৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


পেনাল্টি মিস নিয়ে চিন্তায় মেসি!

বার বার পেলান্টি মিসের খেসারত দিতে হয়েছে মেসিকে। - ছবি: এএফপি

গত মৌসুমে আটটা পেনাল্টির মধ্যে মিস চারটাতেই! লিওনেল মেসির সঙ্গে এই পরিসংখ্যান একেবারেই মানানসই নয়। তবু এটাই বাস্তব। যা ভাবিয়ে তুলেছে খোদ এলএম টেনকেও।

গত মৌসুমে ক্লাব ও দেশ মিলিয়ে চারটে পেনাল্টিতে গোল করতে পারেননি মেসি। তার মধ্যে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে আইসল্যান্ডের বিরুদ্ধে পেনাল্টি নষ্টও রয়েছে। আর্জেন্টিনা অবশ্য রাশিয়া বিশ্বকাপে তার পরেও গ্রুপ থেকে নকআউটে উঠেছিল আর্জেন্টিনা। প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের কাছে শেষ পর্যন্ত হেরে যায় আর্জেন্টিনা।

ক্যারিয়ারে মোট ২৪ পেনাল্টিতে গোল করতে পারেননি তিনি। পেনাল্টিতে ব্যর্থতার এই খতিয়ানই পালটাতে মরিয়া মেসি। অনুশীলনে জোরও দিয়েছেন পেনাল্টি মারায়। এই মুহূর্তে বার্সেলোনার হয়ে লা লিগায় খেলছেন তিনি।

 

আরো পড়ুন: জীবন রূপকথা নয়, মেসি একেবারেই অভাগা!

নয়া দিগন্ত অনলাইন, ০১ জুলাই ২০১৮, ২৩:১৪


যোগ-বিয়োগ হিসাব করে সব সময় জীবন এগোয় নাহ। আবার জীবন রূপকথা নয়! এমন কী কাঁটাহীন ফুলে ফুলে সাজানো পথও নয়! বাস্তবতার জমিন তো আরো বন্ধুর। নিরন্তর অভাবের শিশু বয়সটা পেরিয়ে এসে কতো কিছুই না পেয়েছেন! নাম, খ্যাতি, অর্থ, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সুন্দর একটা সাজানো সংসার। কিন্তু তারপরও যেন চাঁদের কলঙ্কের মতো লেগে আছে কালো দাগ! একটা অপূর্ণতা, একটা দীর্ঘশ্বাস আজীবন হয়তো তাড়িয়ে বেড়াবে তাকে। বিশ্বকাপটা যে পাওয়া হল না!

সোনার ওই ট্রফিটা যে ৩১ বসন্ত পেরিয়ে গেলেও অসহায়ের মতো দুর থেকেই দেখতে হয়েছে প্রতিবার! ছুঁয়ে দেখা, চুমু আঁকা আর হয়নি! তাইতো শনিবার রাতে লিওনেল মেসি কেমন কেন বাকশুন্য হয়ে গেলেন! চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়বে কি, কান্নাই যে শুকিয়ে গেছে!

গত বিশ্বকাপটা দুর্দান্ত কেটেছিল। অসাধারণ সব ফুটবলের পসরা সাজিয়ে প্রায় একাই দলকে টেনে তুলেছিলেন ফাইনালে। কিন্তু একা কী আর সব হয়? ডিয়োগো ম্যারাডোনাও তো পাশে পেয়েছিলেন, ক্লাদিও ক্যানেজিয়া আর বাতিস্তুতাদের! মেসি একেবারেই অভাগা! মাঠে অনেকেই আছেন, কিন্তু তারপরও কেউ যেন নেই তার পাশে। ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে আর কিছুই করা হল না! যেখানে অতিরিক্ত সময়ে মারিও গোৎজের গোলে সর্বনাশ। একটুর জন্য ট্রফি ডিয়োগো ম্যারাডোনার অর্জন ছোঁয়া হল না। সবই হল কিন্তু সোনার পরী ছোঁয়া হলনা!

ব্রাজিল বিশ্বকাপের সেরা ফুটবলার হয়েও মন মরা হয়েই বুয়েন্স আয়ার্সের বিমানে উঠছেন লিওনেল মেসি! তারপরও মনে ছিল একটা স্বপ্ন। রাশিয়াতে নিশ্চয়ই সোনার হরিণটা মুঠোবন্ধী হবে! এর মাঝে অবশ্য কোপা আমেরিকার ফাইনালে গিয়েও চিলির কাছে অতিরিক্ত সময়ে হারের যন্ত্রনায় বিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। আরেকটা ফাইনালে ব্যর্থ, মনের দুঃখে আন্তর্জাতিক ফুটবলটাকেই গুডবাই বলে দিয়েছিলেন!

কিন্তু ২৯ বছর বয়সে এই প্রিয় লিও'র বিদায়টা ভক্তরা মেনে নিতে পারেনি কিছুতেই। অনুরোধের পর অনুরোধ! এমন কী কোচ হোর্হে সাম্পাওলির পরামর্শ। শেষ অব্দি না করতে পারলেন না তিনি। সিদ্ধান্ত বদলে ফিরলেন নীল-সাদা জার্সি। মনে হচ্ছিল বিশ্বকাপ জিতেই বুঝি বিখ্যাত সেই জার্সিটা তুলে রাখবেন।

বাছাই পর্বের বৈতরনী পার হতে রাখলেন বড় ভূমিকা। তারপর অনেক স্বপ্ন সঙ্গী করে পা রাখলেন ভ্লাদিমির লেনিনের দেশে! গ্রুপ পর্বের প্রথম দুই ম্যাচের একটিতে হার, একটি ড্র দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছিল ভক্তদের। কিন্তু সেই শঙ্কার মেঘ উড়িয়ে পথ দেখালেন মেসিই। নাইজেরিয়ার বিপক্ষে খেলালেন পুরো দলটাকে। দল উঠে এলো দ্বিতীয় রাউন্ডে। এবার অবশ্য প্রথম দুই ম্যাচে প্রতিপক্ষের নজর ছেড়ে বেরিয়ে আসতে পারছিলেন না সেইভাবে। তবে সময় মতো নাইজেরিয়ার বিপক্ষে ঠিকই থাকল তার অসাধারন সব পাস, হঠাৎ গতি, আর সুক্ষ চিন্তার জাল ছড়িয়ে নু ক্যম্পের সেই মেসিকেই মনে করিয়ে দিচ্ছিলেন!

নকআউটে শনিবার প্রতিপক্ষ শক্তিশালী ফ্রান্স। তারুণ্যের উচ্ছল সেই দলটার বিপক্ষে অভিজ্ঞ আর্জেন্টিনা। ভাল একটা ম্যাচের প্রতিশ্রুতি তো ছিলই। কিন্তু কে জানতো রোমাঞ্চে মোড়ানো সেই ম্যাচটাতে এক রহস্য জড়িয়ে থাকবে। রক্ষণভাগের ব্যর্থতায় তিন গোল দিয়ে হজম করলেন চারটি! এভাবেই শেষ ৯০ মিনিট! এভাবেই শেষ মেসির আরো একটা বিশ্বকাপ।

জীবনে কতো কিছুই দেখলেন আর্জেন্টিনার এক অবহেলিত অঞ্চল রোজারিওতে বেড়ে উঠা এই কিশোর। হরমোনজনিত রোগ তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে ১১ বছর বয়সে যে মেসি ফুটবল স্কাউটদের দৃষ্টি কেড়ে নিয়েছিলেন, তার জীবনে এতো চমক অপেক্ষা করছে কে জানতো। কে জানতো ন্যাপকিন পেপারে লেখা সেই চুক্তিবদ্ধ ফুটবলারটিই উঠে আসবেন এভাবে, সবাইকে ছাড়িয়ে!

ক্যারিয়ারে কী না পেয়েছেন। ৯টি লা লিগা, চারটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, তিনটি ফিফা ক্লাব কাপ ট্রফি! আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপে রানার্স আপ, কোপা আমেরিকার তিনবারের ফাইনালিস্ট। পাঁচবার ফিফার বর্ষসেরা ফুটবলার। অর্জনের এমন তালিকা করতে গেলে সহজে ফুরাবে না।

তারপরও ডিয়েগো ম্যারাডোনা, পেলে এমন কী জিনেদিন জিদানের পাশেও লিওনেল মেসির নামটা লেখার সুযোগ থাকছে না। ইতিহাস বড় নিষ্টুর বিশ্বকাপ না জেতা কাউকে কখনোই যে সর্বকালের সেরাদের তালিকায় নিয়ে আসতে কার্পন্য করে! সময়ের সেরা এই তারকার কোথায় জায়গা হবে কে জানে!

জর্জ বেস্ট, ইউসেবেবিও, জর্জ উইয়াহ কিংবা আলফ্রেডো ডি স্টেফানো'র মতো ফুটবলারদের সঙ্গে এক সময় আক্ষেপ নিয়ে উচ্চারিত হবে হয়তো মেসির নাম। কিন্তু এই একটা প্রজন্ম কখনোই হয়তো ভুলতে চাইবে না ক্ষুদে যাদুকরের কথা। ফুটবল নিয়ে তার কারিকুরির কথা। এমন কী বার্সেলোনার গোল মেশিন, ৩১টি ট্রফি জয়ের নায়ককে নয়, মনে থাকবে টানা চার 'বিগ' ফাইনালে হেরে যাওয়া এই অসহায়, বিধ্বস্ত, মায়াবী ফুটবলারটিকেও। নতুন প্রজন্মের কাছে পেলে-গারিঞ্চা'রা নয়, রোজারিও'র বিস্ময় বালকটিই মুগ্ধতা ছড়িয়ে বেঁচে থাকবেন, আজীবন!


আরো সংবাদ



premium cement
শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে বিএনপি সংকল্পবদ্ধ বায়ুদূষণে শীর্ষে দিল্লি, ঢাকার অবস্থান কত? শৈলকুপায় মামাতো ভাইদের লাঠির আঘাতে ফুফাতো ভাই নিহত আমরা নিজের দেশেই অদৃশ্য : ভারতের মুসলিমরা যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যেই গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৩৪ রাজনীতির মাঠে যেভাবে খেলছেন ইউসুফ পাঠান মার্কিন রণতরীতে হাউছিদের হামলা ধরপাকড়ের মধ্যেই ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ অব্যাহত যুক্তরাষ্ট্রে গুলিতে ৩ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা নিহত ফিলিপাইনের তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি, বাড়তে পারে আরো শিখ নেতা পান্নুনকে খুন করতে ‘হিটম্যান’ পাঠিয়েছিলেন ‘র অফিসার’ : ওয়াশিংটন পোস্ট

সকল