রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটে এখন সুনসান নীরবতা বিরাজ করছে। একসময়ের ব্যস্ততম এই লঞ্চঘাটে নেই কোনো যাত্রীর চাপ। লঞ্চের ট্রিপ সংখ্যাও কমে গেছে। ফলে বেশির ভাগ সময়ই লঞ্চের চালক ও শ্রমিকরা ঘাটে বসে অলস সময় পার করছেন। লোকসানে পড়তে হচ্ছে লঞ্চ মালিকদের। সম্প্রতি তেলের দাম বৃদ্ধিতে যাত্রী ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় লঞ্চের যাত্রী এখন নেই বললেই চলে। জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির পর থেকে ৩০ টাকার ভাড়া এখন ৪৫ টাকা হয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, সারি সারি লঞ্চ পন্টুনের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছে। যাত্রী না থাকায় প্রতিটি লঞ্চ স্বল্পসংখ্যক যাত্রী নিয়ে পৌনে এক ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা পরপর ঘাট থেকে ছেড়ে যাচ্ছে। ঠিক একইভাবে পাটুরিয়া থেকেও ছেড়ে আসা লঞ্চগুলো স্বল্পসংখ্যক যাত্রী নিয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে আসছে। আগে উভয় ঘাট থেকে ১০-১৫ মিনিট পরপর লঞ্চভর্তি যাত্রী নিয়ে লঞ্চগুলো ছেড়ে যেত। এখন ঘাটে যাত্রীর চাপ নেই। কুলি, দালাল ও লঞ্চ কর্মচারীদের হাঁকডাক নেই।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ও আরিচা-নগরবাড়ী নৌপথে মোট ২৫টি লঞ্চ চলাচল করে। এর মধ্যে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ১৭টি আর আরিচা-নগরবাড়ী রুটে আটটি লঞ্চ চলাচল করে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার আগে প্রতিদিন গড়ে ৩০-৪০ হাজার যাত্রী দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাট দিয়ে পদ্মা পারাপার হতো।
পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর সেই চাপ কমে গেছে। এখন মাত্র ৫-৮ হাজার যাত্রী পার হয় প্রতিদিন। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় পণ্যবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাসের সিরিয়াল না থাকায় লঞ্চঘাট এলাকায় যাত্রীর চাপ কমে গেছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। ফরিদপুর থেকে আসা যাত্রী শহিদ শেখ ও বিল্লাল মিজি জানান, তারা লোকাল বাসে করে দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত এসেছেন। এখন নদী পার হতে লঞ্চঘাটে এসেছেন। টিকিট কেটে সরাসরি তিনি লঞ্চে ওঠেন। লঞ্চ ছাড়ার অপেক্ষায় ঘাটে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা ধরে বসে আছেন তিনি। যাত্রী না থাকায় ঘাট থেকে লঞ্চ ছাড়ছে না।
এমভি টুম্পা লঞ্চের চালক ঠাণ্ডু মিয়া বলেন, তেলের খরচই এখন উঠছে না। এখন তেলের দাম বেড়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে লঞ্চ বিক্রি করে দেয়া ছাড়া উপায় নেই।
লঞ্চঘাটের ম্যানেজার নুরুল আলম বলেন, লঞ্চঘাট এখন সুনসান। মাঝে মধ্যে কোনো যাত্রীই থাকে না। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর লঞ্চঘাটের চিত্র পুরোটাই পাল্টে গেছে। তবে বিআইডব্লিউটিএর আরিচা কার্যালয়ে লঞ্চঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আফতাব হোসেন জানান, যাত্রীসংখ্যা কম থাকলেও দৌলতদিয়ায় লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। আগে ১০-১৫ মিনিট পরপর ঘাট থেকে লঞ্চ ছেড়ে যেত, এখন যাত্রী কম থাকায় ৪০ মিনিট বা এক ঘণ্টা পরপর ছেড়ে যায়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা