দিনভর বৃষ্টি রাত পোহালেই কিস্তি
- চিতলমারী (বাগেরহাট) সংবাদদাতা
- ২১ জুন ২০২১, ০১:০৬
এক দিকে করোনার ক্রান্তিকাল। অন্য দিকে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে নাকাল নিম্ন আয়ের মানুষ। ঝুপঝাপ বৃষ্টিতে ভিজেই ইনকামের সন্ধানে বের হচ্ছে ঘর থেকে। দুর্যোগ-দুর্দিন যা-ই হোক কিস্তি আদায় বন্ধ নেই। তাই খাবার একবেলা না খেলেও কিস্তি দিতে পারলে শান্তি পান তারা।
‘খাই বা না খাই, ঝামেলা তো আছে। বাজারে আসার পর সারা দিন বৃষ্টি। একটি টাকাও আয় হয়নি। কিন্তু রাত পোহালেই এনজিওর কিস্তি। তাই মহা দুশ্চিন্তায় পড়েছি।’ রোববার বিকেলে এমনটাই বলছিলেন বাগেরহাটের চিতলমারী সদর বাজারের ছাতার মেকার সাধন বৈরাগী (৪৫)। স্ত্রী লতিতা বৈরাগী ও দুই ছেলেকে নিয়ে চার সদস্যর পরিবার তার। বাস করেন ওয়াপদাপাড়ার বস্তিতে। সংসারের প্রয়োজনে দু’টি এনজিও থেকে লোন তুলেছেন। প্রতি সোমবারে একটি এনজিওতে এক হাজার ৫০০ টাকা এবং অন্য এনজিওতে এক হাজার ২০০ টাকা কিস্তি দিতে হয়। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে তারা নাকাল হয়ে পড়েছেন।
দুর্গাপুর গ্রামের চা বিক্রেতা সনে সরকার (৪০)। মা, স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে পাঁচ সদস্যের পরিবার তার। উপজেলা সদর বাজারে ব্যবসা করেন। ব্যবসার জন্য একটি এনজিও থেকে ৮০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছেন। মাসে কিস্তি আট হাজার টাকা।
সনে সরকার জানান, কিস্তি প্রায় শেষের দিকে। কিন্তু তবুও চাপে থাকতে হয়। কারণ ছোটখাটো ব্যবসায়ীদের কিস্তি দেয়াও শেষ; হাতের টাকাও শেষ।
সুরশাইল গ্রামের ভ্যানচালক আকবর আলী (৫৭)। স্ত্রী, ছেলেমেয়ে নিয়ে ছয় সদস্যের পরিবার তার। কিছুদিন আগে বাড়ির সামনে থেকে ভ্যানটি চুরি হয়ে যায়। আবার ভ্যান কিনতে একটি এনজিও থেকে লোন তোলেন। প্রতি সোমবার কিস্তি। তাই সব কিছুকে উপেক্ষা করে কিস্তির টাকার ধান্ধায় বেরিয়েছেন রাস্তায়।
পাটরপাড়া গ্রামের সবজি বিক্রেতা মাসুদ মোল্লা (৪২)। মা, স্ত্রী ও ছেলেমেয়েকে নিয়ে পাঁচ সদস্যের পরিবার তার। ব্যবসা করেন উপজেলা সদর বাজারে। ব্যবসার কাজে তিনটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছেন। প্রায় প্রতিদিনই তাকে কিস্তি দিতে হয়। তাই তো সব কিছুকে দূরে ঠেলে বাজারে এসে দোকান খোলা। তবে এ বিষয়ে কোনো এনজিওর শাখা ব্যাবস্থাপক (ম্যানেজার) কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা