২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ঈদুল আজহা ও মুসলিম জাতির দায়িত্ব

-

সমগ্র মুসলিম জাহানে আল্লাহ প্রদত্ত দু’টি দায়িত্বপূর্ণ উৎসব রয়েছে। এর একটি ঈদুল ফিতর, অপরটি ঈদুল আজহা। একমাস রোজা পালনের শেষে খুশির ঈদ। রোজা পালনের মধ্যেই ছিল প্রশিক্ষণ, রোজার তাৎপর্য বোঝে জীবনকে গড়ে তুলার তাগিদ। রোজার শেষে আনন্দও একতরফা নয়, ধনী-গরিব মিলিয়ে সমবেত উৎসবই ঈদ। ‘ফিতরা’ দেয়ার উদ্দেশ্য গরিবের সঙ্গে নিজেকে মিলিয়ে নেয়া। জাকাত দেয়ারও মহা তাগিদও এই সময়। এক বছর অন্তে যা কিছু জমা থাকল, খরচ-খরচা’ শেষে এবার তা হালাল করতে হবে জমাকৃত অর্থের একটি ধার্যকৃত অংশ যারা জীবনে পিছিয়ে পড়েছে তাদের হাতে তুলে দিয়ে, সেটিও হবে ভালোবাসা এবং মমতা দিয়ে। এটা দান নয়, এটা পিছিয়ে পড়া মানুষের অধিকার। এখানে করুণার কোনো অবকাশ নেই, যারা করুণা দেখাতে চাইবে, তাদের এই জাকাত নির্মল তো হবেই না, বরং আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য না হয়ে তা পাপ বলে গণ্য হবে।
‘ঈদুল আজহা’র এই উৎসবও তেমনি আরো একটি দায়িত্বপূর্ণ মহোৎসব। হজ পালনের সঙ্গেই যুক্ত এই ঈদ উৎসব। কাবা শরিফের এই ঈদের আলোকধারাই ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র মুসলিম জাহানে। ইবরাহিম আ: আল্লাহর যে মসজিদ পুননির্মাণ করেছিলেন মক্কা শহরে সার্বভৌমত্ব ও তাঁর করুণাকে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য, তাকে কেন্দ্র করেই অদ্যাবধি পৃথিবীর তাবৎ বিশ্বাসী মানুষ ছুটে এসে জড়ো হয় তারই অনুসারী এক মহামানবের নির্দেশে হজ পালনের উদ্দেশ্যেÑ এটাই তো বিশ্ব মিলনের, বিশ্ব ভ্রাতিত্বের মহামিলনের উৎসব। কোনো কালো-ধলা নেই, এখানে বংশমর্যাদা নেই। এখানে ধনী-গরিব নেই। এ যে এক মহা শিক্ষা। কোথায় তোমার অহঙ্কার। তুমি রাজা, তুমি প্রজা, তুমি এবং তোমার প্রজা তো মৃত্যুর পর একই মাটির তলায় অবস্থান। আমল তোমার অবস্থান বলে দেবে। তোমার নবীর প্রজা, তোমার কৃতদাস, আল্লাহর কাছে তোমার থেকে অনেক বেশি সম্মানের পাত্র হয়ে পড়বে, যদি তার আমল তোমার থেকে ভালো হয়। শয়তান অহঙ্কার করেছিল বলেই সে বিতাড়িত। পৃথিবীর বুকে তোমার তো কোনো অহঙ্কার থাকতে পারে না। এখানে তুমি অহঙ্কারী হলে তুমিও শয়তানের অনুসারী হলে। হজ তাই সব অহঙ্কারে নিঃশেষের জায়গা। এই তো খুশির ব্যাপার। আল্লাহর কাছে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে আত্মসমর্পণই তো মহা আনন্দ।
এই আনন্দ কোরবানি নিয়ে। আনন্দকে আরো তাৎপর্যপূর্ণ করে তোলার এক অসাধারণ প্রশিক্ষণ। একটি পশুকে কেবল এক আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তাকে কোরবাণি বা জবাই করে আনুগত্য প্রকাশের এক মহাসুযোগ।
কবি নজরুল এই কোরবাণিকে পশু হত্যা বলতে চাননি, বলেছেন, সত্যগ্রহ, শক্তির উদ্বোধন। প্রভুর প্রতি আত্মসমর্পণের এ এক মহাশক্তির সাহসী প্রকাশ।
এই আত্মসমর্পণ নিজের ‘অহং’কে সর্বাত্মকভাবে নিঃশোষিত করে নির্মোহ চিত্তে আল্লাহর সার্বভৌমত্বের জয়গান, ধ্বনি-প্রতিধ্বনির এক বাঙময় প্রকাশ ঘটানো। নজরুল তার ‘কোরবানি’ কবিতায় বলেন:
“ওরে হত্যা নয় আজ সত্যগ্রহ’ শক্তির উদ-বোধন!
দুর্ব্বল! ভীরু চুপ রহো ওহে খাম্-খা ক্ষুব্ধমন!
এই কবিতায় নজরুল সত্যের পক্ষে অসত্য এবং শয়তানী শক্তির বিপক্ষে লড়াইয়ের আহ্বান জানিছেন। হজরত ইবরাহিম আ: যখন স্বপ্নে নিজের সন্তান ‘ইসমাইল’কে কোরবানি করার আদেশ পেলেন, সেটা ছিল এক মহা সঙ্কটপূর্ণ মহাপরীক্ষা। ইবরাহিম আ: ভাবনায় পড়লেন। এ হুকুম স্বপ্নে এল কেন? এখানে শয়তানের কোনো কারসাজি নাকি? শয়তান তার এই মনের ক্ষণিক দুর্ভলতার সুযোগ নিলো। দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়লেন হজরত ইবরাহিম আ:। কিন্তু আল্লাহর রহমতেই তিনি এই দুর্বলতা কাটিয়ে উঠলেন। শয়তান মানুষের কাছে আরেকবার পরাজিত হলো। ইবরাহিম আ: এবার ডাকলেন তার ঔরসজাত সন্তান পুত্র ইসমাইলকে। প্রথম সন্তান, মায়াভরা চোখ, ভালোবাসার ধন। তার চোখের দিকে তাকিয়ে হঠাৎ যেন কেঁপে উঠলেন ইবরাহিম আ:, এ কি মহা আদেশ! এটা কি সম্ভব? একজন পিতা তার সন্তানকে হত্যা করবে? ইবরাহিম আ:-এর মনে হলো, তিনি কি পাগল হয়ে যাবেন। এমনি মুহূর্তে তিনি সম্বিত ফিরে পেলেন। আল্লাহই তো তার জীবনের সবকিছু। ভালো-মন্দ সবকিছু তারই হাতে। তিনি তো বিশ্বাসী। তা হলে এই দ্বিধা কেন? কিন্তু কি আশ্চর্য, সন্তান ইসমাইল নিজেই এবার তাকে তার সব দ্বিধাদ্বন্দ্বের অবসান ঘটালেন। আল্লাহতে তো তার অপরিসীম বিশ্বাস, পিতার মতোই। জানিয়ে দিলেন : “আল্লাহর হুকুম যদি হয়ে থাকে, আমি রাজি। আপনি পিতা, আমি সন্তান, আমার গলায় ‘ছুরি’ বসাতে আপনার যে কষ্ট হবে, আমি তা বুঝতে পারছি, আপনি চোখ বেঁধে নিন। আমি আপনার মতো আল্লাহর এই হুকুম মেনে চলতে চাই।” কী অবাক কাণ্ড! যোগ্য পিতার যোগ্য সন্তানই শুধু নন, তাকেও তো আল্লাহ মনোনীত করেছেন ‘নবী’ হিসেবে। তিনি নবী হওয়ার যোগ্য কি না, এটাও ছিল তারই এক মহাপরীক্ষা। এই পরীক্ষায় পিতা-সন্তান এমনকি মা হাজেরাও উত্তীর্ণ হলেন। পিতার থেকে মা বেশি অনুভূতিপ্রবণ সন্তানের জন্য। ১০ মাস ১০ দিন সন্তানকে পেটে ধারণ করতে হয়েছে, বুকের দুধ খাইয়ে তিনি তাকে বুকের মানিক করে নিলেন। তাকে তিনি হারাবেন কিভাবে? কেঁপে উঠলেন তিনিও। শয়তান তাকে প্রলুব্ধ করল। তুমি মা, তুমি কি এমনভাবে সন্তানকে নির্মম হত্যার মধ্যে ঠেলে দেবে?
শয়তানের কথায় মা হাজেরা দুর্বল হলেন, কিন্তু তা ক্ষণিকের জন্য। তিনি তো নবীর স্ত্রী! তার সর্বকাজে সহযোগী, সহধর্মিণী। তিনি আল্লাহর এই চাওয়াকেই মেনে নিলেন। হাসিমুখে ঠেলে দিলেন নিজের সন্তানকে আল্লাহর নামে কোরবানি হওয়ার জন্য। কী অসীম ত্যাগ! একই সূত্রে বাঁধা পিতা-সন্তান-মাতা।
এ কী পরীক্ষা? শয়তান হেরে গেল। এটিই তো আল্লাহ চেয়েছিলেন। ইবরাহিম আ: আল্লাহর বাণী পেলেন, দেখলেন কোরবানির জন্য একটি পশু দুম্বা প্রস্তুত তার সামনে। ইসমাইল আ: জীবিত দাঁড়িয়ে রয়েছেন। এই তো মহা পুরস্কার।
পৃথিবীর সব বিশ্বাসী মানুষদের জন্য এই কোরবানি তো নির্ধারিত হয়ে গেল।
ইবরাহিমের পরে কত নবী এলেন-গেলেন। কিন্তু এমন করে আর ইবরাহিমের কোরবানির কোনো দেখা পাওয়া গেল না। হজরত ইবরাহিম আ: এবং ইসমাইল আ: প্রতিষ্ঠিত ‘কিন্তু কাবা, আর বিশ^ মানবের মিলনকেন্দ্র হয়ে উঠল না। অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে উঠল পৃথিবী। সমগ্র আরব হয়ে উঠল অবিমিশ্র ঢাকা অন্ধকারাচ্ছন্ন একটি দেশ। আলোকের অবর্তমানে শয়তান এই অন্ধকারে মহাশক্তিধর হয়ে উঠল।
সমগ্র আরবজুড়ে শয়তানের রাজত্ব মহাদর্পে সত্যকে দূরে হটিয়ে মিথ্যার প্রসার ঘটল। হজরত ইবরাহিম আ: তার পিতাকেও ছাড়েননি। পৌত্তলিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে বললেন পিতাকে। কিন্তু পিতা তা মানলেন না বরং তাকে প্রস্তরাঘাতে মেরে ফেলতে চাইলেন। হাজার হোক, পিতা তো! ইবরাহিম আ: পিতার জন্য দোয়া করলেন। কিন্তু আল্লাহ জানালেন, এটা সম্ভব নয়Ñ তাকে তো সত্য পথে আসতে হবে। ইবরাহিম আ: লাঞ্ছিত হলেন! এরপর শুরু হলো পৌত্তলিকতার বিরুদ্ধে তার সংগ্রাম। মন্দিরের দেবতাকে ভাঙতে শুরু করলেন। ‘কি রে ঠেকা নিজেকে। তুই তো দেবতা। কোথায় তোর ক্ষমতা। এমনিভাবে মন্দিরের দেবতাদের মূর্তি এক একটা করে বেশ কয়েকটি ভাঙা শেষে সেখানকার লোকজন খুঁজে পেল ইবরাাহম আ:কে। কিন্তু ইবরাহিম আ: অকুতোভয়। দেবতাদের ক্ষমতা যে আদৌ নেই, তা আর বোঝার বাকি থাকল না। তিনি সাহসের সাথেই বললেন, দেবতাদের মূর্তিকে তিনিই ভেঙেছেন। ইবরাহিম আ: বললেন, তোমাদের দেবতারা তো আমার কাছ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারল না, তবে তোমরা কেন এদের পূজা করো? কেউ এর উত্তর দিতে পারল না। কিন্তু সমাজপতিরা ঠিক করল ইবরাহিমকে জ্বলন্ত কূপে ফেলে পুড়িয়ে মারতে হবে। যেমন কথা তেমন কাজ। অগ্নিকুণ্ড িৈর করে সেই জ্বলন্ত আগুনে ইবরাহিম আ:কে নিক্ষেপ করল তারা। আল্লাহ তাদের কৌশল দেখলেন। আল্লাহ হুকুম দিলেন আগুনকে। আগুন নিভে গেল। পরিবেশ হলো একেবারে ভিন্নতর বেহেশতের বাগানের মতো স্থান হয়ে উঠল আগুনের গহ্বর। সবাই দেখল ইবরাহিম আ: বেঁচে আছেন এবং কোনো আগুনই তাকে স্পর্শ করেনি।
তারপর তারা হার মানল। কিন্তু এখানেও শেষ হলো না। কেউ কেউ মানল ইবরাহিম আ:কে। অন্যরা মানল না। ইবরাহিম আ:এর আল্লাহকেই মেনে নিলেন। পরিপূর্ণভাবে নিজেকে সমর্পণ করলেন নিজেকে আল্লাহর নিকট। তিনি নবী হলেন।
পবিত্র কুরআন মজিদে আল্লাহ তায়ালা ইবরাহিম আ: সম্পর্কে বিস্তারিত বলেছেন। ইসলাম শব্দের ব্যবহারও সেখান থেকেই। তিনি নিজেকে মুসলিম বলে উল্লেখ করলেন।
বলেছি, আল্লাহ পাক তাঁর অনেক পরীক্ষা নিয়েছিলেন, তার মধ্যে, স্বপ্নের মাধ্যমে সন্তানকে ‘কোরবানি’ করা ছিল সবচেয়ে বড় পরীক্ষা।
হজরত ইবরাহিম আ:-এর পরে অনেক নবী এসেছেন। এর মধ্যে হজরত মূসা আ: এবং হজরত ঈসা আ:-এর নাম জানা যায়। হজরত মূসা আ: -এর সময় ইহুদিদের মধ্যে নৈরাজ্য দেখা দেয়। ওজায়ের নামক একজন সাধুব্যক্তিকে তারা আল্লাহর পুত্র মনে করে। তবে এটা শেষ পর্যন্ত টেকেনি। কিন্তু হজরত ঈসা আ:-এর অনুসারীদের মধ্যে এক শ্রেণী তাকে ঝড়হ ড়ভ এড়ফ বলে বিশ্বাস করে। এটা ছিল ইসলামের মূল ভিত্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়া অর্থাৎ হজরত ঈসা আ:-এর ধর্ম তখন অন্যদের ধারা ইসলামের বৈশিষ্ট্য থেকে বেরিয়ে গেল। হজরত ঈসা আ:-এর জীবদ্দশায় আল্লাহ প্রদত্ত বাণী সংরক্ষিত হয়নি। তাঁর মৃত্যুর ৩০০ বছর পর এই বাণীগুলো সংগৃহীত হয়েছে। বার্নাবাস বলেন ঈসা আ:-এর একজন অনুসারী ছিলেন। তিনি তার বাণীগুলো সংরক্ষণ করেন। তার সংগৃহীত আল্লাহর বাণীতে হজরত মোহাম্মদ সা: আসার বিষয়টির উল্লেখ আছে। আমি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেখানকার কর্মকর্তারা আমার ওপর অসন্তুষ্ট হন।
আল্লাহ পাঠালেন হজরত মোহাম্মদ সা:কে নবী রূপে পৃথিবীর মানুষের মুক্তির দূত হিসেবে। তাঁর হাতেই অন্ধকার কেটে আলোকে উদ্ভাসিত হলো এক নতুন আরব এবং নতুন বিশ^। মুক্ত হলো পবিত্র ‘কাবা’শরিফ পৌত্তলিকতার হাত থেকে। শয়তান বিতাড়িত হলো। মিথ্যা অপসারিত হলো। সত্যের জয় হলো। হজরত ইবরাহিম আ: ও হজরত ইসমাইল আ:-এর কাবা, মা হাজেরার আবে জমজম বিশ^াসীদের মিলনের কেন্দ্রভূমি মক্কা এবং ‘কাবা’শরিফ খুলে দিলো বিশ^মানবের কাছে মুক্তির আলোকচ্ছটায় দীপ্ত এক নতুন পৃথিবী।
আল্লাহ ঘোষণা দিলেন বিশ^ মানবের কাছে। ‘তোমরা যে যেখানে থাকো, পবিত্র কাবা শরিফের দিকে তোমাদের মুখ ফিরিয়ে দাও।’ পবিত্র কাবা বিশ^ মানবতার মিলনকেন্দ্র।
মানুষকে বলা হলো, বিশ^াসীদের মধ্যে যাদের সামর্থ্য আছে, তারা যে যেমনভাবে পারো, হেঁটে, ঘোড়ায় কিংবা গাধায় চড়ে অথবা অন্যভাবে মক্কায় কাবা শরিফে মিলিত হও। অবনত চিত্তে আল্লাহর সার্বভৌমত্বকে ঘোষণা করো। গড়ে তোলো কাবা শরিফকে বিশ^াসীদের মহা মিলনকেন্দ্র।
কিন্তু কোথায় সেই মহা মিলনকেন্দ্র? বিশ^ আজ দ্বিধাবিভক্ত। ইহুদি, খ্রিষ্টান হজরত ইবরাহিম আ:-এর পথ ধরে আজ আর চলছে না। প্রতি বছর কাবা শরিফ ডেকে ফেরে। কবে সে দিন আসবে?
সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী হজরত মুহাম্মদ সা:-এর উম্মত হিসেবে এই দায়িত্ব আজ আমাদের ওপর এসেছে। আল্লাহর নবীর আহ্বান, আজ নিয়ে যেতে হবে সমগ্র পৃথিবীর মানুষের কাছে। এ দায়িত্ব আমাদের নবী মুহাম্মদ সা: অর্পণ করে গেছেন বিদায় হজে। আমরা তা অস্বীকার করতে পারি না।
নজরুল ইসলাম সত্যই বলেছেন :
ওরে হত্যা নয় আজ সত্যগ্রহ, শক্তির উদ্-বোধন!
দুর্ব্বল! ভীরু! চুপ রহো, ওহো খাম্ খা ক্ষুব্ধ মন!
ধ্বনি ওঠে রণি’ দূর বাণীর,---
আজিকার এ খুন কোরবাণীর!
দুম্বা-শির রুম্-বাসীর
শহীদের শির সেরা আজি! রহ্ মান কি রুদ্র নন?
ওরে হত্যা নয় আজ সত্যগ্রহ শক্তির উদ্-বোধন!

