২১ মে ২০২৪, ০৭ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলকদ ১৪৪৫
`


যুদ্ধবিরতি আলোচনা শেষে গাজায় ইসরাইলের হামলা

যুদ্ধবিরতি আলোচনা শেষে গাজায় ইসরাইলের হামলা - ছবি : সংগৃহীত

মিসরে যুদ্ধবিরতি আলোচনা ফলপ্রসু না হওয়ায় ইসরাইল আবারো শুক্রবার গাজায় হামলা চালিয়েছে৷ মিসর সীমান্তে অবস্থিত রাফায় হামলা চালাতে দেখেছেন এএফপির সাংবাদিকেরা৷ আর গাজার উত্তরে আকাশ হামলা ও সংঘষের খবর দিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা৷

গাজায় দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতির শর্ত ঠিক করতে কায়রোতে মিলিত হয়েছিলেন ইসরাইল ও হামাসের কর্মকর্তারা৷ তারা বৃহস্পতিবার কায়রো ত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছে মিসরের গোয়েন্দা সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যম আল-কাহেরা নিউজ৷

হামাসের পক্ষ থেকেও তাদের প্রতিনিধিদের কায়রো ছাড়ার কথা নিশ্চিত করা হয়েছে৷

মিসর বলছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য দুই পক্ষকে অবশ্যই ‘নমনীয়তা' দেখাতে হবে৷

যুক্তরাষ্ট্রের সিআইএর পরিচালক উইলিয়াম বার্নস যুদ্ধবিরতি আলোচনার অংশ ছিলেন৷ তিনিও শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাচ্ছেন বলে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে৷ ‘তবে এর মানে এই নয় যে, আলোচনা এখনো চলছে না,’ বলেন হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কারবি৷

‘আমরা এখনো বিশ্বাস করি, সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ আছে, কিন্তু এর জন্য দুই পক্ষের নেতৃত্ব দরকার,’ বলেন তিনি৷

এদিকে রাফায় স্থাপিত শরণার্থী শিবিরের বাসিন্দা গাজার ইনাস মাজেন আল-শামি বলছেন, তারা স্থবিরতায় বিরক্ত৷ ‘আমাদের কোনো অর্থ নেই৷ আর আমাদের এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ার উপায় নেই,’ বলেন তিনি৷

গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরাইলে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর পর ইসরাইল গাজায় হামলা শুরু করে৷ এতে এখন পর্যন্ত গাজায় অন্তত ৩৪ হাজার ৯০৪ জন মারা গেছেন বলে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে৷

৭ অক্টোবরের হামলায় ইসরাইলের ১,১৭০ জনের বেশি মানুষ মারা যান বলে এএফপি জানিয়েছে৷ হামলার সময় প্রায় আড়াই শ’ ইসরাইলিকে জিম্মি করেছিল হামাস৷ এখনো ১২৮ জন জিম্মি আছেন বলে ইসরাইল বলছে৷

ইসরাইলের হামলা শুরুর পর গাজার বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ পালিয়ে রাফায় আশ্রয় নিয়েছে৷ সেখানে এখন প্রায় ১৫ লাখ মানুষ বাস করছেন৷ যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ রাফায় হামলা না চালাতে ইসরাইলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে৷ রাফায় বড় আকারে হামলা করলে ইসরাইলকে আর অস্ত্র দেয়া হবে না বলে সম্প্রতি হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন৷ জার্মানিতেও এটি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বলে বৃহস্পতিবার জানান জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিউস৷

তবে ইসরাইল বলছে, যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জন করতে হলে তাদের রাফায় সেনা পাঠাতে হবে, কারণ, সেখানে হামাসের ঊর্ধ্বতন সামরিক নেতারা লুকিয়ে আছেন৷

মঙ্গলবার থেকে রাফার কিছু অংশে সামরিক অভিযান চালিয়েছে ইসরাইল৷

এদিকে, জাতিসঙ্ঘের ‘রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি ফর পেলেস্টাইন রিফিউজিস’ বা ইউএনআরডাব্লিউএ শুক্রবার জানিয়েছে, ইসরাইলি সেনাবাহিনী রাফার দিকে এগোনো শুরুর পর প্রায় এক লাখ ১০ হাজার মানুষ রাফা থেকে পালিয়ে গেছে৷

গাজায় ত্রাণ পাঠাতে বাধা
ইসরাইলের সাভ ৯ সংগঠনের কর্মীরা গত এক সপ্তাহ ধরে গাজায় ত্রাণ পাঠানোর বিরোধিতা করছেন৷ তারা জর্ডান থেকে গাজার দিকে যাওয়া ত্রাণবাহী ট্রাক আটকাতে মাঝেমধ্যে মহাসড়ক অবরোধ করছেন৷ এই ঘটনায় ওই সংগঠনের অন্তত ১২ জন কর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে সংগঠনটি জানিয়েছে৷ ‘এই ট্রাকগুলো হামাসের জন্য খাবার নিয়ে যাচ্ছে৷ হামাসের সদস্যরা হত্যাকারী, ধর্ষক, খুব খারাপ মানুষ,’ বলে মন্তব্য করেন সংগঠনের এক কর্মী রুবেন ফ্রাঙ্কেনবুর্গ৷

ত্রাণ ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণে নিয়োজিত ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর সিওজিএটি বিভাগ জানিয়েছে, বিক্ষোভ ও বাধার কারণে দেরি ও চালকদের সমস্যা হলেও সীমান্তে শেষ পর্যন্ত সব ত্রাণ পৌঁছেছে৷ সূত্র : ডয়চে ভেলে

 


আরো সংবাদ



premium cement