সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুক নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে। অভিযোগ করা হচ্ছে, ফেসবুকে সরকারবিরোধী নানা প্রচারণা চালানো হচ্ছে। সরকারের এই অভিযোগ পুরোপুরি অবাস্তব তা হয়তো নয়। কিন্তু একই সাথে ফেসবুক এখন মানুষের মত প্রকাশের প্রধান মাধ্যমে পরিণত হয়েছেÑ যেখানে সরকারের বিভিন্ন কাজের সমালোচনা হচ্ছে। সরকার এখন যেকোনো ধরনের সমালোচনা সহ্য করতে চাইছে না। এর প্রধান কারণ দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। যদি পার্লামেন্টে শক্তিশালী বিরোধী দল থাকত ফেসবুকে নাগরিকেরা যে ধরনের সরকারের সমালোচনা করে থাকে, তার থেকে আরো কঠোর সমালোচনার মুখোমুখি হতে হতো।
সম্প্রতি নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনের পর ফেসবুকে দেয়া মন্তব্যের জের ধরে ধরপাকড়ের অভিযোগ উঠেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, যারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে সহিংসতাকে উসকে দিয়েছে, আমরা তাদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। শিক্ষার্থী, শিক্ষক বা রাজনৈতিক নেতা, কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগের কর্মকর্তা বলেছেন, তারা প্রায় এক হাজার ২০০ অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করেছেন, যেগুলো গুজব ছড়িয়ে সহিংসতা ও অস্থিরতা উসকে দেয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। পুরো কাজ শেষ করতে আরো কয়েক দিন সময় লাগবে। ইতোমধ্যেই ১০-১২ জনের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেছি, যারা আন্দোলনের সময় ফেসবুক লাইভে এসে গুজব ছড়িয়েছে। বাকিদের বিরুদ্ধেও দ্রুতই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ফেসবুক ব্যবহারকারীর দিক দিয়ে ঢাকা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। অন্য সব জায়গার মতো এই শহরেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ভিন্ন মত প্রকাশের বড় মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার হয়। এবারের ছাত্র আন্দোলন ছিল অনেকটা সামাজিক সচেতনতামূলক আন্দোলনের মতো। ছাত্ররা আবেগ নিয়ে এই আন্দোলনে জড়িয়ে ছিল যাতে সড়কে অব্যবস্থাপনা দূর করা যায়। যদিও পরে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের আন্দোলন দমনে রাস্তায় নামার কারণে সহিংসতায় রূপ নেয়। এখন এই আন্দোলনের সূত্র ধরে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে ৫৭ ধারায় মামলা হচ্ছে। ২০১৩ সালের পর থেকে এই আইনে গত পাঁচ বছরে এক হাজার ২৭০টি অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে। সরকার নিজেই স্বীকার করেছে, এই আইনের অপব্যবহার হচ্ছে। কিন্তু এর পরেও তারা আইনটি বাতিল করেনি। এখন এই আইনে অনেকের বিরুদ্ধে মামলার শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
আমরা মনে করি, ফেসবুক নিয়ন্ত্রণের নামে কিংবা ফেসবুকে করা মন্তব্যের কারণে এভাবে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ মত প্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী। অসহিষ্ণুতা নয়, বরং সমালোচনা সহ্য করার মতো মানসিকতা দরকার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মত প্রকাশ বন্ধের চেষ্টা করলেও তার প্রকাশ অন্যভাবে ঘটবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা