০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`


মৌলভীবাজার ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ

কর্মহীন শ্রমিকদের নগদ অর্থ সহায়তা প্রদানের দাবি

-

আসন্ন ঈদুল ফিতরের কমপক্ষে এক সপ্তাহ আগে প্রাতিষ্ঠানিক-অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের সব শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি ও বোনাস (উৎসব ভাতা) পরিশোধ এবং লকডাউনের কারণে কর্মচ্যুত ও কর্মহীন শ্রমিক-শ্রমজীবীদের নগদ অর্থ সহায়তা প্রদানের দাবি করেছেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের মৌলভবাজার জেলা কমিটির সভাপতি মো: নুরুল মোহাইমীন এবং সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাস। গতকাল সংবাদপত্রে পাঠানো একযুক্ত বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় সরকার গত ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউন ঘোষণা করেছেন। অথচ সরকার শ্রমিক ও শ্রমজীবীদের জীবন ও জীবিকার কোনো ব্যবস্থা করেনি। করোনা দুর্যোগের কারণে গত বছরও প্রায় তিন মাস হোটেল-রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দীর্ঘ দিন বন্ধ ছিল। এ বছর ৫ এপ্রিল থেকে অধিকাংশ হোটেল রেস্টুরেন্ট, দুরপাল্লার গণপরিবহন, যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় এবং অপ্রতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিক ও নিম্ন আয়ের কর্মজীবী অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বিভিন্ন পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে করোনার কারণে নতুন করে গত এক বছরে আড়াই কোটি মানুষ বেকার হয়েছেন এবং ৪২ শতাংশ শ্রমিকের আয় আগের তুলনায় কমেছে। ৭৮ শতাংশ পরিবার বেঁচে থাকার মতো ন্যূনতম খাবার ও শিশু খাদ্য জুটাতে পারছে না। এর বিপরীতে করোনাকালীন সময়ে ব্যাপক লুটপাটের ফলে ২০২০ সালে দেশে ১০ হাজার ৫১ জন নতুন কোটিপতির সৃষ্টি হয়েছে। এভাবে দেশ ভারসাম্যহীন এক ব্যাপক বৈষম্যমূলক সমাজের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। দেশে গরিব মানুষের সংখ্যা বাড়লেও সরকারিভাবে গত বছর ৫০ লাখ পরিবারকে নগদ ২৫০০ টাকা সহযোগিতার ঘোষণা দেয়া হলেও এ বছর তা কমিয়ে ৩৬ লাখ করা হয়েছে। আর এই ৩৬ লাখ দরিদ্র পরিবারের সহযোগিতা যে গত বছরের ন্যায় পক্ষপাতিত্ব, স্বজনপ্রীতি, অনিয়ম ও দুর্নীতিতে শেষ হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সরকার শ্রমিক-শ্রমজীবীদের জীবন জীবিকার নিশ্চয়তার বিধান করতে পারলেও গার্মেন্ট মালিকদের জন্য নানারকম প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য সুযোগ-সুবিধা ও আর্থিক প্রণোদনা অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু শ্রমিক ও শ্রমজীবীদের এই দুঃসহ সময়ে না কোনো মালিক তাদের সহায়তা করছেন; না তারা পাচ্ছেন সরকারি সহায়তা। শ্রমিক ও শ্রমজীবীদের জীবন ও জীবিকার নিশ্চয়তা বিধান না করে লকডাউন চাপিয়ে দেয়া সরকারের দায়হীনতার পরিচয় বহন করে। নেতৃবৃন্দ করোনার দুর্যোগকালে চা ও রাবার শ্রমিকদের জন্য পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা না করা এবং ৫ মাস অতিবাহিত হতে চললেও মজুরি বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ না করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মোটা চালের কেজি ৫০ টাকাসহ সব নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির সময়ে চা-শ্রমিকদের সর্বোচ্চ দৈনিক মজুরি মাত্র ১২০ টাকা। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে বর্তমান বাজারদরের সাথে সঙ্গতি রেখে ছয়-সাতজনের একটি শ্রমিক পরিবার সুস্থভাবে বেঁচে থাকার প্রয়োজনে চা-শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৬৭০ টাকার নির্র্ধারণ করার দাবি জানান। আসন্ন ঈদুল ফিতরের কমপক্ষে এক সপ্তাহ আগে প্রাতিষ্ঠানিক-অপ্রাতিষ্ঠানিক নির্বিশেষে সব শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি ও বোনাস (উৎসব ভাতা) প্রদান এবং বন্ধ পাটকল ও চিনিকল শ্রমিকদের সব পাওনাদি পরিশোধ, সব ধরনের ছাঁটাই ও লে-অফ বন্ধ, হোটেল-রেস্টুরেন্ট, নৌযানসহ সব ধরনের পরিরহন, স’মিল, পাদুকা, বারকি, লোকাল গার্মেন্ট, দর্জি, মুদ্রণ, পুস্তক বাঁধাই, নির্মাণ, পরিচ্ছনতাকর্মী, গৃহকর্মী, রিকশা-ঠেলা-ভ্যান শ্রমিক, হকারসহ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের সব শ্রমিকদের কাজ, খাদ্য, চিকিৎসার নিশ্চয়তা ও রেশন চালুর দাবি জানান।বিজ্ঞপ্তি।

 


আরো সংবাদ



premium cement