০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


সার্জিকাল স্ট্রাইক, যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা খেলছেন? : মোদিকে মমতা

নরেন্দ্র মোদি ও মমতা ব্যানার্জি - ছবি : সংগৃহীত

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাম্প্রতিক কর্মকা-ের কড়া সমলোচনা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সোমবার নজরুল মঞ্চে এক দলীয় বৈঠকে তিনি এ সমলোচনা করেন।

মোদিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘দেশে যুদ্ধ লাগিয়ে উনি শান্তি পুরস্কার নিচ্ছেন! ভাবখানা এমন যেন শান্তির সুদর্শন চক্র ঘোরাচ্ছেন! এই সব পুরস্কার ব্যবস্থা করে পাওয়া যায়!’ মোদি আসলে সার্জিকাল স্ট্রাইক, যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা খেলছেন।

চারদিন আগে দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে শান্তি পুরস্কার নিতে গিয়েছিলেন মোদী। সেই ঘটনার কথা উল্লেখ করে তিনি এ মন্তব্য করেন। কাশ্মিরের পুলওয়ামাতে আত্মঘাতী হামলার ব্যাপারে মোদিকে আক্রমণ করে তৃণমূল নেত্রী মমতা বলেন, ‘পুলওয়ামা-কা-ের আগাম খবর কেন্দ্রের কাছে থাকা সত্ত্বেও কেন কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।’

এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচনের প্রাক্কালে ‘রক্ত নিয়ে রাজনীতি’ করতেই প্রধানমন্ত্রী বিপজ্জনকভাবে জওয়ানদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছিলেন। মমতার অভিযোগ, আকাশপথে না নিয়ে, রাস্তায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিñিদ্র না করে কেন জওয়ানদের ওই দিন মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছিলেন? ভোটের রাজনীতি করবেন বলে?

কেন্দ্র সব জেনেও জওয়ানদের নিরাপত্তায় যে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি, তার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ফের দোষারোপ করে মমতার পরিষ্কার ভাষায় বলেন, ‘সবাইকে বোকা বানিয়ে রাখবেন ভেবেছেন? সার্জিকাল স্ট্রাইক, যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা খেলছেন?’

নিহত জওয়ানদের রক্ত নিয়ে রাজনীতি দেশ বরদাস্ত করবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মমতা।

তবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের পাল্টা অভিযোগ করেন, ‘ভারতে এর আগে বহুবার গোয়েন্দা-রিপোর্ট থাকা সত্ত্বেও এ ধরনের আক্রমণ হয়েছে। ঘটনাটা দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি। তদন্ত হচ্ছে। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করছেন।’

জওয়ানদের উপর হামলার সময়ে প্রধানমন্ত্রী শুটিং করছিলেন বলে কংগ্রেস কয়েক দিন আগেই ছবি প্রকাশ্যে এনেছে। সেই একই ইঙ্গিত দিয়ে মমতাও এ দিন প্রশ্ন করেছেন, ‘আপনিও তো আগেই জানতেন এই ঘটনা ঘটবে। তা হলে কেন ঘটল ওই ঘটনা? ঘটনার সময়ে কোথায় ছিলেন আপনি?’

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মিরের পুলওয়ামায় এক আত্মঘাতি বোমা হামলায় ভারতের আধাসামরিক বাহিনী সিআরপিএফের ৪৯ জন সদস্য নিহত হয়। এ ঘটনায় দায় স্বীকার করে জয়েশ-ই মোহাম্মদ। ভারত প্রথমে নাম উল্লেখ না করেই প্রতিবেশী দেশকে দোষারোপ করে।

কিন্তু পরবর্তীতে পাকিস্তানের নাম উল্লেখ করেই তাদেরকে এ হামলার জন্য দায়ী করে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ভারতের সেনাবাহিনীকে প্রয়োজনীয় সব স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

এর জবাবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, যদি এ ব্যাপারে কোনো প্রমাণ থাকে তাহলে আমাদের কাছে দিন, আমরা এ ব্যাপারে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব। আর যদি ভারত এ প্রস্তাব না মেনে হামলা চালায়, তাহলে পাকিস্তানও এর সমুচিত জবাব দেবে।

এদিকে ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করলেও অনেকে এ ব্যাপারে ভারতের অভ্যন্তরীণ দুর্বলতাকেই দায়ী করেছেন। যেমন- আগে থেকে হামলার তথ্য থাকা সত্ত্বেও উপযুক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না নেয়া, এক সাথে এতগুলো সেনাকে এক কনভয়ে পাঠানো, নিñিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত না করেই সড়কপথে তাদেরকে কর্মস্থলে পাঠানো- ইত্যাদি কারণে দেশের ভেতরেই ভারত প্রশাসনের ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement