৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ট্রমা সেন্টারের অভাবে মৃত্যু বাড়ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে

-

দেশের ব্যস্ততম ও গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিদিনকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহতদের জরুরি চিকিৎসা সময়সাপেক্ষ হওয়ায় অনেকের মৃত্যু হচ্ছে। সড়কপথের দূরত্ব ও সময় বিবেচনায় মিরসরাইসহ কয়েকটি স্থানে ট্রমা সেন্টার স্থাপনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
২৪৫ কিলোমিটার দূরত্বের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কটি ব্যস্ততম ও গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হওয়ায় পৃথক চারটি হাইওয়ে থানা ও সাতটি হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি রয়েছে। লোকবল ও সরঞ্জামাদিতে অপর্যাপ্ত এসব থানা ও ফাঁড়ির কর্মকর্তারা নিজেদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকলেও আহতদের দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা তাদের নাগালের একেবারে বাইরে। ফলে দুর্ঘটনাস্থল থেকে হাসপাতাল পর্যন্ত পৌঁছাতে যে সময় ব্যয় হয়, তাতে অপেক্ষাকৃত কম আহত ব্যক্তিরা কোনো রকমে প্রাণে বেঁেচ গেলেও গুরুতর আহত ব্যক্তিরা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন। মহাসড়ক তত্ত্বাবধানকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সড়ক ব্যবহারকারী নানা শ্রেণী-পেশার যাত্রী-চালকদের দাবি প্রতিটি জোনে একটি করে ট্রমা সেন্টার থাকলে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুহার অনেক কমে যেত।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মহাসড়কের ফেনী থেকে চট্টগ্রাম সিটি গেটের মধ্যবর্তী দুর্ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের নিয়ে ছুটতে হয় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা ছাড়া উন্নত কোনো সেবা সেখানে মিলছে না। বেশির ভাগ সময় যানজট লেগে থাকার কারণে মাঝপথেই মারা যান আহত ব্যক্তি।
সূত্র জানায়, ২০১১ সালের ২৯ ডিসেম্বর মিরসরাইয়ের মহামায়া প্রকল্প উদ্বোধন শেষে এক জনসভায় ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রীর কাছে ট্রমা সেন্টারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে খুব দ্রুত তা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছিলেন সাবেক মন্ত্রী স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। তার এ দাবি বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু দীর্ঘ তিন বছরেও সেই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নের কোনো লক্ষণ দেখতে পাচ্ছে না এখানকার মানুষ। ।
জানা যায়, ট্রমা সেন্টারের শূন্যতা বোঝা গেছে ২০১১ সালের ১১ জুলাই। মিরসরাইয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ৪৪ জনের প্রাণহানি ঘটলেও ট্রমা সেন্টার থাকলে সে সংখ্যা হয়তো অনেক কম হতো। যাদের মধ্যে তিনজন নিহত হয়েছেন হাসপাতালে নেয়ার পথে।
জোরারগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ ফিরোজ উদ্দিন বলেন, অনেক সময় দুর্ঘটনার পরপরই যানজট লেগে যায়। তখন হাসপাতালের দীর্ঘ পথ আরো দীর্ঘ হতে শুরু করে। নিকটতম কোনো স্থানে ট্রমা সেন্টার থাকলে দুর্ঘটনাকবলিত মানুষ দ্রুত চিকিৎসাসেবা পেতেন।
মিরসরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জসীম উদ্দিন বলেন, ট্রমা সেন্টার না থাকায় দূরের হাসপাতালে নেয়ার পথে অকালে অনেক প্রাণ ঝরে যাচ্ছে। সুযোগ হলে বিষয়টি সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা করবো। দুর্ঘটনায় প্রাণহানীর হার কমাতে ট্রমা সেন্টার ভূমিকা রাখতে পারে বলে জানান তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement