১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলকদ ১৪৪৫
`


আন্দোলনের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিন : মওদুদ

জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম ’৭১-এর সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ :নয়া দিগন্ত -

আগামী পয়লা অক্টোবর থেকেই দলের নেতাকর্মীদের আন্দোলনের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, আমরা এবার খালি মাঠে গোল দিতে দেবো না। সরকারকে বিনা চ্যালেঞ্জে ছেড়ে দেবো না। জনগণকে নিয়েই আমরা থাকব। আসুন পয়লা অক্টোবর থেকে রেডি হয়ে যান।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম ’৭১-এর উদ্যোগে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে এই আলোচনা সভা হয়। সংগঠনের সভাপতি ঢালী আমিনুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, কেন্দ্রীয় নেতা আশরাফউদ্দিন বকুল, আবদুস সালাম আজাদ, রফিক সিকদার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মওদুদ আহমদ বলেন, স্বৈরাচারী সরকারকে অপসারণ করতে হলে পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়াকে আরো শক্তিশালী করতে হবে। মাঠে নামতে হবে। জনগণের জোয়ার এই সরকারকে দেখাতে হবে এবং দেখবে সরকার। জনগণকে সাথে নিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আমরা আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণ করে এই সরকারকে অপসারিত করব। শান্তিপূর্ণভাবে ভোটের মাধ্যমে, কোনো ভায়োলেন্সের মাধ্যমে নয়।
জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়া নিয়ে নিউ ইয়র্কে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, যখন জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়া ড. কামাল হোসেন এবং ডা: বদরুদ্দোজা চৌধুরী শুরু করলেন তখন তারা স্বাগত জানালেন। কিন্তু এখন প্রধানমন্ত্রী বলছেন, দুর্নীতি, ঘুষখোর, সুদখোরদেরকে নিয়ে ঐক্য তৈরি করা হয়েছে এরা জনগণের জন্য কিছু করতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এ ধরনের অশালীন বক্তব্য আমরা কখনোই আশা করি না। এতে একটা জিনিস পরিষ্কার হয়েছে যে, জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার অগ্রগতি দেখে এই সরকার আতঙ্কিত ও বিচলিত হয়েছে। সে কারণে আজকে তাদের গাত্রদাহ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের কেউ এটি সহ্য করতে পারছেন না।
মওদুদ আহমদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করব- আপনি এই বক্তব্য প্রত্যাহার করুন। তা না হলে রাজনীতিতে কোনো শালীনতা আর থাকবে না। কারণ দুর্নীতির কথা যদি বলেন তাহলে বর্তমান সরকারের চেয়ে আমাদের গত ৫০-৬০ বছরে এমনকি পাকিস্তান আমল থেকে শুরু করে কোনো সরকার এত দুর্নীতি করেনি। আর আজকে আমাদের আপনি দোষারোপ করছেন। আপনার দলের নেতাকর্মীদের দিকে তাকিয়ে দেখেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের টাকা চলে গেল, কয়লা উধাও হয়ে গেল, কঠিন শিলা চলে গেল, শেয়ার মার্কেট লুট হলো একজনও গ্রেফতার হয়নি। ব্যাংকগুলো সব ফোকলা হয়ে গেছে, হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে সরকারি দলের মদদপুষ্ট ব্যক্তিরা। বাংলাদেশের মানুষ এত বোকা নয় প্রধানমন্ত্রী।
বিএনপির শীর্ষ এই নেতা আরো বলেন, জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার জনপ্রিয়তা আপনাদের বক্তব্যের পর আরো বৃদ্ধি পাবে। কারণ তারা জানে জাতি যদি ঐক্যবদ্ধ হয় যেকোনো স্বৈরাচারী সরকারের পতন হয়। এটি একটা স্বৈরাচারী সরকার। তাদের আচার-আচরণ, চিন্তাচেতনা, ধ্যান-ধারণা কি রকম সেটি আমরা এখন বুঝতে পারছি। আর তিন মাসও বাকি নেই। আজ যদি কোনো একটা ভদ্র সরকার ক্ষমতায় থাকত তাহলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতো। আইয়ুব খান (পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট) আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছিল গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার দাবির মুখে। যেখানে সব মামলা প্রত্যাহার করে বেগম জিয়াকে মুক্তি দেয়ার কথা, বিরোধী দলের ওপর যাতে নিপীড়ন ও মামলা-মোকদ্দমা না হয় সেগুলো দেখার কথা, সেখানে তারা কী করছে ভৌতিক ও গায়েবি মামলা দিচ্ছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement