মতিন মিয়া। বাংলাদেশের ফুটবলে এখন আলোচিত নাম। গতকাল তার করা জোড়া গোলেই বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের সেমিফাইনালে চলে গেছে জেমি ডে বাহিনী। ২০১৮ সাল থেকে জাতীয় দলে আছেন তিনি। কখনো প্রথম একাদশে, কখনো রিজার্ভ বেঞ্চে। এভাবেই দু’টি বছর দলে পার করেছেন এই স্ট্রাইকার। খেলেছেন অনূর্ধ্ব-২৩ জাতীয় দলেও। কিন্তু কখনই তার গোল করা হয়নি লাল সবুজ জার্সি গায়ে।
এবার ১৫ জানুয়ারি ফিলিস্তিনের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে তাকে একাদশে সুযোগ দেয়া হয় অপর স্ট্রাইকার নাবিব নেওয়াজ জীবন না থাকায়। তবে তেমন কিছুই করতে পারেননি সে দিন। তাই তুলে নেয়া মাঠ থেকে। কাল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাস্টউইন ম্যাচে গোল করার গুরুদায়িত্ব বর্তায় মতিন, সুফিল ও সাদ উদ্দিনদের ওপর। বাকি দুইজন না পারলেও সফল মতিন মিয়া। দুই অর্ধে তার করা দুই গোলই লাল-সবুজদের সেমির রাস্তা মসৃণ করে দেয়। অথচ এই মতিন মিয়ার আগের পরিচয় একজন রঙ মিস্ত্রি হিসেবে। সিলেটে তিনি রঙ মিস্ত্রির কাজের পাশাাপাশি ফুটবল খেলতেন। এভাবেই তার ঢাকার ফুটবলে আগমন জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া লেফট ব্যাক ইয়ামিন মুন্নার হাত ধরে। এই রঙ মিস্ত্রি মতিনই এখন জাতীয় বীর।
২০১৬ সালে মতিন মিয়ার পেশাদার ফুটবলে অভিষেক বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের দল সাইফ স্পোর্টিংয়ের হয়ে। তার অবদানে দল উঠে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে। ২০১৭-১৮ এর বিপিএল এ তিনি ছিলেন সাইফ স্পোর্টিংয়েই। সে বছর ক্লাবটি ভারতে প্রি-সিজন অনুশীলন করতে গেলে মতিনকে নজরে পড়ে ভারতের বিখ্যাত ইস্টবেঙ্গল ক্লাব কর্মকর্তাদের। তারা তাকে নিতে চেয়েছিল। সাইফ স্পোর্টিং কর্মকর্তারা আর মতিনকে যেতে দেননি কলকাতায়। কারন ছিল এই অশিক্ষিত ফুটবলারটির শিক্ষা-দীক্ষা কম থাকায়। হতে পারেন প্রতারণার শিকার। সে বছর তিনি প্রিমিয়ারে খেলেন সাইফের হয়েই। দুর্দান্ত একটি গোল করেন মুক্তিযোদ্ধার বিপক্ষে। পাঁচ ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে তার করা সেই গোলটি ছিল দেশের ফুটবলে অন্যতম সেরা।
গত বছর প্রায় ৪০ লাখ টাকায় বিগ বাজেটের দল বসুন্ধরা কিংসে যোগ দেন মতিন মিয়া। বিদেশী ফরোয়ার্ডদের ভিড়েও উজ্জ্বল ছিলেন তিনি। ১২ গোল করে স্থানীয় ফুটবলারদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা হন। সেই সূত্রধরে তার ওপর আস্থা বাংলাদেশ কোচ জেমি ডে’র। যদিও জাতীয় দলে গোল না পওয়ায় তাকে একাদশে সুযোগ কমই পেতেন। ২০১৯ সালের মার্চে কম্বোডিয়ার বিপক্ষে ফিফা প্রীতি ম্যাচে একাদশে খেলেন তিনি। গত বছর জুনে লাওসের বিপক্ষে বিশ্বকাপ প্রাক বাছাই ম্যাচে ছিলেন প্রথম একাদশে। অনূর্ধ্ব-২৩ এএফসি ফুটবলে তিনি নিয়মিতই ছিলেন। ফিলিস্তিনের বিপক্ষে তিনি অল্পের জন্য গোল পাননি। তা তার শট গোললাইন থেকে ডিফেন্ডার প্রতিহত করায়। কাল আর কোনো বাধাই কাজ হয়নি। তার প্রথম শট শ্রীলঙ্কান গোলরক্ষকের হাতে লেগে জালে যায়। আর পরেরটি গোলরক্ষককে কাটিয়ে।
এবারো তিনি আছেন বসুন্ধরা কিংসে। নিয়মিত খেলছেন একাদশে। তিন মওসুম দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলে মতিন এখন কোটিপতি। তবে রঙ মিস্ত্রির কাজ আর করেন না। জানান তিনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা