২০ মে ২০২৪, ০৬ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলকদ ১৪৪৫
`


ঈশ্বরগঞ্জে মাটির নিচ থেকে ওঠে এলো গুপ্তধন

ঈশ্বরগঞ্জে মাটির নিচ থেকে ওঠে এলো গুপ্তধন - ছবি : নয়া দিগন্ত

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে টিউবওয়েল বসানোর সময় পাওয়া যায় মাটির হাড়িভর্তি প্রাচীন রৌপ্যমুদ্রা। মাটি খুঁড়তে টিউবওয়েলের পাইপ বসানোর সময় এক থেকে দেড় ফুট মাটি খুঁড়তেই ছোট আকৃতির মাটির একটি হাঁড়ি বের হয়ে আসে। হাঁড়িতে থাকা শক্ত ধাতব বস্তুর অস্তিত্ব টের পান শ্রমিকেরা। কৌতূহলী হয়ে হাঁড়ি খুলতেই বেড়িয়ে আসে অনেকগুলো প্রাচীন রৌপ্যমুদ্রা। খবরটি মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে আশেপাশের এলাকায়। অনেকেই জড়ো হন সেই‘গুপ্তধন' দেখতে।

বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ঈশ্বরগঞ্জ পৌর এলাকার কাকনহাটি গ্রামের মো: সবুজ আলীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনাস্থল থেকে ঈশ্বরগঞ্জ থানা পুলিশ রৌপ্যমুদ্রাগুলো গণনা করে ৭৭টি মুদ্রা জব্দ করে থানায় নিয়ে যায়। উদ্ধার হওয়া মুদ্রার গায়ে খোদাই করে লেখা রয়েছে উর্দু ও আরবি ভাষা। প্রত্যেক মুদ্রার ওজন প্রায় ১১ গ্রাম।

টিউবওয়েল বসানোর কাজে নিয়োজিত শ্রমিক মো: মুজিবুর রহমান বলেন,‘আজ সকাল ১০টায় সবুজ মিয়ার বাড়ির বসতঘরের সামনে টিউবওয়েল বসাতে আসি। টিউবওয়েল বসানোর আনুষাঙ্গিক কাজ শেষে আনুমানিক বেলা ১২টার দিকে মাটি খুঁড়ে পাইপ বসাতে শুরু করি। এক থেকে দেড় ফুট মাটি খুঁড়ার একপর্যায়ে একটি ছোট মাটির হাঁড়ি দেখতে পাই। হাঁড়িটি ভেঙে আগের দিনের অনেকগুলো রৌপ্য মুদ্রা পাওয়া যায়। তখন বাড়ির মালিককে কিছু মুদ্রা দেই। আমি কয়েকটি মুদ্রা নিই। আরো কয়েকজন বাচ্চাও এই মুদ্রা নেয়। একপর্যায়ে খবরটি ছড়িয়ে পড়লে এলাকার লোকজন এসে সেগুলো আমাদের কাছ থেকে নিয়ে যায়।’

বাড়ির মালিক সবুজ মিয়া বলেন,‘আমি অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। আমার বাড়িতে টিউবওয়েল বসানোর শ্রমিকেরা ওই রৌপ্যমুদ্রা গুলো একটি মাটির হাঁড়িতে পায়। আমি বাড়িতে ছিলাম না, এসে দেখি বাড়িতে অনেক লোকজন ও পুলিশ আসে।

একই গ্রামের সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কাশেম তালুকদার বলেন, খবর পেয়ে আমি সবগুলো মুদ্রা একসাথে করি। এইগুলো নিশ্চিত প্রাচীন রৌপ্য মুদ্রা। এতে কোনো সন্দেহ নেই। পরে পুলিশ ও প্রশাসনের লোকজন আসলে আমি মুদ্রাগুলো তাদের হাতে বুঝিয়ে দেই।

এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ মাজেদুর রহমান বলেন,‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রৌপ্যমুদ্রাগুলো জব্দ করে। ধারণা করা হচ্ছে, এগুলো প্রাচীন রৌপ্যমুদ্রা। মোট ৭৭টি রৌপ্যমুদ্রা ও ভাঙা মাটির হাঁড়ির কিছু অংশ জব্দ করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: ইকবাল হোসাইন জানান, থানা পুলিশের সহযোগিতায় মুদ্রাগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। মুদ্রার গায়ের লেখা দেখে অনেকেই ধারণা করছেন এগুলো মূল্যবান মুদ্রা। ব্রিটিশ শাসনামলে তৈরি বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির কয়েন।


আরো সংবাদ



premium cement