৩ স্কুলছাত্রী ধর্ষিত বোয়ালমারী বেগমগঞ্জ ও দেলদুয়ারে

ফরিদপুরের বোয়ালমারী, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ ও টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে তিন স্কুল ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। তিনটি ঘটনায় ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
ফরিদপুর সংবাদদাতা জানান, ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে প্রেমের ছলনায় ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরীকে গণধর্ষণ করেছে কথিত প্রেমিকসহ আরো চারবন্ধু। গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে ১১টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে বোয়ালমারী উপজেলাসংলগ্ন মধুমতী নদীর চরে।
এ ব্যাপারে গতকাল বুধবার নিজে বাদি হয়ে বোয়ালমারী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছে ওই কিশোরী। ওই কিশোরী স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী। পুলিশ এ মামলার তিন আসামিকে গ্রেফতার করেছে।
বোয়ালমারী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো: শহিদুল ইসলাম জানান, বোয়ালমারীর পাশে মাগুরা জেলার মোহম্মদপুর উপজেলার বাবুখালী গ্রামের নাসির মোল্লার (২০) সাথে মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে ওই কিশোরীর। গত মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে প্রেমিক নাসির দেখা করতে এসে কিশোরীটিকে মধুমতি নদীর চরে নিয়ে যায়। সেখানে প্রেমিক নাসিরসহ তার আরো চার বন্ধু বোয়ালমারীর ঘোষপুর ইউনিয়নের লংকারচর গ্রামের তারক মণ্ডল (১৯), সৈকত মণ্ডল(১৮), নাসির (৩০) ও দশম শ্রেণীর এক ছাত্র (১৬) পালাক্রমে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মো: সাহিদুল ইসলাম বুধবার বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি ওই কিশোরীকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য বুধবার দুপুরে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠিয়ে দেন।
বোয়ালমারী থানার পুলিশ বোয়ালমারীর ঘোষপুর ইউনিয়নের লংকারচর গ্রামের তারক মণ্ডল, সৈকত মণ্ডল ও নাসিরকে গ্রেফতার করেছে। তবে মাগুরা জেলার মোহম্মদপুর উপজেলার বাবুখালী গ্রামের নাসির মোল্লা পলাতক রয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: আমিনুর রহমান বলেন, খবর পেয়েই পুলিশ তিন আসামিকে গ্রেফতার করে। কিশোরীকে উদ্ধার করে চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। গ্রেফতারকৃত তিন আসামিকে আজ বৃহস্পতিবার আদালতে সোপর্দ করা হবে।
নোয়াখালী সংবাদদাতা জানান,নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় তৃতীয় শ্রেণীর এক স্কুলছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এ ব্যাপারে শিশুটির মা বাদি হয়ে গতকাল সকালে বেগমগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় অভিযুক্ত আবুল খায়েরকে (৪৫) আটক করেছে পুলিশ। শিশুটিকে চিকিৎসা ও ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, রাজগঞ্জ ইউনিয়নের তেতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী জামার মাপ দেয়ার জন্য মঙ্গলবার বিকেলে কালিরহাট বাজারে আবুল খায়েরের দর্জি দোকানে যায়। এ সময় শিশুটিকে একা পেয়ে দোকানের পেছনে নিয়ে ধর্ষণ করে আবুল খায়ের। রাতে স্বজনরা শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
খবর পেয়ে রাতে কালিরহাট বাজার থেকে পুলিশ অভিযুক্ত দর্জি আবুল খায়েরকে আটক করে। সে কৃষ্ণরামপুর গ্রামের হোসেনুজ্জামানের ছেলে।
দেলদুয়ার (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা জানান, টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। গত মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার ফাজিলহাটি ইউনিয়নের ফাজিলহাটি গ্রামে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার রাতেই ধর্ষককে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ফাজিলহাটি গ্রামের ইসমাইল হোসেনের তৃতীয় শ্রেণীতে পড়–য়া মেয়ে দুপুরে বাড়ির পাশে জমি থেকে গরুর জন্য ঘাস আনতে যায়। শিশুটিকে একা পেয়ে প্রতিবেশী মৃত শামছুল হকের ছেলে এমদাদুল হক (৫৫) জোরপূর্বক লেবুক্ষেতে নিয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষিত শিশুটির আর্তচিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে। শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। গতকাল বুধবার তাকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ দিকে ঘটনাটি সামাজিকভাবে মীমাংসার জন্য রাজি করাতে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদ বাদি পক্ষকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে বলে অভিযোগ করেছেন ভিকটিমের মা। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মনোয়ার হোসেন বলেন, শিশু ধর্ষণের খবর পেয়ে রাতেই ধর্ষককে আটক করা হয়েছে। ধর্ষণের আলামতও সংগ্রহ করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।