৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


রাজধানীতে বিক্ষোভ শুধু খালেদা জিয়া নয় স্বাধীনতাও বন্দী : রিজভী

বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে রাজধানীতে বিএনপির বিক্ষোভ : নয়া দিগন্ত -

দলের চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন। এতে নেতৃত্ব দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। গতকাল মঙ্গলবার সকালে মিছিলটি নয়াপল্টনস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে আবারো বিএনপি কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। মিছিলে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের গোলাম মাওলা শাহীন, ছাত্রদল নেতা কাউসারসহ বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
মিছিল শেষে এক পথসভায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, মিডনাইট নির্বাচনের অবৈধ সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ গায়ের জোরে বন্দী করে রেখেছে। এর মধ্য দিয়ে তারা শুধু দেশের একজন জনপ্রিয় নেত্রীকেই বন্দী করে রাখেনি বরং তারা গোটা দেশ, গণতন্ত্র, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, ব্যক্তি স্বাধীনতা এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকেও শ্বাসরুদ্ধকর বন্দীশালায় আটকে রেখেছে। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির মধ্য দিয়েই গণতন্ত্র ফিরবে এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নিরাপদ হবে, দেশের মানুষ নিরাপত্তা ফিরে পাবে। তাই দেশনেত্রীর মুক্তির জন্য আমাদের আর বসে থাকলে চলবে না, জনগণকে সাথে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে ভীষণ অসুস্থ, তিনি চলাফেরা করতে পারছেন না, নিজ হাতে খেতে পারছেন না। এমতাবস্থায় সরকার প্রধানকে বলবÑ প্রতিহিংসার রাজনীতি ভুলে গিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি দিন। নইলে জনগণের তীব্র ক্ষোভে আপনার মসনদ ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে।
রিজভী বলেন, স্বৈরাচারের কুৎসিত আত্মা দিয়ে জাতীয় পার্টি তৈরি বলেই মশিউর রহমান রাঙ্গাদের মতো রাজনৈতিক ‘ভবঘুরেরা’ গণতন্ত্রের জন্য জীবন উৎসর্গকারী নূর হোসেনের মতো শহীদদের বিরুদ্ধে অশ্রাব্য কথা বলতে পারে। এরা লুটপাটের আদর্শে উদ্বুদ্ধ গণতন্ত্রের শত্রু বলেই গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শহীদ নূর হোসেনের বিরুদ্ধে কুৎসা রটাতে পারে। সেজন্য তারা গণতন্ত্র হত্যাকারী আরেকটি শক্তি বর্তমান হানাদার শাসকদের সাথে পরাজিত স্বৈরাচার হাত মিলিয়ে গণতন্ত্র এবং সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এই দুই স্বৈরাচার এখনো গণতান্ত্রিক প্রথা-প্রতিষ্ঠানকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য গণতান্ত্রিক শক্তিকে গুম ও খুনের মাধ্যমে দেশে বিভীষিকা তৈরি করে রেখেছে। অথচ শহীদ নূর হোসেন আওয়ামী লীগেরই কর্মী ছিলেন। কিন্তু নির্লজ্জভাবে ‘৯০’র পরাজিত স্বৈরাচারের ‘পথকলিদের’ সাথে জোট করে নূর হোসেনদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে গণতন্ত্রকে দেশের মাটি থেকে উচ্ছেদ করেছে। আমি শহীদ নূর হোসেন সম্পর্কে রাঙ্গার অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহারের তীব্র ধিক্কার ও প্রতিবাদ জানাই।
তিনি বলেন, হেনস্তা ও অপমানের ভয়ে নাগরিক সমাজ এখন স্বাধীন মত প্রকাশের সাহস হারিয়ে ফেলেছে। এই দুঃসহ অবস্থার মধ্যেও অবৈধ সরকারের পক্ষে একদল উচ্ছিষ্টভোগী কিছু লোকের গুণকীর্ত্তনে মানুষ এখন অতীষ্ঠ হয়ে উঠেছে। দলীয়করণ, ভীতিপ্রদর্শন ও নানা অপকৌশলের মাধ্যমে দেশের বিচার ব্যবস্থাকে আজ প্রহসনে পরিণত করা হয়েছে। সারা দেশে প্রকাশ্য সন্ত্রাস করছে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয় না। তাদের কোনো বিচার হয় না। এই দুঃসহ অবস্থা থেকে মানুষ মুক্তি পেতে চায়, তাদের অধিকার ফিরে পেতে চায়। সেই আশা-আকাক্সক্ষাকে বাধাগ্রস্ত করতেই শাসকগোষ্ঠী দেশনেত্রীকে মিথ্যা মামলায় কারাবন্দী করে রেখেছে। দলীয় স্বার্থ ও সুবিধার্থে সংবিধান বদল করে গায়ের জোরে যারা এখন ক্ষমতায় টিকে আছে তারা জনগণের ভোটে আসেনি। দেশের মানুষ তাদের নির্বাচিত করেনি। নৈতিক দিক থেকে এরা অবৈধ।

 


আরো সংবাদ



premium cement