০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`


কাশ্মিরের মানুষ স্বাধীনতা চায়

সাবেক ভারতীয় মন্ত্রীর মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়
ভারত অধিকৃত কাশ্মিরে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সাথে এক স্বাধীনতাকামী কর্মীর উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় : এএফপি -

কাশ্মিরের সাধারণ মানুষ পাকিস্তানের অংশ বা দেশটির সাথে একীভূত হতে নয়, তারা স্বাধীনতা চায়। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা এবং সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সাইফুদ্দিন সোজ এমন মন্তব্য করেছেন। পাকিস্তানের সাবেক সামরিক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফের মন্তব্যের সাথে একমত পোষণ করে এই মন্তব্যের পর ভারতজুড়ে সাবেক এই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা শুরু করেছে তার রাজনৈতিক বিরোধীরা।
সাইফুদ্দিন সোজ বলেন, ‘পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ অতীতে বলেছিলেন, কাশ্মিরের জনগণ পাকিস্তানের সাথে একীভূত হতে চায় না, স্বাধীনতা লাভ করাই তাদের প্রথম লক্ষ্য। এই বক্তব্য সেদিনও যেমন সত্য ছিল, আজও তেমন সত্য। আমিও তাই মনে করি, কিন্তু আমি জানি এটা কখনো সম্ভব নয়।’ তার এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানায়। প্রতিক্রিয়ায় বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত পাত্র, অমিত মালভিয়া এবং রবিশঙ্কর প্রসাদ সিনিয়র কংগ্রেস নেতা সাইফুদ্দিন সোজের তীব্র সমালোচনা করেন। ‘যারা দেশকে ভাঙার ষড়যন্ত্র করছে’ ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন রবিশঙ্কর প্রসাদ। অন্যদিকে সাইফুদ্দিন সোজের এই বক্তব্যের মাধ্যমে পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফের করা মন্তব্যের সত্যায়ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অমিত মালভিয়া।
সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা সাইফুদ্দিন সোজের নতুন বই কাশ্মির : গ্লিম্পসেস অব হিস্ট্রি অ্যান্ড দ্য স্টোরি অব স্ট্রাগল খুব শিগগিরই প্রকাশিত হবে। এই বইতে কাশ্মির বিষয়ে তিনি তার বিস্তারিত মতামত তুলে ধরেছেন। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সাবেক ইউপিএ সরকারের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সাইফুদ্দিন সোজ পূর্বে ন্যাশনাল কনফারেন্স নামে কাশ্মিরের একটি রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত ছিলেন। ১৯৯৯ সালে লোকসভায় একটি বিলে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর বিরুদ্ধে ভোট দেয়ার পর তিনি দল পরিবর্তন করেন।
২০০৮ সালে সোজ জম্মু ও কাশ্মির রাজ্য কংগ্রেসের প্রধান নির্বাচিত হন। ইতঃপূর্বে সংলাপের মাধ্যমে কাশ্মিরের স্বাধীনতাকামী জনগণের মনের ভাষা বোঝার জন্য ভারতের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন সাইফুদ্দিন সোজ। কাশ্মিরের স্বাধীনতাপন্থী নেতা এবং নিহত হিজবুল মুজাহিদিন কমান্ডার বুরহান ওয়ানির মত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গত বছর দিল্লিতে সোজ বলেন, ‘নয়াদিল্লি ও কাশ্মিরের মধ্যে সংলাপের বিষয়ে হুররিয়াত কনফারেন্সের যৌথ নেতৃত্ব যে অবস্থান গ্রহণ করেছে, আমি চাই কাশ্মিরের সব মূলধারার দল পরিপূর্ণভাবে সেটা উপলব্ধি করুক। আমার হাতে কোনো ক্ষমতা থাকলে সংলাপের চালিয়ে যাওয়ার জন্য বুরহান ওয়ানিকে আমি জীবিত রাখতাম।’
উল্লেখ্য স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে ১৯৯৩ সালের ৯ মার্চ কাশ্মিরের ২৬টি রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠন ‘হুররিয়াত কনফারেন্স’ নামে একটি একক রাজনৈতিক জোট বা ফ্রন্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

 


আরো সংবাদ



premium cement