দল থেকে কোনো কোনো নেতার পদত্যাগের ঘটনায় কর্মীদের বিচলিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, আসার যেমন নিয়ম আছে যাওয়ারও তো নিয়ম আছে। কমলাপুর রেল স্টেশনে দেখেন, কত লোক ট্রেনে ওইঠা চইলা যাইতাছে, আবার কত লোক ট্রেন থেকে নাইমা আসতেছে। তার পরও কিন্তু প্ল্যাটফর্মে লোকের অভাব নাই। বিএনপি হচ্ছে জাতীয়তাবাদী শক্তির একটা প্ল্যাটফর্ম। এই প্ল্যাটফর্ম কখনো খালি থাকে না। সুতরাং এদেরকে বেশি গুরুত্ব দেয়ারও দরকার নাই, আবার আমাদের বিচলিত হওয়ারও কিছু নাই। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এম মোরশেদ খানের দলত্যাগের দিকে ইঙ্গিত করে গত রোববার এক আলোচনা সভায় তিনি আরো বলেন, ক্লান্ত শরীর নিয়ে পথিক আসবে, বিশ্রাম নেবে, আবার পিপাসা মিটলে চলে যাবেÑ এটাই স্বাভাবিক।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের উদ্যোগে ৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন কৃষকদলের আহ্বায়ক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। কৃষক দলের নেতা এস কে সাদীর পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, কৃষক দলের তকদির হোসেন মো: জসিম, নাজিম উদ্দিন, নাসির হায়দার, জিয়াউল হক পলাশ, শহীদুল ইসলাম ভূঁইয়া, মাইনুল ইসলাম, সেলিম হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমাদের সুসময় অথবা আমাদের ক্ষমতার সময়ে যাদেরকে পেয়েছি বড় বড় নেতা বা মন্ত্রী হিসেবে, তারা বেশি দিন টিকে থাকতে চায় না। কারণ তারা আন্দোলন-সংগ্রাম করে বর্ণাঢ্য জীবন লাভ করেন নাই। আমাদের নেতাকর্মীদের অর্জিত ফসলের মধ্য দিয়ে বেগম খালেদা জিয়া যে সরকার গঠন করেছেন, তখন অনেক নামীদামি নাদুস-নুদুস নেতা আমাদের দলে এসছেন। তাদের মধ্যে একটু ধৈর্যের বাঁধ সৃষ্টি হয়েছে, আর ভালো লাগছে না। সেই কারণে তারা প্রস্থান করছেন।
১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের ঘটনাবলি তুলে ধরে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান কর্নেল তাহের বা জাসদের গণবাহিনীর ইচ্ছা পূরণ করতে রাজি না হওয়ায় ওই সময়ে রাত্রিবেলা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় একটা লিফলেট ছড়ানো হয়Ñ ‘সিপাহি-জনতা ভাই ভাই, হাবিলদারের ওপর অফিসার নাই’। সাধারণ সেনা ও অব্যাহতিপ্রাপ্ত সেনাসদস্য, সব কিছু মিলিয়ে তখন সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন অফিসারদের হত্যা করার উদ্যোগ নেয়া হয় এবং অনেককে হত্যা হয়। সেই হত্যাটা কে করেছে কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে? তাহলে কর্নেল তাহেরকে শেখ হাসিনা কোথায় রাখবেন? তাহলে ইনুকে (হাসানুল হক ইনু) মন্ত্রিসভায় ঠাঁই দিলেন কেন? গণবাহিনী, জাসদের নেতারা এবং কর্নেল তাহেরের যে উচ্চাকাক্সক্ষা, জিয়াউর রহমানের কাঁধে বন্দুক রেখে বিপ্লবী সরকার গঠন করা, সেই সুযোগটা তিনি দেন নাই। এই কারণেই জাসদ নেতাদের ভাষায় জিয়াউর রহমান ‘বেঈমান’। জিয়াউর রহমান এই বিপ্লবের মূল লক্ষ্য ও চেতনাবোধকে সংহত করেছেন অর্থাৎ বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার মধ্য দিয়ে তিনি এই বিপ্লবের আকাক্সক্ষাকে সম্মান করেছেন।
’৭৫-এর পরিস্থিতির সাথে তুলনা করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আরো বলেন, গণতন্ত্র নাই, মানুষের স্বাধীনতা নাই, মানুষের কোনো অধিকার নেই বেঁচে থাকার। অনেক দুর্ঘটনা ঘটতেছে। তার পরও কিন্তু খেলা থেমে নাই। আজকে আগ্রাসী শক্তির কাছে আমরা মাথা বিক্রি করে দিয়েছি। যেনতেনভাবে ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশের স্বার্থ-সম্পদ সব বিনষ্ট করছি অর্থাৎ লুটেরাদের হাতে সম্পদ দিয়ে দিচ্ছি। আজকের এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে আমাদের উত্তরণ ঘটাতে হবে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা