১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলকদ ১৪৪৫
`


ট্রাক ড্রাইভারকে হত্যা করে রড ছিনতাই

রহস্যজনক কারণে রড ক্রেতা ধরাছোঁয়ার বাইরে

-

ড্রাইভার আল-আমিনকে (৩৩) হত্যা করে ট্রাকে থাকা একেএস কোম্পানির রড ছিনতাই করার ঘটনায় পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার দাসপাড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকার প্রভাবশালী ব্যবসায়ী মাসুদ রানাকে রহস্যজনক কারণে গ্রেফতার করছে না পুলিশ। গত মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাতে বাউফলের দাসপাড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাসুদ রানার একতা এন্টারপ্রাইজের গোডাউন থেকে ছিনতাইকৃত ১৩ মেট্রিক টন রডের প্রায় ৯ মেট্রিক টন রড বাউফল থানা পুলিশের সহায়তায় দশমিনা হাজিরহাট নৌ-পুলিশ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় পুলিশ একতা এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার নান্নু মিয়া (৪৫), কর্মচারী দিলিপ (৫০) ম্যানেজার শাহাদুল (৪০) এবং দশমিনা উপজেলার ৬৯ নম্বর মধ্য জৌতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বিশিষ্ট ঠিকাদার মজিবর রহমানকে আটক করলেও রহস্যজনক কারণে গোডাউন মালিক মাসুদ রানাকে আটক করেনি পুলিশ। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদি সবুজ মিয়া।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দশমিনা নৌ-পুলিশের এসআই আল-মামুন বলেন, ট্রাকের ড্রাইভার আলআমিনকে খুন করে ঘাতকরা রডগুলো কালাইয়া বাজারের একতা এন্টারপ্রাইজের মালিক মাসুদ রানার কাছে নগদ টাকায় বিক্রি করে দেয়। মাসুদ রানা ওই রডগুলো গুদামে রেখে দেন। তদন্তের একপর্যায়ে নিশ্চিত হয়েই রডগুলো মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাতে ওই গুদাম থেকে জব্দ করা হয়। রড পরিবহনে নিয়োজিত ট্রাকটিও বাকেরগঞ্জের বোয়ালিয়া বাহাদুরপুর এলাকা থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে দশমিনা হাজিরহাট নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আক্তার হোসেন বলেন, এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। গুরুত্বের সাথে মামলার তদন্ত চলছে। ছিনতাইকৃত রড ক্রয়ের ব্যাপারে মাসুদ রানা বলেন, আমি মজিবর নামের এক ঠিকাদারের কাছ থেকে রডগুলো ক্রয় করেছি। তিনি (মজিবর) আমার পূর্ব পরিচিত। রডগুলো ছিনতাইকৃত কি না তা আমার জানা ছিল না।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, আলআমিনকে পরিকল্পিতভাবে খুন করে রড ছিনতাই করা হয়েছে। আর ছিনতাইকৃত রড পাওয়া গেছে একতা এন্টারপ্রাইজে। সুতরাং একতা এন্টারপ্রাইজের মালিক মাসুদ রানা কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারেন না।
এ বিষয়ে পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার সাইদুল ইসলাম বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। তদন্তে যারা অপরাধী প্রমাণিত হবে তাদের প্রত্যেকেই আইনের আওতায় আনা হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৭ এপ্রিল চট্টগ্রামের আবুল খায়ের ইন্ডাস্ট্রিজের কারখানা থেকে ঢাকা মেট্রো-ট-১৬-৫১৩৮ নম্বরের একটি ট্রাক ১৩ মেট্রিক টন রড নিয়ে বাউফলের কালিশুরী বাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। পরের দিন ১৮ এপ্রিল কালিশুড়ীর খান এন্টারপ্রাইজে রডগুলো আনলোড করার কথা ছিল। কিন্তু ১৮ এপ্রিল ট্রাকের ড্রাইভার আলআমিনকে ফোন করে বন্ধ পান তার মামা ট্রাকের মালিক মো: সবুজ। ২০ এপ্রিল দশমিনার নদীতে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় আলআমিনের লাশ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে দশমিনা থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন আলআমিনের মামা সবুজ। এরপরই ঘটনার রহস্য উদঘাটনে নামে পুলিশের একাধিক টিম।


আরো সংবাদ



premium cement