২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইউক্রেনের ওপর ট্রাম্পের চাপ ইমপিচযোগ্য

আইন বিশেষজ্ঞদের অভিমত
-

রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে বিপাকে ফেলতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেভাবে ইউক্রেনের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিলেন, তা ইমপিচযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন প্রতিনিধি পরিষদের বিচার বিভাগীয় কমিটির শুনানিতে আসা তিন আইন বিশেষজ্ঞ। প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ উত্থাপনের প্রস্তুতিতে গত বুধবার প্রথম এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
শুনানিতে প্রতিনিধি পরিষদের ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা বলেছেন, কেবল ইউক্রেন বিষয়েই নয়, ইমপিচমেন্টের অভিযোগ খুঁজতে তারা ট্রাম্পের আরো অনেক কিছুই খতিয়ে দেখবেন। গত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রচার শিবিরের সাথে রাশিয়ার আঁতাত অনুসন্ধানের দায়িত্ব পাওয়া মার্কিন বিচার বিভাগের সাবেক স্পেশাল কাউন্সেল রবার্ট মুলারকে বাধা দিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কোনো ধরনের চেষ্টা করেছিলেন কি না তাও খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
কংগ্রেসের নি¤œকক্ষের বিচার বিভাগীয় কমিটির চেয়ারম্যান জেরল্ড ন্যাডলার বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আছে তা সাংবিধানিক ব্যবস্থার জন্য সরাসরি হুমকি হিসেবে হাজির হয়েছে।’ চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া ইমপিচমেন্ট তদন্তের মূল লক্ষ্য ছিল, আগামী বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সম্ভাব্য ডেমোক্র্যাট প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে ইউক্রেনকে যে অনুরোধ করেছিলেন ট্রাম্প, তাতে কোনো আইনের লংঘন হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা। মার্কিন প্রেসিডেন্টের কর্মকাণ্ড ‘ভয়াবহ অপরাধ ও অপকর্মের’ মাত্রা অতিক্রম করে সংবিধান অনুযায়ী ইমপিচযোগ্য হয়েছে কি না, বুধবার থেকে শুরু হওয়া শুনানিতে কংগ্রেসের বিচার বিভাগ তা-ই পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখবে।
প্রথম দিনের দীর্ঘ শুনানিতে ডেমোক্র্যাটদের বেছে নেয়া তিন আইনের অধ্যাপক সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, ট্রাম্পের কর্মকাণ্ড অভিশংসনযোগ্য অপরাধ বলেই মনে করছেন তারা। নর্থ ক্যারোলাইনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক মাইকেল গেরহার্ড বলেছেন, ‘যা নিয়ে আমরা কথা বলছি, তা যদি ইমপিচযোগ্য না হয়, তা হলে কিছুই ইমপিচযোগ্য হতে পারে না।’
ডেমোক্র্যাটদের বেছে নেয়া বাকি দুই অধ্যাপকের কণ্ঠেও ছিল একই সুর। এ দিনের শুনানিতে রিপাবলিকানদের মাত্র একজন বিশেষজ্ঞ বেছে নেয়ার সুযোগ ছিল। তাদের ডাকা জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জনাথন টার্লে বলেছেন, অভিযোগগুলোর বিপরীতে প্রেসিডেন্টকে ইমপিচমেন্টে অকাট্য প্রমাণ দেখছেন না তিনি। ট্রাম্পকে ইমপিচমেন্টে তদন্ত প্রয়োজনের চেয়েও দ্রুতগতিতে এগিয়েছে এবং এখানে অভিযোগের ঘটনাগুলোর সাথে সরাসরি সংশ্লিষ্ট মানুষজনের সাক্ষ্যের ঘাটতি আছে।
টার্লে বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নীতি ও কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করা যে কেউই এ সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারে যে, অভিশংসনের এ চলমান আইনি লড়াই মোটেও যথোপযুক্ত মানের নয়। বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি বিপজ্জনক, কেননা এখানে মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিশংসন নিয়ে কথা হচ্ছে।’ আগের নির্বাচনে ট্রাম্পকে ভোট দেননি বলেও জানান রিপাবলিকানদের বেছে নেয়া এ আইনের অধ্যাপক।
ট্রাম্প অবশ্য শুরু থেকেই তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো অস্বীকার করে আসছেন। মঙ্গলবার কংগ্রেসের নি¤œকক্ষের ডেমোক্র্রাট আইনপ্রণেতারা প্রেসিডেন্টকে ইমপিচমেন্টের সম্ভাব্য ভিত্তিসংক্রান্ত একটি রিপোর্টও প্রকাশ করেছে।
লন্ডনে নেটো সম্মেলনে অংশ নেয়া ট্রাম্প ওই রিপোর্টকে ‘কৌতুক’ অ্যাখ্যা দিয়েছেন। ডেমোক্র্যাটদের দেশপ্রেম নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তার জিজ্ঞাসা, ‘তারা কি আদতেই আমাদের দেশকে ভালোবাসে?’

 


আরো সংবাদ



premium cement