২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


তিন সিটিতে নির্বাচন : বিএনপির ভাবনা

তিন সিটিতে নির্বাচন : বিএনপির ভাবনা - ছবি : সংগৃহীত

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির পর থেকে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকারের কোনো নির্বাচনেই বিএনপির অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। প্রতিটি নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেছে ঠিকই কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের দোর্দণ্ড প্রতাপে তারা টিকতে পারেনি। নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের ভূমিকাও ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। এ বছর অনুষ্ঠিত খুলনা ও গাজীপুর সিটি নির্বাচনের চরিত্র ছিল ভিন্ন রকম। এ দু’টি নির্বাচনে দৃশ্যত কোনো হাঙ্গামা ছিল না। কিন্তু মামলা ও গ্রেফতার অভিযানের ফলে নির্বাচনের মাঠ ছিল ফাঁকা। বিএনপির কর্মী-সমর্থকেরা ভোটকেন্দ্রে ভিড়তে পারেননি, উধাও করে দেয়া হয় এজেন্ট। ফলে অনেকটাই উত্তাপহীন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিজয়ই নিশ্চিত হয়। জাতীয় নির্বাচনের আগে আগামী সোমবার হতে যাওয়া তিন সিটি নির্বাচনেও গাজীপুর খুলনার পুনরাবৃত্তিই দেখছে বিএনপি। 

সিলেট, রাজশাহী ও বরিশাল তিন সিটি নির্বাচনেই বিএনপি নেতাকর্মীদের অব্যাহতভাবে গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে আসছে বিএনপি। দলটির অভিযোগ- নির্বাচনে দায়িত্বরত দলের নেতাকর্মীদের বেছে বেছে গ্রেফতার করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নির্বাচনী এলাকা থেকে গ্রেফতার করে আটক দেখানো হচ্ছে অন্য জেলায়। দলটি ইসিতেও এসব বিষয়ে বারবার অভিযোগ করে কোনো প্রতিকার না পাওয়ার কথা বলেছে।
সিলেটে গত বুধবার রাতে দক্ষিণ সুরমার হুমায়ুন রশীদ চত্বর এলাকায় ককটেল হামলায় পুলিশের এক উপপরিদর্শক (এসআই) আহত হন। ঘটনার পর কে বা কোন প্রার্থীর মিছিল থেকে হামলা করা হয়েছে সে বিষয়টি জানাতে পারেননি ওসি ফজল। কিন্তু ওই ঘটনায় ৪৮ জন বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এতে করে এক ধরনের গ্রেফতারভীতি ছড়িয়ে পড়েছে। 
সিলেট নির্বাচনে বিএনপির কেন্দ্র গঠিত টিমের গুরুত্বপূর্ণ নেতা ভাইস চেয়ারম্যান মো: শাহজাহান গতকাল ফোনে সেখান থেকে বলেন, জনগণ ভোট দিতে চান। ভোটের পরিবেশ থাকলে তারা ধানের শীষের প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর পক্ষেই রায় দেবেন। কিন্তু প্রশাসন ও ইসির ওপর আমাদের আস্থা নেই। পরিস্থিতি গাজীপুর খুলনার চেয়েও খারাপ হতে পারে। মামলা দিয়ে নেতাকর্মীদের হেনস্তা করার চেষ্টা হচ্ছে। ধানের শীষের পক্ষে ব্যাপক গণজোয়ার তৈরি হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। 

বরিশালে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার বা হয়রানি না করার নির্দেশনা রয়েছে হাইকোর্টের। এ নির্দেশনার পরেও ধানের শীষের মনোনীত প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের গ্রেফতার করাসহ বাসাবাড়ি তল্লাশি চালিয়ে তাদের এলাকা থেকে বিতারিত করার অভিযোগ করেছেন বিএনপির প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার। তিনি বলেন, সরকারি দলের নেতাকর্মীরা অস্ত্রের মহড়া দিলেও পুলিশ নীরব। পুলিশের গ্রেফতার আতঙ্কের কারণে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা রাতে ঘরে ঘুমাতে পারছেন না। 

বরিশাল বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন নয়া দিগন্তকে বলেন, খুলনা ও গাজীপুরের পূর্বাভাসই পাওয়া যাচ্ছে বরিশালে। 
তিনি বলেন, সরকারি দলের প্রার্থীর পক্ষে আচরণবিধি লঙ্ঘন, বিএনপির প্রার্থী-সমর্থকদের প্রচারে বাধা দেয়া ছাড়া এত দিন পরিবেশ ভালোই ছিল। কিন্তু কথিত চাঁদাবাজির বিভিন্ন মামলায় দুই দিন ধরে পুলিশ নানাভাবে বিএনপির নেতাকর্মীদের হয়রানি ও গ্রেফতার করছে। তিনি বলেন, বরিশালে ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার তৈরি হয়েছে। মজিবর রহমান সরওয়ারের আতঙ্কে ভুগছে আওয়ামী লীগ। 
রাজশাহী সিটিতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা না হলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলে দাবি করেছেন বিএনপির মেয়রপ্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। নির্বাচন কমিশনের অসহযোগিতা এবং বিশেষ দল থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত পুলিশবাহিনীর অত্যাচার, পক্ষপাতিত্ব ও গণগ্রেফতারের অভিযোগ তুলেছেন তিনি। এ পর্যন্ত প্রায় দুই শ’ নেতাকর্মী এবং পোলিং এজেন্টকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বুলবুল।


আরো সংবাদ



premium cement