২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


স্রাব যখন শারীরিক ক্ষতির কারণ

স্রাব যখন শারীরিক ক্ষতির কারণ - ছবি : সংগৃহীত

শারমীন। বয়স বাইশ। অনার্সের ছাত্রী। ওর মতে সেই তেরো-চৌদ্দ বছর বয়স থেকেই মাসিকের আগে ও পরে এবং কোনো মাসে পুরো মাসই সাদা স্রাব যেতে থাকে। স্রাব অনেক সময় লালচে রঙের দেখা যায়। মাঝে মধ্যে তলপেটে ব্যথাও করে। অনেক সময় পাজামায় দাগ পড়ে যায়। বাইরে গেলে পাজামা ভেজা অনুভূতি হলে, যার পর সঙ্কোচ বোধ হয়। এ জন্য এখন বাইরে গেলে মাসিক ছাড়াও প্যান্টি পরতে হয়। কি এক অস্বস্তি সারাক্ষণ লেগেই থাকে। মাত্র বাইশ বছরেই শরীর দুর্বল লাগা শুরু হয়েছে। পানির পিপাসা লাগে ঘনঘন, একটু পরিশ্রমের কিছু করলেই বুক ধড়ফড় ও মাথা ঘোরে। তলপেটে ব্যথা তো দু’দিন থাকে না, আবার এক নাগাড়ে সাত দিনও থাকে। শারমীন যারপরনাই অসহায় বোধ করে।

বড় আপুকে বলতেই একটা ধমক দিলেন। মেয়েদের তো সাদা স্রাব হয়েই থাকে। তুই এটা নিয়ে বেশি মাথা ঘামাস। একদম পাত্তা দিবি না। কিন্তু বড় আপুর মুখের কথায় শারমীনের সমস্যা তো আর যায় না। ইদানীং প্রস্রাব করার সময়ও তলপেটে চিনচিন ব্যথা করে। প্রস্রাবের সময়ও ঝপ করে একগাদা সাদা স্রাব (ঘন, মাঝে মাঝে দুর্গন্ধযুক্ত) পড়ে। শারমীন ভয় পায়। গোপনে বান্ধবীদের সাথে ব্যাপারটি শেয়ার করে। অনলাইন ঘাঁটে। অনলাইন ঘাঁটার পর শারমীনের চোখ খোলে। না আর দেরি করা যায় না। বান্ধবীকে সাথে নিয়েই একদিন মহিলা ডাক্তারের কাছে যায়। ডক্টর সবকিছু বিস্তারিত শোনার পর আশ্বস্ত করেন। পরে সাদা স্রাবের নমুনা ও প্রস্রাবের পরীক্ষাও দেন।

ভিটামিন, ক্যালসিয়াম খেতে দেন শারীরিক দুর্বলতার জন্য। ডক্টর বিস্তারিতভাবে মাসিকের ইতিহাস জেনে নেন। দেখা গেল, মাসিকের রক্তক্ষরণও পরিমাণের চেয়ে বেশি হয় শারীরিক দুর্বলতার এটাও একটা কারণ। মাসিকের পথে ব্যবহারের জন্য একটা ক্রিমও দেন। ডক্টর বললেন, এমনিতেই অল্প স্রাব হতে পারে। তবে যদি অতিরিক্ত হয় তবে সেটা শারীরিক ক্ষতির কারণ এবং কখনো যদি স্রাবের সাথে মাসিকের পথে এবং আশপাশে চুলকানি হয় তবে অবশ্যই চিকিৎসা নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে কয়েক ধরনের জীবাণু থাকতে পারে। একটি জীবাণুর নাম ট্রাইনোমোনিয়াসিস। আবার ছত্রাক যার নাম ক্যানডিজ দিয়েও এই সংক্রমণ হতে পারে। ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস নামেও কিছু জীবাণু দিয়েও এ সংক্রমণ হতে পারে।

অনেক সময় আবার দু-তিন ধরনের জীবাণু একত্র হয়েও ইনফেকশন করে। তবে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। সমস্যা থাকলে তো সমাধানও থাকবে। আসল কথা হলো সচেতনতা। জীবনটাকে সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। কোনো রোগ-জীবাণু যেন শরীরে বাসা বাঁধতে না পারে। দীর্ঘদিনের ইনফেকশন থাকলে প্রস্রাবেও জ্বালাপোড়া হতে পারে। বিবাহিত মেয়েদের ক্ষেত্রে এরকম সমস্যা থাকলে পাশাপাশি স্বামীকেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে চিকিৎসা নিতে হয়। কারণ এটা যৌনবাহিত রোগের মধ্যে মাঝে মাঝে ধরা হয়ে থাকে। এ জন্য বলছি, যদি স্রাব যেতে থাকে, পাজামা-প্যান্টি ভিজে যায়, গন্ধযুক্ত স্রাব হয় কিংবা অস্বাভাবিক চুলকানি থাকে এবং যদি আপনার শরীর দুর্বল লাগে কিংবা জ্বর আসে তাহলে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করবেন। নিজে নিজে চিকিৎসা নেবেন না কিংবা অবহেলা করবেন না। কারণ এটা আপনার শারীরিক ক্ষতির কারণ হতে পারে।

লেখিকা : স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়।
চেম্বার : পপুলার ডায়াগনস্টিক, শান্তিনগর শাখা, ইউনিট-২।
ফোন: ০১৭১৮২৭১৭১৯


আরো সংবাদ



premium cement
প্রথমবারের মতো সিরি-এ ম্যাচে ছিলেন সব নারী রেফারি ফেনীতে তাপদাহে তৃষ্ণা মেটাতে শিবিরের পানি-স্যালাইন বিতরণ ২৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বাংলাদেশে যাদের ইলমে দীন অর্জনের সৌভাগ্য হয়েছে, তারাই প্রকৃত ধনী ৩৩ ইসরাইলির মুক্তির বিনিময়ে গাজায় ৪০ দিনের অস্ত্রবিরতির প্রস্তাব ইসরাইলের ‘টেকসই প্রস্তাব’ কী হবে হামাসের প্রতিক্রিয়া উইলিয়ামসনের নেতৃত্বে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল ঘোষণা নিউজিল্যান্ডের রাত ১১টার মধ্যে রাস্তার পাশের চায়ের দোকান বন্ধের নির্দেশ ডিএমপির ব্যাংক একীভূত করার প্রক্রিয়া কি হোঁচট খেল? ফেনীতে শিবিরের পানি-স্যালাইন বিতরণ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজনে পিসিবির প্রস্তাবিত ৩ ভেন্যু

সকল