২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ব্রাসেলস স্প্রাউট

-

তোমরা কমবেশি বাঁধাকপি দেখেছ, খেয়েছও। কিন্তু ব্রাসেলস স্প্রাউট সম্পর্কে কি কিছু জানো? এখানে বাঁধাকপির প্রসঙ্গ আনার কারণ আছে। কেননা, ব্রাসেলস স্প্রাউট দেখতে অনেকটাই বাঁধাকপির মতো। অর্থাৎ ব্রাসেলস স্প্রাউটও সবজি জাতীয় ফসল বা খাবার।
অনেকটাই বাঁধাকপির মতো ব্রাসেলস স্প্রাউটের চাষাবাদ পদ্ধতি। এমনকি বীজ ও রোগবালাইও উভয়ের একই প্রকৃতির। বীজ থেকে চারা গজালে বা বের হলে তা মূল জমিতে লাগানোর উপযোগী হয়। তবে পার্থক্য হচ্ছেÑ বাঁধাকপির একটি গাছে একটি বাঁধাকপি জন্মায়। আর ব্রাসেলস স্প্রাউটের গাছের প্রতিটিতে অনেক ফলন হয়। গাছও বেশ লম্বা হয়। দূর থেকে কিছুটা পেঁপে গাছের মতো লাগে। সরাসরি পাতা বের হয় এর লম্বা গাছের কাণ্ড থেকে। বাঁধাকপির মতো দেখতে একটি করে ছোট কুঁড়ি বা বাড বের হয় প্রতিটি পাতার গোড়ায়। আর এই কুঁড়ি বা বাডকেই বলা হয় ব্রাসেলস স্প্রাউট। এর পাতা বেশ নরম বলেই পাতাকে স্প্রাউট লিফ বা কঁচিপাতা বলা হয়। পাতাগুলো থাকে বাঁধাকপির মতো পরতে পরতে বা ভাঁজে ভাঁজে। বেশি ভেতরের পাতাগুলো বেশি নরম ও খেতে বেশি সুস্বাদু। এর পাতা আগুনে সেদ্ধ, ভাপ প্রভৃতির মাধ্যমে নরম করে খাওয়া যায়। তবে অল্প আগুনে বা স্লো কুক করলেও বেশ মজা হয়। অনেকে তেল দিয়ে ভেজে এমনকি গ্রিল করেও মজা করে খায়। এর সাথে লবণ, সস প্রভৃতি মেশালে বেশি রুচিকর হয়। বড়দের চেয়ে ছোট বা শিশুরাই বেশি খায় ব্রাসলস স্প্রাউট। বেশি সময় ধরে আগুনে রাখলে এর রঙ হয় বাদামি। নরমও হয় বেশ। এই খাবারে কিছুটা পেঁয়াজ ও রসুনের গন্ধ রয়েছে। এর সাথে পনির, মাখন, সিরকা, কাজুবাদাম, ব্রাউন সুগার, বিটলবণ এবং কাঁচামরিচ মেশালে পরিপূর্ণ স্বাদ পাওয়া যায়।
বেগুনি ও সবুজসহ আরো কয়েকটি রঙয়ের হয়ে থাকে ব্রাসেলস স্প্রাউট। তবে বেগুনি বা পার্পেল হয়ে থাকে উচ্চ ফলনশীল জাতের ব্রাসেলস স্প্রাউট। আকারে একটু বড় হয় এগুলো। সাধারণত গাছে স্প্রাউট আসা শুরু করে চারা লাগানোর দেড় দুই মাস পর থেকে। জাত ভেদে গাছের উচ্চতা হয়ে থাকে দুই থেকে পাঁচ ফুট। ফসলের জীবনকাল ৮৫ দিন থেকে ১৫৫ দিন। একটি গাছে স্প্রাউট ধরে ৪৫ থেকে ৬০টি। মজার বিষয় হলো, গাছে যতগুলো পাতা হয়, ততগুলো উৎপন্ন হয় স্প্রাউট। অর্থাৎ পাতা হিসাব করেও ফলন গণনা করা যায়। স্প্রাউটগুলো আকারে প্রায়া ৮-১০ সেন্টিমিটার হয়। আর ওজন ৩৫ থেকে ৪০ গ্রাম। ফলন আসার ৩০-৩৫ দিন পর তা সংগ্রহ করা যায়। গাছ থেকে স্প্রাউট তোলা যায় সপ্তাহে কমবেশি এক থেকে দু’বার।
ব্রাসেলস স্প্রাউট শীতপ্রধান দেশের ফসল। সবচেয়ে বেশি জন্মে ব্রাসেলসে। হয়তো এ কারণে এর নামকরণ হয়েছে ব্রাসেলস স্প্রাউট। বেলজিয়ামেও কমবেশি উৎপন্ন হয় এ সবজি। শিশুদের অনেকেই ব্রাসেলস স্প্রাউট খায় বার্গার, পিজাসহ আরো অন্যান্য খাবারের সাথে মিশিয়ে।


আরো সংবাদ



premium cement