমগ্র সাহিত্য কর্মের নানা অঙ্গনে। তার কলমের গতি খরস্রোতা নদীর মতো প্রবাহমান। কবি হিসেবে তিনি শীর্ষস্থানীয় হলেও গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, সমালোচনা, সম্পাদিত গ্রন্থ, শিশুসাহিত্য, জীবনী সর্বত্র তার সজীব উপস্থিতি।
তার অনেক কবিতা ও গল্প নানান ভাষায় অনূদিত ও প্রশংসিত হয়েছে। অনুবাদের ক্ষেত্রেও তিনি কবিদের মধ্যে ব্যতিক্রম বলে আমার মনে হয়।
আমরা সাধারণ মানুষ মনে করি কবিমাত্রই স্বপ্নচারী, কল্পনাবিলাসী। কবি ভাই মোশাররফ হোসেন খানও তার ব্যতিক্রম নন। কবিতার মাধ্যমে তিনি তার লালিত স্বপ্নকে পাঠকমনে অনুপ্রবেশ করান। শিশুদের জন্য একটি রূপময় ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে তিনি স্বপ্নদিশারী কবির ভূমিকায় প্রশংসনীয় কাজ করে যাচ্ছেন।
১৯৪৭ সালের মধ্য আগস্টে বাঙালি মুসলিম জাতির স্বাধীনতা পাওয়ার শুভলগ্নে এবং প্রথম সাংস্কৃতিক সংগঠন তমদ্দুন মজলিস প্রতিষ্ঠার প্রথম দিন থেকে কর্মী হওয়ার সুযোগে গ্রামবাংলার ও অন্যান্য স্থান থেকে রাজধানী ঢাকায় এসে বসবাসরত সাহিত্য-সংস্কৃতিমনস্ক অনেক অভিবাসী লোকজনের সাথে মেলামেশায় সাহিত্য জগতের অনেকের সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ হয়েছিল আমার। স্বামী কথাশিল্পী শাহেদ আলীর আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে এই পরিচয়ের সীমা আরো প্রসারিত হয়ে উঠেছিল। ১৯৪৮ সালে সৈনিক পত্রিকায় প্রথম লেখা প্রকাশের পর সাহিত্য জগতে আমার অনুপ্রবেশ ঘটে।
কবি মোশাররফ হোসেন খানের লেখার জগতের সাথে পরিচয় আমার বয়সের শেষ প্রান্তে এসে। এই দৈন্যের জন্য আমি লজ্জিত ও অনুতপ্ত। যখন তার সাহিত্য প্রতিভার সাথে আমার পরিচয় হলো; দেখলাম তারুণ্যে দীপ্ত অমিত শক্তিধর একজন লেখককে। সেই সাথে তিনি স্মিত হাসিতে উজ্জ্বল, অমায়িক মিষ্টভাষী, শিষ্টাচারে আকর্ষণীয় একজন মানুষও বটে।
কবিতার ক্ষেত্রে তিনি আশির দশকের কবি গোষ্ঠীর শীর্ষের দিকে অবস্থান করলেও নান্দনিক কথাসাহিত্যের জগতে তার অবদানও কম নয়। তিনি একটি শোসন ও বঞ্চনাহীন আদর্শ সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্নদ্রষ্টা। তার অজস্র লেখাসম্ভারের ফুলে-ফসলের মধ্যে যত ঘুরে বেড়াচ্ছি, ততই বলতে ইচ্ছে করছেÑ বয়সের চেয়ে সৃষ্টিকর্মে তুমি অনেক বেশি সমৃদ্ধ। আগাগোড়া কবি হিসেবে তার পরিচয় হলেও বহুগুণে গুণান্বিত তিনি। শুভ সুন্দরের বার্তাবাহক, কল্যাণ অভিসারী, প্রকৃতি প্রেমিক, দুস্থ মানবতার সেবায় উৎসর্গীকৃত একজন পথিকৃৎ।
আমার মনে হয়, কবি মোশাররফ হোসেন খানের জন্মই হয়েছে কবিতার জন্য। কেবল সাহিত্যের জন্যই। গোটা জীবনই তিনি তাঁর সেই সাক্ষ্য বহন করে চলেছেন।
বয়স এখন তার ৬০ বছর। মধ্যম বয়সের প্রাজ্ঞ অভিজ্ঞতা ও তারুণ্যের শেষ ¯িœগ্ধতাÑ দুইয়ের সমন্বয়ে সময়ের ¯্রােতে তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন আরো সামনের দিকে। স্বপ্নের মঞ্জিলে পৌঁছানোর জন্য এই বয়স যথেষ্ট হলেও আমাদের প্রার্থনা তিনি আরো এগিয়ে যান। তার কর্মের ফসল কলমের আঁচড়ে বাংলা সাহিত্যের ভাণ্ডার আরো সুসমৃদ্ধ করুক। মহামহিম আল্লার দরবারে এই প্রার্থনা করি। হ


আরো সংবাদ



premium cement
দোয়ারাবাজারে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ করে হত্যা, আটক ১ বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের বাধাহীন প্রবেশের দাবি সম্পাদক পরিষদ ও নোয়াবের পেকুয়া উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন বিএনপির ২ প্রার্থী নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন ১৮৫ দিন : শিক্ষামন্ত্রী মঙ্গলবার ২ হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং, দুর্ভোগে মানুষ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা বাড়ল জ্বালানি তেলের দাম, কার্যকর বুধবার বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী ‘ইসলামী সমাজ বিপ্লব ছাড়া মানুষের মুক্তি সম্ভব নয়’ ইসরাইলে জার্মানির অস্ত্র বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে আইসিজের অস্বীকৃতি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন শাহরাস্তি উপজেলা আ’লীগ সভাপতি

সকল