গাজা সীমান্তে ইসরাইলি বাহিনীর গুলিবর্ষণ ও কাঁদানে গ্যাসে শতাধিক ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন।
সীমান্ত বরাবর ৩০ মার্চ থেকে শুরু হওয়া ‘মার্চ অব রিটার্ন’-এর ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবারের বিক্ষোভেও কয়েক হাজার তরুণ-যুবক অংশ নেন।
১৯৪৮ সালে নিজেদের ঘরবাড়ি থেকে উচ্ছেদ হওয়া লাখ লাখ ফিলিস্তিনি ইসরাইলের দখলে থাকা এলাকায় ফেরার অধিাকারের দাবিতে হামাসসহ বেশ কয়েকটি দল ও গোষ্ঠী এ বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল। বিক্ষোভের শুরুর দিন হিসেবে বেছে নেয়া হয় ৩০ মার্চকে। ১৯৭৬ সালের এই দিনে ভূমি দখলের প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে ইসরাইলি নিরাপত্তাবাহিনীর হাতে ছয় বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছিলেন।
ইসরাইলের মার্কিন দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুসালেমে সরিয়ে নেয়ার আনুষ্ঠিকতার সময় চলতি মাসের মাঝামাঝি বিক্ষোভ তুঙ্গে উঠেছিল। বিক্ষোভকারীদের ওপর ইসরাইলি বাহিনীর বর্বর হামলায় কেবল ১৪ মে-তেই ৬০ ফিলিস্তিনি নিহত হন। এর পর থেকে সহিংসতার পরিমাণ কমে এলেও বিক্ষিপ্তভাবে বিক্ষোভ চলছেই।
মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়া সীমান্ত বরাবর এ বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ১১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। শুক্রবারের বিক্ষোভে বেশির ভাগ ফিলিস্তিনিই সীমান্ত বেষ্টনীর ৮০০ মিটার দূরে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানান। কয়েক ডজন তরুণ বেষ্টনীর একটি স্থানের ৩০০ মিটারের কাছাকাছি গিয়ে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। গাজার পূর্ব দিকের সীমান্তেও কিছু তরুণ সীমান্ত বেষ্টনীর কাছাকাছি চলে এসে তা টেনে সরিয়ে ফেলার চেষ্টা চালায়।
এ সময় ইসরাইলি সেনারা বিক্ষোভকারীদের দিকে তাজা গুলি ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। সৈন্যরা ইসরাইলের মাটিতে নামার আগেই বেশ কয়েকটি ঘুড়িও গুলি করে ভূপাতিত করে। দখল করা এলাকায় ইসরাইলি ফসলের ক্ষেত জ্বালিয়ে দিতে লেজের দিকে আগুন লাগিয়ে ঘুড়িগুলো উড়িয়েছিল ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীরা।
বিক্ষোভে অন্তত ১০ ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, সব মিলিয়ে ১০৯ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন গাজার স্বাস্থ্যকর্মীরা।
এ দিনের বিভিন্ন বিক্ষোভে হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া ও দলটির গাজা অংশের শীর্ষনেতা ইয়াহিয়া আল-সিনওয়ার অংশ নেন বলেও খবরে বলা হয়েছে। তাদের উপস্থিতি বিক্ষোভকারীদের আরো আন্দোলিত করে।
কাঁদানে গ্যাস থেকে বাঁচতে পরনের টি-শার্টকে মুখোশ বানিয়ে গাজার দক্ষিণ সীমান্তে অবস্থিত খান ইউনুসের পূর্ব দিকে হওয়া এক বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী আলি বলেন, ‘মার্চ অব রিটার্ন শেষ হয়নি। হয়তো ছোট হয়ে এসেছে, তবে আমরা চালিয়ে যাবো।’ ইফতারের সময় ঘনিয়ে এলে সন্ধ্যার দিকে বিক্ষোভকারীরা ফিরে যান।
২০০৭ সাল থেকেই গাজা হামাসের নিয়ন্ত্রণে আছে, নিজ ভূখণ্ডের দখলদার শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধরত হামাসকে ইসরাইল ও তার মদদদাতা খ্রিষ্টানশক্তি ‘সন্ত্রাসী’ অভিহিত করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। দশককালেরও বেশি সময় ধরে হামাসের উত্থানে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত মিসরের স্বৈরাচারী সরকার ও ইসরাইল গাজা সীমান্তে অবরোধ আরোপ করে রেখেছে। তাদের এ অবরোধের ফলে ফিলিস্তিনি শহরটির অর্থনীতি একেবারেই ধ্বংসের মুখে পড়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা