২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


বাকৃবিতে ভিসির কক্ষে অফিসারদের হাতাহাতি

-

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ভিসি কার্যালয়ে অফিসারদের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে। গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার পরিষদের কর্মকর্তারা বিভিন্ন দাবি নিয়ে কোনো অনুমতি ছাড়াই হঠাৎ ভাইস চ্যান্সেলর কার্যালয়ে প্রবেশ করে হট্টগোল ও উত্তেজিত হয়ে নিজেদের মধ্যে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় ভাইস চ্যান্সেলরের সামনেই প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো: জসিমউদ্দিন খানকে মারতে তেড়ে যান অফিসার পরিষদের কয়েকজন নেতা। বাকৃবি কর্মকর্তাদের সংগঠন অফিসার পরিষদের নেতারা বিভিন্ন দাবি নিয়ে পূর্ব অনুমতি ছাড়াই কথা বলতে ভাইস চ্যান্সেলরের প্রফেসর ড. মো: আলী আকবরের কাছে গেলে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী দুপুর ১২টায় ভিসি কার্যালয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক প্রথমবর্ষের ভর্তি বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কোনো অনুমতি ছাড়াই প্রায় ৩০-৩৫ জন কর্মকর্তা ভিসির কার্যালয়ে ঢুকে পড়েন। তারা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ভিসির সাথে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে গালিগালাজ করতে শুরু করেন।
এ সময় প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মো: জসিমউদ্দিন খান অফিসারদের সবাইকে হট্টগোল না করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে কথা বলতে ও আলোচনায় বসার কথা বলেন। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং ভিসি, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত), প্রক্টর, ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়ক, ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টার (ভারপ্রাপ্ত) সামনেই প্রো-ভিসির দিকে তেড়ে যান এবং গালিগালাজ করতে থাকেন।
কর্মকর্তাদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রসারণ কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আবুল বাসার আমজাদ, ডেপুটি লাইব্রেরিয়ান মো: খাইরুল আলম নান্নু, ক্রীড়া প্রশিক্ষণ বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মোস্তাইন কবীর সোহেল মারমুখী হয়ে পড়েন। পরে কর্মকর্তারা নিজেদের মধ্যে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় ঘটনাস্থলে প্রক্টর এবং ভারপ্রাপ্ত ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা উপস্থিত থাকলেও কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মো: জসিমউদ্দিন খান বলেন, আমি অফিসার পরিষদের নেতাদের কথা বলতে এবং অন্যদের সাপ্লিমেন্ট করতে বলি।
এতে ওরা আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করে এবং নিজেদের মধ্যে ঝগড়া শুরু করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ অভিভাবকের সামনে অফিসারদের এমন আচরণ নিয়মবহির্ভূত।
সাত দফা দাবিতে অফিসার পরিষদের চলমান কর্মবিরতির মধ্যে রেজিস্ট্রার ওই সভায় উপস্থিত থাকায় কর্মকর্তারা তার ওপরও চড়াও হন। পরে কর্মকর্তারা রেজিস্ট্রারের হাত ধরে টানাটানি শুরু করেন এবং কার্যালয় থেকে বের করে নিয়ে যান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ মো: ছাইফুল ইসলাম বলেন, অফিসাররা বিভিন্ন সময় আমাকে তাদের দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করতে বলেন। ভিসি স্যারের আমন্ত্রণে একটি অনুষ্ঠানে থাকায় আমি তাদের সাথে যোগ দিতে পারিনি।
ঘটনার সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের হাত থেকে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন অফিসার পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক জিয়াউল হক টিটু, ক্রীড়া প্রশিক্ষণ বিভাগের মোহাম্মদ মোস্তাইন কবীর সোহেল, মোহাম্মদ আবুল বাসার আমজাদ, সংস্থাপন শাখার মোহাম্মদ আশিকুল আলম বাচ্চু, এনামটি অ্যান্ড হিস্টোলজি বিভাগের সেকশন অফিসার মো: মেহেদি হাসান রাসেল।
তারা বিভিন্নভাবে সাংবাদিকদের দেখে নেয়ার হুমকি দেন এবং ছবি মুছে দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন।
সাংবাদিকদের সাথে কয়েকজন কর্মকর্তার এমন আচরণে দুঃখ প্রকাশ করে অফিসার পরিষদের সভাপতি মো: আরিফ জাহাঙ্গীর বলেন, বিষয়টা অনাকাক্সিক্ষত এবং দুঃখজনক। বিভিন্ন বিষয়ে প্রশাসনের ওপর ক্ষোভ থেকে এই ঘটনা ঘটেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো: আলী আকবর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পক্ষের বিভিন্ন বিষয়ে দাবি-দাওয়া থাকতেই পারে। দাবিগুলো একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পূরণ করতে হয়।
হুট করে প্রশাসনের সর্বোচ্চ বডির সাথে এ ধরনের আচরণ কখনো কাম্য নয়।
শিক্ষক সমিতি ও গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

 


আরো সংবাদ



premium cement