০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


পাবনার মৎস্যভাণ্ডার খ্যাত সুতিখালি নদী এখন মৃত

বেড়ার এক সময়ের খরস্রোতা সুতিখালী নদী শুকিয়ে গেছে : নয়া দিগন্ত -

পাবনার বেড়া উপজলার সুতিখালি নদীতে পানি নেই, মাছ নেই। গভীরতাহীন এ নদীতে পানির স্রোতধারা এখন শূন্যের কোঠায়। পাবনা জেলার এক সময়ের মৎস্যভাণ্ডার খ্যাত সুতিখালি নদী এখন মৃত। নদীর বিস্তীর্ণ বুকজুড়ে বেশিরভাগ অংশেই ধানসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ করা হচ্ছে। নেই দু’কুল ভাঙা উত্তাল স্রোতের। তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়া ও অবৈধ দখলে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে সুতিখালি নদী। এতে জীববৈচিত্র্য, মৎস্য, কৃষি অর্থনীতি, নৌ-যোগাযোগ ও পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। নদীপাড়ের শত শত জেলে পেশা বদল করে অন্য পেশায় চলে গেছে।
সাঁথিয়া উপজেলা মৎস্য অফিসের দেয়া তথ্য মতে, সাঁথিয়া-বেড়া উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত সুতিখালি নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ৯০ কিলোমিটার। এক সময় নদীর দু’পাড়ের চাষিরা নদী থেকে জমিতে সেচ দিয়ে ফসল ফলাতো। নদী শুকিয়ে যাওয়ায় অগভীর নলকূপ বসিয়ে জমিতে সেচ দিতে হচ্ছে। এতে উৎপাদন ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে। বর্তমানে সুতিখালী নদীর আংশিক পাবনা সেচ ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের নিষ্কাশন ক্যানেল হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। পানির অভাবে বিপন্ন সুতিখালি নদী বর্ষাকাল ছাড়া বাকি মওসুমে থাকে পানিশূন্য।
সাঁথিয়া উপজেলার সোনাতলা গ্রাম লাগোয়া ইছামতি নদী থেকে উৎপত্তি সুতিখালি নদী দু’টি ধারায় বিভক্ত হয়ে একটি ধারা পশ্চিম দিকে ফরিদপুর, ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে চলনবিলের সাথে মিলিত হয়েছে। অপর ধারাটি পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে বেড়ার অধিননগরে হুড়াসাগর নদের সাথে মিলিত হয়েছে। ফরিদপুর, ভাঙ্গুড়া ও চাটমোহর অংশের সুতিখালি নদী প্রায় পুরোটাই দখল হয়ে গেছে। সাঁথিয়া ও বেড়া অংশ অবৈধ দখল-দূষণে মৃতপ্রায়।
সুতিখালি নদী পাড়ের প্রবীণ ব্যক্তিরা বলেন, জন্মের পর থেকেই দেখছি বাড়ির পাশে নদী ছিল। ২৪-২৫ বছর আগেও সারাবছর ধরে বাড়ির সবাই নদী থেকে মাছ ধরতো। শীত মওসুমে শত শত মানুষ পলো, জাল, ডালা, খুচন নিয়ে মাছ ধরতে নেমে যেত। কেউ কেউ খালি হাতে মাছ ধরত। বোয়াল, কাতল, মৃগেল, লওলা, শোল, গজার, কৈ, মাগুর, শিং, পাবদা, টেংরা, পুঁটি, আইড়, ভ্যাদা, বাইম, খলিসা, ফলি, চিংড়ি, চিতলসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরা পড়ত। এখন সুতিখালি নদী শুকিয়ে যাওয়ায় মাছ ও জলজপ্রাণী বিলুপ্তপ্রায়।
বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, সুতিখালি নদী এখন পাবনা সেচ ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের নিষ্কাশন ক্যানেল হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। অবৈধ দখল-দূষণসহ নানা কারণে এ নদী এখন সংকুচিত হয়ে গেছে।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল