২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`
হালাল পণ্যের পৃথক অর্থনৈতিক অঞ্চল

পুরো সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হবে

-

সারা বিশ্বেই হালাল পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। এখন এই পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার তিন লাখ কোটি ডলারের বেশি। এই ক্রমবর্ধমান ও বিশাল বাজারের জোগান দিচ্ছে অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, নিউজিল্যান্ড ও থাইল্যান্ডের মতো অমুসলিম অধ্যুষিত কয়েকটি দেশ। অপর দিকে, বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম প্রধান মুসলিম অধ্যুষিত দেশ হলেও হালাল পণ্য রফতানির দিক দিয়ে পিছিয়ে রয়েছে অনেকটাই। তাই এই বিপুল সম্ভাবনাময় বাজার ধরার জন্য হালাল পণ্য উৎপাদনের পৃথক অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হবে এবং এতে সরকারের ‘সব ধরনের নীতিগত সহায়তা’ দেয়ার কথা জানা গেছে।
একটি সহযোগী জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে আরো জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার ঢাকা চেম্বারের উদ্যোগে হালাল সনদের মানদণ্ড, প্রতিবন্ধকতা ও সম্ভাবনার বিষয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত যথাক্রমে প্রধান ও বিশেষ অতিথি ছিলেন এই গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে। সভায় উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়েছে, হালাল পণ্য উৎপাদন এবং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এর বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে আমাদের এই দেশের সম্ভাবনা উজ্জ্বল। বর্তমানে বিশ্বের ইসলামিক মার্কেটের মূল্য দুই ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি। এটা বিশ্বের সর্বমোট ব্যয়ের প্রায় ১২ শতাংশ। এর থেকে বোঝা যায়, বিশ্বে হালাল পণ্যের চাহিদা ব্যাপক এবং তা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। হালাল পণ্যের উৎপাদন আরো জনপ্রিয় করে তোলার জন্য প্রয়োজন : ক. নীতিমালা তৈরি করে সহায়তা; খ. দক্ষ জনবলসহ প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বৃদ্ধি; গ. হালাল সনদ দেয়ার প্রক্রিয়া সহজ করা এবং সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো উন্নয়নে সহজ শর্তে আর্থিক প্রণোদনা দেয়া। এসব উদ্যোগ নেয়া হলে হালাল পণ্য বিদেশে সরবরাহ করে বিরাট অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।
‘বিডা’ প্রধান বলেছেন, হালাল খাদ্য অত্যন্ত নিরাপদ। অমুসলিমরাও এর ভোক্তা। রফতানি বৃদ্ধি, দেশের বাইরে বাজার সম্প্রসারণ এবং কর্মসংস্থানে হালাল পণ্যের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, দেশে এক শ’টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) প্রতিষ্ঠার যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, এতে হালাল পণ্যের জন্য একটি অঞ্চল বরাদ্দ করা যেতে পারে। এ জন্য সরকার নীতিগত সহায়তা দেবে। বাংলাদেশে আমিরাতের রাষ্ট্রদূত বলেন, গবেষণার ভিত্তিতে জানা গেছেÑ ২০১৫ সালে বিশ্বে হালাল পণ্যের বাজারমূল্য ছিল ২ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। এটা ২০২৪ সালে প্রায় সাড়ে ১০ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছে যাবে। এখন বাংলাদেশ বেশ কিছু দেশে শুধু গোশত রফতানি করছে। এ ক্ষেত্রে গোখাদ্যে যেন ক্ষতিকর কোনো কিছু মেশানো না হয়, সে ব্যাপারে আরো মনোযোগ দিতে হবে।
হালাল পণ্যের উৎপাদন ও রফতানি বাড়াতে এবং নির্বিঘœ করতে অবকাঠামোর পর্যাপ্ততার পাশাপাশি নীতিমালা প্রণয়ন এবং বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের সনদদাতা সংস্থা স্থাপনের ওপর জোর দেয়া হয়েছে। আমরা আশা করি, এ ক্ষেত্রে যাবতীয় সম্ভাবনার সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করতে সরকার অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।


আরো সংবাদ



premium cement