১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলকদ ১৪৪৫
`


উত্তরা তৃতীয় পর্বের কিছু এলাকায় এখনো পুকুর সমান পানি

-

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) উত্তরা তৃতীয় পর্ব প্রকল্পের কিছু এলাকায় এখনো পুকুর সমান পানিতে পরিপূর্ণ, তৈরি হয়নি রাস্তা। এলাকাগুলো এখনো রয়েছে গেছে আগের অবস্থায়। ফলে প্লট বরাদ্দপ্রাপ্তরা পড়েছেন বিপাকে। প্লটগুলো চিহ্নিত না হওয়ায় বরাদ্দপ্রাপ্তরা প্লট বুঝে পাচ্ছেন না। রাজউককে তাগাদা দেয়া হলেও রাজউক কোনো সদুত্তর দিতে পারছে না। রাজউক কেবল বলছে, ‘হয়ে যাবে, অপেক্ষা করুন।’ সেই অপেক্ষার শেষ হচ্ছে না কয়েক বছরেও।
রাজউকের উন্নয়ন করা উত্তরা তৃতীয় পর্ব প্রকল্পের বেশির ভাগ এলাকা বাড়ি করার মতো উপযুক্ত করা হলেও অধরাই রয়ে গেছে কিছু অংশ। উত্তরা তৃতীয় পর্ব প্রকল্পের রাজউকের ব্যবস্থাপনায় ১৮ নম্বর সেক্টরে ১৬ তলাবিশিষ্ট অনেক অ্যাপার্টমেন্ট উঠে গেছে অনেক। অন্যান্য সেক্টরেও ছয় তলা বিশিষ্ট আধুনিক বিল্ডিং উঠিয়েছেন বরাদ্দপ্রাপ্তরা। তবে উন্নয়ন করার পরও পড়ে আছে বেশির ভাগ এলাকা। ওই সব এলাকায় কোনো উন্নয়ন না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন প্লট বরাদ্দপ্রাপ্তরা।
উত্তরা তৃতীয় পর্ব প্রকল্পে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে মেট্রোরেল যাচ্ছে এমন এলাকার দুই পাশেই উন্নয়ন হয়েছে। মেট্রোরেলের পাশে রয়েছে মোটামোটি প্রশস্ত রাস্তা। যদিও সংস্কারের অভাবে ভেঙ্গেচুরে একাকার রাস্তাগুলো। মেট্রোরেলের পাশেই রয়েছে ১৭ নম্বর সেক্টরের কে ব্লক। কে ব্লকের ৪/এ এবং ১০ নম্বর রোডের আশপাশের কিছু এলাকার উন্নয়ন হয়নি এখনো। বিশেষ করে ৪/এ নম্বর রোডের আংশিক রাস্তা করা হলেও অবশিষ্ট রাস্তা করার কোনো আলামতও নেই। অবশিষ্ট অংশটি আদি অবস্থায় রয়ে গেছে। এখানে রয়েছে একটি বিশাল পুকুরের মতো ডোবা, রয়েছে প্রচুর পানি। এ রোডের কোনো এক পাশে প্লট পেয়েছেন এমন কয়েকজন গ্রহীতা নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, তারা রাজউকের কাছে বারবার গিয়েও এর কোনো সমাধান পাননি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে রাজউকের উত্তরা প্রকল্পের কর্মকর্তারাও কথাও বলেন না। ব্যস্ততা দেখিয়ে তারা বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন।
প্লট বরাদ্দ প্রাপ্তদের অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, উন্নয়নে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন না করেই বিল তুলে নিয়ে যেতে পারেন হয়তো। ‘কী অবস্থায় আছে এই রোডের দুই পাশের উন্নয়নের’ এ নিয়ে কর্মকর্তারা সঠিক কোনো তথ্য দিচ্ছেন না বলে তারা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন।
এ বিষয়ে উত্তরা তৃতীয় পর্ব প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) মো: আব্দুল আউয়ালের কাছে ‘কেন ১৭ সেক্টরের ৪/এ বা ১০ নম্বর রোডের কিয়দংশে উন্নয়ন হয়নি?’ জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে এ প্রতিবেদকের সাথে কথা বলতে রাজি হননি। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, ‘চেয়ারম্যানের অনুমতি ছাড়া কোনো কথা বলা অথবা কোনো তথ্য দেয়া তার পক্ষে সম্ভব নয়।’ নয়া দিগন্তের এ প্রতিবেদক উত্তরা তৃতীয় পর্বের প্রকল্প পরিচালকের কাছে একই বিষয়ে দুই দিন গিয়ে কোনো তথ্য পাননি। প্রকল্প পরিচালক দুইবারই কথা বলতে অস্বীকার করেছেন। এ দিকে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে রাজউক চেয়ারম্যান ড. সুলতান আহমেদের দফতরে যোগাযোগ করা হলে তাকে দফতরে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
পরে পূর্ব থেকে পরিচিত রাজউকের একজন কর্মকর্তার কাছে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা জানান, ‘চেয়ারম্যানের দফতর থেকে রাজউকের সবাইকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে চেয়ারম্যানের পূর্বানুমতি ব্যতীত মিডিয়ার সাথে কথা না বলতে। সে কারণে রাজউকের কর্মকর্তারা বেশ কিছুদিন থেকে মিডিয়াকে এড়িয়ে চলছেন।’
উত্তরা তৃতীয় পর্ব প্রকল্পে যে শুধু কোনো কোনো রোডের আশপাশে উন্নয়ন হয়নি তা নয়, এই প্রকল্পে প্রবেশের পরই যে রাস্তাটি ভেতরে গেছে এর অবস্থা খুবই করুণ। ভাঙ্গাচুরার কারণে গাড়ি নিয়ে প্রবেশ করা খুবই দুরহ। এ ছাড়া সামান্য বৃষ্টি হলেই কাদা হয়ে এমন অবস্থা হয় যে চলাফেরা করা যায় না। কিন্তু রাজউক এ ব্যাপারে ভ্রƒক্ষেপ করছে না বলে প্লট বরাদ্দপ্রাপ্তরা জানিয়েছেন।


আরো সংবাদ



premium cement