০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`


চৌগাছায় পাট চাষে বিঘাপ্রতি ৮ হাজার টাকা লোকসান

যশোরে চৌগাছায় ভিজাপাট শুকানো হচ্ছে :নয়া দিগন্ত -

যশোরের চৌগাছায় পাটের দাম পাচ্ছেন না কৃষকেরা। বিঘাপ্রতি প্রায় আট হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায় এ বছর ৯৭/৯৮, জে আর ও ৫২৪ এবং তোষা জাতের পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৪৫০ হেক্টর। চাষ হয়েছে ১৫ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে। পাটের দাম ভালো পাওয়ার আশায় ১০০ হেক্টরে বেশি পাট চাষ করেন কৃষকেরা। উপজেলার বাজারগুলোতে নতুন পাট উঠা শুরু হয়েছে।
তরিতরকারির দাম ভালো থাকায় অনেকে পাট কেটে তরিতরকারির চাষ করেছেন। নতুন পাট উঠার সাথে সাথে বাজারগুলোতে পাটের দাম মণপ্রতি হাজার টাকা কমে গেছে। গত বছর মওসুমের শুরুতে পাটের দাম ১৮০০ থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত ছিল। মওসুমের শেষের দিকে দুই হাজার থেকে ২৫০০ হলেও বর্তমানে পাটের দাম মণপ্রতি ১২০০-১৩০০ টাকা। প্রতি বছর লাভবান হচ্ছে আড়ৎ ব্যবসায়ীরা। পাটের দাম কমার কারণে কৃষকদের মুখের হাসি ম্লান হয়ে গেছে।
উপজেলার লস্করপুর গ্রামের পাটচাষি আয়তাল হক জানান, এক বিঘা জমিতে পাট চাষে জমি লিজ, চাষ, বীজ, সার, সেচ, নিড়ানি, কাটা, জাগদিয়া, ধোয়া প্রভৃতি বাবদ খরচ হয় প্রায় ২৫ হাজার টাকা। এক বিঘা জমিতে পাটের ফলন হয় ৯/১০ মণ। ১০ মণ পাটের বাজারমূল্য ১৩ হাজার টাকা ও এক বিঘার পাট খড়ি তিন হাজার টাকায় বিক্রি হলেও মোট মূল্য হয় ১৬ হাজার টাকা। ফলে এক বিঘা পাটে লোকসান গুনতে হচ্ছে আট হাজার টাকা।
পুড়াপাড়া বাজারের পাট ব্যবসায়ী শাহিনুর রহমান জানান, উপজেলার চৌগাছা, সলুয়া, পুড়াপাড়া, হাকিমপুর, সিংহঝুলীসহ বিভিন্ন বাজারে পাট আমদানি হচ্ছে। একশ্রেণীর অতি মুনাফা লোভী ব্যবসায়ী কম দামে ভালো পাট কিনে গুদামজাত করছেন। বাজারে পাটের আমদানি ভালো হলেও বড় ব্যবসায়ীরা পাট কিনতে অনাগ্রহ দেখাচ্ছে। বিগত কয়েক বছর ধরে পাটের দাম চড়া থাকায় এ অঞ্চলের চাষিরা নতুন করে (সোনালি আঁশ) পাট চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেন।
পাটচাষি আনিচুর রহমান জানান, পাট কাটার মওসুমের শুরুতে অনাবৃষ্টির ফলে কৃষকেরা পাট জাগ দিতে দারুণভাবে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। এ বছর অপরিষ্কার পানিতে পাট পচায় পাটের রঙ কালো হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, গ্রাম থেকে আসা বেশির ভাগ পাটেরই রঙ কালো। চৌগাছা বাজারে পাট বিক্রি করতে আসা আন্দারকোটা গ্রামের কৃষক মতিয়ার রহমান জানান, এ বছর বদ্ধ ও পচা পানিতে পাট জাগ ও মাটি চাপা দেয়ার কারণে পাটে সোনালি রঙ আসনি। পাটের দাম কমে যাওয়ার কারণে লাভ তো দূরে থাক ধারদেনাই পরিশোধ হচ্ছে না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রইচ উদ্দীন জানান, এ বছর পাটের উপাদন খরচ বেশি হয়েছে। প্রায় ৯০ শতাংশ পাট কাটা শেষ হয়েছে। তবে পাটের দাম গত বছরের চেয়ে এ বছর অনেক কম।

 


আরো সংবাদ



premium cement