২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
রোগীর চাপ সামাল দিতে বিকল্প উপায়

নারায়ণগঞ্জে করোনা হাসপাতালের কোনো বেড খালি নেই

নারায়ণগঞ্জে করোনা ডেডিকেটেট হাসপাতাল - ছবি : নয়া দিগন্ত

নারায়ণগঞ্জে করোনা ডেডিকেটেট হাসপাতাল খানপুরে করোনা রোগীদের কোনো বেড খালি না থাকায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগী স্থানান্তর শুরু হয়েছে।

ইতোমধ্যে সোনারগাঁ ছাড়া প্রতিটি উপজেলায় করোনা রোগীদের জন্য ২০ বেড স্থাপন করা হয়েছে। উপজেলা কমপ্লেক্সগুলোয রোগী পূর্ণ হলে নারায়ণগঞ্জ শহরের শায়েস্তা খান সড়কে জুডিশিয়াল ভবনে অস্থায়ী হাসপাতাল স্থাপনের চিন্তা করছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।

খানপুর হাসপাতালের তত্বাবধায় আবুল বাশার সোমবার দুপুরে জানান, করোনা হাসপাতালের সব বেড পূর্ন হয়ে গেছে। রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়া ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত হয়েছে উপজেলা হাসপাতালগুলোতে করোনা রোগীদের বেড বৃদ্ধি করা হবে।

নারায়ণগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জন ডা: মুহাম্মদ ইমতিয়াজ সোমবার দুপুরে নয়া দিগন্তকে বলেন, করোনা সংক্রমণ ও রোগী বেড়ে যাওয়ায় খানপুর হাসপাতালের সব বেড পূর্ণ হয়ে গেছে। সেখানে থাকা ১১০টি বেডের কোনোটিই খালি নাই। এই মুহূর্তে আমরা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করছি রোগীদের। সেখানে অক্সিজেন সেবাসহ করোনা রোগীদের যাবতীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। হাসপাতালের কোনো শয্যা আর খালি নেই।

এর আগে বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলনের সভায় জানানো হয়, করোনা হাসপাতালে রোগী নিতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা রোগী ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

ওই সভায় আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পর রোগী রাখা হবে পুরাতন কোর্টের নবনির্মিত ভবনে।

সিভিল সার্জন আরো বলেন, প্রতিটি উপজেলায় ২০ শয্যার জন্য যে কয়টি অক্সিজেন সিলিন্ডার প্রয়োজন তা রয়েছে। তাদের নিজস্ব অ্যাম্বুল্যান্সের মাধ্যমে সেগুলো রিফিল করার কাজ অব্যহত রয়েছে। শুধুসোনারগাঁ উপজেলা ছাড়া বাকি সব স্থানেই ২০ শয্যার হাসপাতাল রয়েছে। সোনারগাঁ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবনের কাজ চলমান থাকায় সেখানে এর সংখ্যা কম।

হাসপাতালের কোনো শয্যা আর খালি নেই। রোগী নিতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা রোগী ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

জেলার পাশাপাশি অধিকাংশ উপজেলায় অক্সিজেন সিলিন্ডারসহ প্রাথমিক উপকরণ রয়েছে বলে জানান হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা। তবে গুরুতর অসুস্থ করোনা রোগীদের এসব হাসপাতালে রাখা সম্ভব নয় তাও নিশ্চিত করেন চিকিৎসকরা। সেক্ষেত্রে রোগীদের অন্যত্র রেফার্ড করা ছাড়া উপায় থাকে না চিকিৎসকদের। ফলে রোগীর তুলনায় বেড বেশী থাকলেও রোগীরা ছুটছেন উন্নত চিকিৎসা সেবা পাওয়া যায় এমন হাসপাতালে।

আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বর্তমানে ৯ জন রোগী ভর্তি আছেন। ২০ শয্যার এই চিকিৎসা কেন্দ্রে পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি না থাকলেও মোটামুটি সরঞ্জামাদি আছে বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা: সায়মা আফরোজ।

সোনারগাঁ উপজেলায় করোনা রোগীদের জন্য ১০টি শয্যা প্রস্তুত রাখা হলেও বর্তমানে সেখানে কোনো রোগী ভর্তি নেই। তবে এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আগে রোগী ছিলেন বলে নিশ্চিত করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা: পলাশ কুমার সাহা।

তিনি বলেন, রোগীদের সেবা দেয়ার জন্য আমাদের অক্সিজেনসহ যা যা প্রয়োজন তা প্রস্তুত আছে। রোগী পেলেই আমরা সর্বোচ্চ সেবা দিতে পারবো।

রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০ শয্যার ভেতর ১৩ জন করোনা রোগী চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। প্রতিনিয়তই রোগী এই কেন্দ্র থেকে রেফার করা হচ্ছে অন্যত্র। তবে পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি আছে বলে দাবি করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসার ডা: মশিউর রহমান সরকার।

বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র নারায়ণগঞ্জ শহরের সবচেয়ে কাছে অবস্থিত। এই কেন্দ্রে ২০ শয্যার ভেতর চারজন করোনা রোগী ভর্তি রয়েছেন। তবে এই চারজনের ভেতর তিনজনই হাসপাতালের স্টাফ বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী সার্জন ডা: রেজওয়ানা শারমীন। তাদের এই কেন্দ্রে অক্সিজেনসহ অন্যান্য উপাদান আছে বলে নিশ্চিত করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জে ৩১ জুলাই শনিবার ২৪ ঘণ্টায় ২২১ জনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে।


আরো সংবাদ



premium cement