১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলকদ ১৪৪৫
`


বাঘ বাঘিনীর সংসার

-

এক বনে বাস করত এক বাঘ দম্পতি। তারা দু’জনেই খুব সুখে শান্তিতে সেখানে বসবাস করছিল। বনের ভেতর খাবার দাবারের কোনো অভাব ছিল না। তারা সারা দিন মনের সুখে সারা বন ঘুরে বেড়াত। কখনো দু’জনে বসে গল্প করত, কখনো পাখিদের গান শুনত। আবার কখনো কখনো বাঘ মনের সুখে বাঘিনীকে হালুম হালুম স্বরে গান শোনাতেও চেষ্টা করত। বাঘ কোনো কিছু শিকার করলে বাঘিনীকে নিয়ে মিলেমিশে খেত। আবার বাঘিনীও ঠিক এভাবেই কোনো কিছু শিকার করে বাঘের সাথে মিলেমিশে খেত। দু’জনের এমন গভীর ভালোবাসা দেখে বনের সব পশুপাখি তাদের খুব প্রশংসা করত।
হঠাৎ একদিন বাঘিনী শারীরিকভাবে বেশ অসুস্থ অনুভব করে। তখন বাঘিনীর চিকিৎসার জন্য বৈদ্য ভালুককে তলব করা হয়। বৈদ্য ভালুক এসে গভীর মনোযোগ দিয়ে বাঘিনীর চোখ ও জিহ্বা ভালো মতো পর্যবেক্ষণ করে। এদিকে বাঘ খুব অস্থির হয়ে আছে। সে বৈদ্য ভালুককে জিজ্ঞেস করে, ‘তুমি কী বুঝলে বৈদ্য, আমার বাঘিনীর কী হয়েছে?’ বৈদ্য ভালুক তখন একবার বাঘের দিকে আবার বাঘিনীর দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে। বৈদ্য ভালুকের মুচকি হাসি দেখে বাঘ গেল রেগে। হুঙ্কার দিয়ে বলে উঠল, ‘আমার বাঘিনী অসুস্থ আর তুমি কিনা এদিকে মুচকি মুচকি হাসছ!’ তখন বৈদ্য ভালুক অট্টহাসিতে মেতে উঠে বলল, ‘রাগ করো না বন্ধু, তুমি আমার জন্য মধু নিয়ে এসো।’ বাঘের তখন ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেছে এবং হিংস্র হয়ে উঠছে। এ অবস্থা দেখে বৈদ্য ভালুক বলে উঠল, ‘আরে বোকা, তোমাদের ঘরে নতুন অতিথি আসছে। তোমরা এবার বাবা-মা হতে যাচ্ছ।’ এই কথা শুনে বাঘ ও বাঘিনী বেশ খুশি।
বাঘ তার গোঁফ নাচিয়ে বলল, ‘শোনো বৈদ্য, যতদিন পর্যন্ত আমার সন্তান পৃথিবীর বুকে আসছে না, ততদিন তুমি বাঘিনীকে রোজ দেখতে আসবে। আমি তোমার জন্য মধু এনে রাখব, রোজ রোজ খেয়ে যাবে। বৈদ্য ভালুক খুশিতে তাই হবে... তাই হবে... বলে বিদায় নিলো। তারপর বাঘ তার প্রিয়তমা বাঘিনীকে বলল, ‘আজ থেকে তোমার শিকারে যাওয়া বন্ধ। এখন থেকে আমি শিকার করে খাবার নিয়ে আসব।’ বাঘের কথায় খুব খুশি হয়ে বাঘিনীর চোখে কোণে পানি এসে গেল। এদিকে দিনের পর দিন যাচ্ছে, বাঘ রোজ রোজ শিকার করে বাঘিনীর জন্য খাবার ও বৈদ্য ভালুকের জন্য মধু নিয়ে আসে। বৈদ্য ভালুক প্রতিদিন বাঘিনীকে একবার করে দেখতে আসে এবং বাঘের দেয়া মধু খেয়ে যায়। এমনি করে একেকটি দিন যায় আর বাঘ ও বাঘিনী বাচ্চা প্রসবের অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকে। হঠাৎ একদিন বাঘিনীর প্রসব ব্যথা ওঠে এবং খুব সুন্দর ফুটফুটে একটি বাচ্চা প্রসব করে। বাঘ তার বাচ্চা দেখে খুশিতে আত্মহারা। সে সারা বনের পশুপাখিদের দাওয়াত করে পেট ভরে খাওয়াল।
ছোট্ট বাচ্চা নিয়ে সারা দিন বাঘিনী থাকে মহাব্যস্ত আর বাঘ থাকে শিকারে। এদিকে বনে হঠাৎই খাবারের সঙ্কট দেখা দিলো। বাঘ কিছুটা অসুস্থ, তাই আগের মতো শিকার করতে পারছে না। একদিন শিকার করতে না পেরে বাঘ খুব ক্লান্ত ও ক্ষুধার্ত হয়ে ঘরে ফিরে এলো। এমন সময় বাঘ তার বাচ্চাকে দেখে খেয়ে ফেলতে চাইল। ঠিক তখনই বাঘিনী এসে বাধা দিলো। বাঘিনী হুঙ্কার দিয়ে বলল, ‘ছিঃ ছিঃ ...।’
বাঘ তখন নিজের ভুল বুঝতে পেরে ভীষণ লজ্জা পেল এবং বাঘিনীর কাছে ক্ষমা চাইল। সে প্রতিজ্ঞা করল, জীবনে যতই অভাব আসুক, কখনো এমন কাজ দ্বিতীয়বার করবে না। বাঘের কথায় বাঘিনীও খুব খুশি হলো। তারপর তাদের বাচ্চা নিয়ে বাঘ দম্পতি খুব সুখে শান্তিতে বসবাস করতে লাগল।

 


আরো সংবাদ



premium cement
জামিন পেলেন কেজরিওয়াল, তবে ভোটগণনার দিন থাকতে হবে জেলেই পরকীয়া প্রেমিক যুগলের গলায় জুতার মালা : চেয়ারম্যান বরখাস্ত সমাবেশে যোগ দিতে নয়াপল্টনে জড়ো হচ্ছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা রংপুরে রেয়াত পদ্ধতি চালুসহ ৪ দফা দাবিতে মানববন্ধন নতুন কোচের সন্ধানে বিসিসিআই, তাহলে কি দ্রাবিড়ের বিদায়! থাইল্যান্ডে এ বছর হিটস্ট্রোকে ৬১ জন প্রাণ হারিয়েছে : সরকার নির্বাচন শেষ হলে আরো সত্য ঘটনা সামনে আসবে, ধর্ষণের অভিযোগ প্রসঙ্গে শাহজাহান রাণীনগরে সাজাপ্রাপ্ত আসামিসহ গ্রেফতার ৪ যান্ত্রিক ত্রুটি নিয়ে চট্টগ্রামে জরুরি অবতরণ, প্রাণে বাঁচলেন ৭ ক্রুসহ ১৯১ যাত্রী ভূরুঙ্গামারীতে ভটভটিতে উঠতে গিয়ে শিশু নিহত প্রতিটি মানুষকে অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল করতে সরকার কাজ করছে : প্রধানমন্ত্রী

সকল