ওরে হত্যা নয় আজ সত্যগ্রহ শক্তির উদ্-বোধন!
খঞ্জরে মারো গর্দ্দানেই,
পঞ্জরে আজি দরদ নেই,
মর্দ্দানীই পর্দা নেই,
ডরতা নেই আজ খুন-খারাবিতে রক্ত-লুব্ধ মন!
খুনে খেল্ বো খুন-মাতন!
দুনো উনমাদনাতে সত্য মুক্তি আন তে যুঝবো রণ!
ওরে হত্যা নয় আজ সত্যগ্রহ শক্তির উদ্-বোধন!

ওরে হত্যা নয় আজ সত্যগ্রহ শক্তির উদ্-বোধন!
চ’ড়েছে খুন আজ খুনিয়ারার
মুসলিমে সারা দুনিয়াটার!
‘জুল্ ফিকার’ খুল্ বে তার
দু’ধারী ধার শেরে-খোদার, রক্তে-পূত-বদন।
খুনে আজকে রুধ বো মন!
ওরে শক্তি-হস্তে মুক্তি, শক্তি রক্তে সুপ্ত শোন!
ওরে হত্যা নয় আজ সত্যগ্রহ শক্তির উদ্-বোধন!

ওরে হত্যা নয় আজ সত্যগ্রহ শক্তির উদ্-বোধন!
আস্তানা সিধা রাস্তা নয়,
‘আাজাদী’ মেলে না পস্তানো’য়!
দস্তা নয় সে সস্তা নয়!
হত্যা নয় কি মৃত্যুদণ্ড? তবে রক্ত-লুব্ধ কোন
কাঁদে--- শক্তি-দুস্ত শোন---
“এয় ইব্রাহীম আজ কোরবাণী কর শ্রেষ্ঠ পুত্র ধন!”
ওরে হত্যা নয় আজ সত্যগ্রহ শক্তির উদ্-বোধন!

ওরে হত্যা নয় আজ সত্যগ্রহ শক্তির উদ্-বোধন!
এ তো নহে লোহু তরবারের
ঘাতক জালিম র্জো বারের!
কোরবানের র্জো-জানের
খুন এ যে, এতে গোর্দ্দা ঢের রে, এ ত্যাগে ‘বুদ্ধ’ মন!
এতে মা রাখে পুত্র পণ!
তাই জননী হাজেরা বেটারে পরালো বলির পূত বসন!
ওরে হত্যা নয় আজ সত্যগ্রহ শক্তির উদ্-বোধন!

ওরে হত্যা নয় আজ সত্যগ্রহ শক্তির উদ্-বোধন!
এই দিন-ই ‘মীনা’-ময়দানে’
পুত্র-¯েœহের গর্দ্দানে
ছুরি হেনে’ খুন ক্ষরিয়ে নে,
রেখেছে আব্বা ইব্ রাহীম্ নে আপনা রুদ্র পণ।
ছি ছি! কেঁপো না ক্ষুদ্র মন
আজ জল্লাদ নয়, প্রহ্লাদ-সম মোল্লা খুন-বদন!
ওরে হত্যা নয় আজ সত্যগ্রহ শক্তির উদ্-বোধন!

 


আরো সংবাদ



premium cement