০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫
`


সাগরে গ্যাস জরিপে পিছিয়ে থাকা

লোক দেখানো উন্নয়নমুখী হওয়াই এর কারণ

-

যেকোনো দেশে টেকসই উন্নয়নের জন্য অন্যতম একটি শর্ত হচ্ছে সব ক্ষেত্রে সব খাতে ছোট-বড় যেকোনো পরিকল্পনা গ্রহণের আগে প্রয়োজন সুষ্ঠু জরিপ, অনুসন্ধান, সমীক্ষা বা সম্ভাব্যতা যাচাই করা। প্রয়োজনে প্রতিটি কর্মসূচি বা প্রকল্প হাতে নেয়ার আগে এ ব্যাপারে যাবতীয় তথ্য জনসমক্ষে তুলে ধরে সে ব্যাপারে জনমত যাচাইও জরুরি। সেই সাথে জনগণের পরামর্শ আমলে নিয়ে সেগুলোর পদ্ধতিগত বিবেচনার পর প্রকল্প বা কর্মসূচি নেয়া উচিত। কিন্তু এ বিষয়টি অনেক ক্ষেত্রে উপেক্ষা করে চলাটাই আমাদের জাতীয় অভ্যাসে পরিণত হয়ে যাচ্ছে। ফলে কোনো ধরনের জরিপ, সমীক্ষা ও সম্ভাব্যতা যাচাই না করেই নিচ্ছি অনেক গুরুত্বপূর্ণ সব কর্মসূচি বা প্রকল্প। এতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এসব কর্মসূচি বা প্রকল্প ব্যর্থতায় পর্যবসিত হচ্ছে। নয়তো এসব প্রকল্প আমাদের জাতীয় জীবনে বড় ধরনের ক্ষতি বয়ে আনছে। সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে, এমন সব গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র রয়ে গেছে যেখানে প্রয়োজনীয় জরিপ কাজ শুরুই করা হচ্ছে না। তেমনি একটি ক্ষেত্র হচ্ছে সাগরে গ্যাস সম্পর্কিত জরিপ না চালানো।
গত পরশু একটি জাতীয় দৈনিক জানিয়েছেÑ সমুদ্রসীমা নিয়ে মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশের বিরোধ নিষ্পত্তি হয়েছে ২০১২ সালের মার্চে। ভারতের সাথে বিরোধ শেষ হয়েছে ২০১৪ সালের জুলাইয়ে। জরিপ, অনুসন্ধান শেষ করে বিরোধ নিষ্পত্তির পরের বছরেই বাংলাদেশের সীমারেখার পাশেই গভীর সমুদ্র থেকে গ্যাস উত্তোলন শুরু করেছে মিয়ানমার। এসব কাজ শেষ করে বিপুল গ্যাসের সন্ধান পেয়েছে ভারতও। অথচ বাংলাদেশ আজো নিজেদের সমুদ্রসীমায় সে জরিপ অনুসন্ধান শুরু করতে পারেনি। ফলে গভীর সমুদ্রে বিপুল গ্যাস ও অন্যান্য খনিজসম্পদ পাওয়ার যে সম্ভাবনা রয়েছে, সে সম্পদ সম্পর্কে আমাদের সুনির্দিষ্ট কিছুই জানা হলো না। স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে, কেন জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এই গ্যাস সম্পর্কে আমাদের এই অবহেলা? সমালোচনা আছে, সরকার এখন শুধু সে ব্যাপারে শতভাগ মনোযোগী, যা লোক দেখানো নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিষয়। যেমন : ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল, উড়ালসেতু, দুয়েকটি বড় সেতু, আন্ডার পাস, রাজধানীতে কয়েকটি ভবন নির্মাণ, ফুটপাথে রঙিন টাইলস বসানো, বিভিন্ন ভবনের দর্শনীয় ফটক নির্মাণ ইত্যাদি ধরনের উন্নয়নকাজ। টেকসই উন্নয়নের জন্য যেসব উন্নয়ন দরকার এবং সেসবের যেসব জরিপ, অনুসন্ধান, সম্ভাব্যতা যাচাই করা দরকার সেসব কাজে আমরা মনোযোগী নই। এ কারণেই সাগরে গ্যাস জরিপে আমরা পিছিয়ে।
আসলে যেকোনো দেশেই টেকসই ও দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের ব্যাপারে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার থাকা উচিত। বিশেষ করে সাগরে গ্যাস-সম্পদ সম্পর্কে আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়াটা অপরিহার্য একটি ব্যাপার। কারণ, সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের অভিমত হচ্ছেÑ দেশের স্থলভাগের প্রমাণিত গ্যাসের মজুদ শেষ হয়ে আসছে। গ্যাস-সঙ্কটের কারণে ভুগছে শিল্প, আবাসিক ও বাণিজ্যিক সব শ্রেণীর গ্রাহক। এ সঙ্কট মোকাবেলায় বিদেশ থেকে এলএনজি (লিকুইফাইড ন্যাচারাল গ্যাস) আমদানিও শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে এ আমদানি বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। কিন্তু সমুদ্রে বিপুল গ্যাসের সম্ভাবনা থাকলেও তা কাজে লাগানোয় আমাদের মনোযোগ্য দৃশ্যমান নয়।
বলার অপেক্ষা রাখে না, যেখানে সমুদ্রের সীমারেখা নিষ্পত্তি হওয়ার পর ভারত ও মিয়ানমার তাদের গ্যাস উত্তোলন শুরু করে দিয়েছে, সেখানে আমরা এখনো এ সম্পর্কিত জরিপই শুরু করতে পারিনি। তা বলে দেয়, আমরা গ্যাস অনুসন্ধানে অনেকটা পিছিয়ে গেছি। এখন প্রয়োজন পিছিয়ে পড়া এ অবস্থান থেকে উত্তরণ ঘটাতে আমাদের অগ্রাধিকার পরিকল্পনা নিয়ে কাজে নামতে হবে। এ ব্যাপারে শৈথিল্য প্রকাশের কোনো সুযোগ নেই। জরিপ ও অনুসন্ধানের কাজ দ্রুত শুরু করাটাই হবে আমাদের প্রথম ও প্রধান কাজ।


আরো সংবাদ



premium cement
ভিক্ষাবৃত্তির উদ্দেশ্যে শিশু অপহরণের একমাস পর উদ্ধার, এক দম্পতি গ্রেফতার আইসিজেতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে সমর্থন দেবে তুরস্ক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম লক্ষ্য সিরিজ জয় : শান্ত পেকুয়ায় বজ্রপাতে ২ লবণশ্রমিকের মৃত্যু গাজীপুরে নিখোঁজ পোশাকশ্রমিকের লাশ উদ্ধার চলচ্চিত্রে সমস্যা ও উত্তরণে গোলটেবিল বৈঠক হ্যাটট্রিক হারে সিরিজ হাতছাড়া বাংলাদেশের নয়া দিগন্তে সংবাদ প্রকাশে বন্ধ হলো সেই বিলের মাটি কাটা বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষায় বৃত্তি বাড়াতে আগ্রহী রাশিয়া উখিয়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশী ১০ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে জামায়াতের উদ্বেগ

সকল