০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


৫ মিনিটেই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে

৫ মিনিটেই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে - ছবি : সংগৃহীত

ব্যাংক হিসাব খোলা যেন এক মহাজটিল কাজ। ১২ পাতার ফরম পূরণ করতে হবে। নিজের পাশাপাশি দিতে হবে গ্রাহকের বাবা-মায়ের নানা তথ্য। সরবরাহ করতে হবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। সাধারণ তো দূরের কথা, একজন সচেতন শিক্ষিত মানুষেরই একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে গলদঘর্ম হতে হয়। এ জন্য ব্যাংকের হিসাব খুলতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নিরুৎসাহিত হন সাধারণ গ্রাহক। কিন্তু এ জটিল কাজকেই সহজ করল বাংলাদেশ ব্যাংক। কোনো কাগজপত্র ও ছবি সরবরাহ করতে হবে না। শুধু ন্যাশনাল আইডি কার্ডের নাম্বার জমা দিতে হবে। এতে ৫ মিনিটের মধ্যেই গ্রাহকের ব্যাংক হিসাব খোলা হয়ে যাবে। ব্যাংকেও যেতে হবে না গ্রাহকের। শুধু ব্যাংক অ্যাকাউন্টই নয়, এ প্রক্রিয়ায় বিও অ্যাকাউন্ট ও বীমা পলিসিও খোলা যাবে।

বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ) থেকে এ বিষয়ে গতকাল একটি নীতিমালা জারি করা হয়েছে। নীতিমালাটির নাম দেয়া হয়েছে ‘ই-কেওয়াইসি গাইডলাইন’।
জানা গেছে, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে শুধু গ্রাহককেই জটিলতায় পড়তে হতো না, সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানেরও গলদঘর্ম হতে হতো। ব্যাংকিং চ্যানেলে সন্ত্রাসী অর্থায়ন প্রতিরোধে গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট সংরক্ষণে ব্যাংকের অতিরিক্ত জনবল প্রয়োজন হতো। এ কারণে বছর শেষে গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে অ্যাকাউন্ট পরিচালনার জন্য সার্ভিস চার্জের নামে অতিরিক্ত মাশুল পরিশোধ কেটে নেয়া হতো। এ সেবা মাশুল কাটতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে গ্রাহককে অবহিত করা হয় না। যেমনÑ কোনো গ্রাহক একটি বেসরকারি ব্যাংকে ৫ হাজার টাকা রাখলে এবং ওই অ্যাকাউন্টে কোনো লেনদেন না করলে কয়েক বছর পরই দেখা যাবে তার অ্যাকাউন্ট শূন্য হয়ে গেছে শুধু অ্যাকাউন্ট সেবা মাশুল কেটে নেয়ার কারণে।

নতুন নীতিমালা পরিপালনের পর গ্রাহকের সেবা মাশুলও ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ কমে যাবে বলে বিএফআইইউর একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
যেসব সেবা পাওয়া যাবে ই-কেওয়াইসিতে : বিএফআইইউ থেকে গতকাল জারিকৃত নীতিমালা অনুযায়ী একজন গ্রাহক শুধু তার ন্যাশনাল আইডি কার্ড নিয়ে ব্যাংক শাখায় যেতে হবে। ব্যাংক কর্মকর্তাকে ন্যাশনাল আইডি কার্ডটি সরবরাহ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তার কাছ থেকে মাত্র ৫ মিনিটেই সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের হিসাব নাম্বার পেয়ে যাবেন। এ ক্ষেত্রে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাস অর্থায়নের ঝুঁকি মোকাবেলায় কোনো সমস্যা হবে না। এ ক্ষেত্রে গ্রাহক ঘরে বসেও অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন। এ নীতিমালার আওতায় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক শুধু গ্রাহকের আঙুলের ছাপ ও মুখচ্ছবি ক্যামেরার মাধ্যমে সংগ্রহ করবে। গ্রাহক চাইলে ঘরে বসেও এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেন। তবে যাদের পরিচয়পত্র নেই, তাদের সনাতন পদ্ধতিতেই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। বিএফআইইউ মনে করে, এর ফলে অতি সহজেই আর্থিক সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে সম্প্রতি একটি কৌশলপত্র প্রকাশ হয়েছে। এ কৌশলপত্রের আওতায় ই-কেওয়াইসির মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ব্যাংক হিসাব খোলার দায়িত্ব দেয়া হয় বিএফআইইউকে। এটি চালু করার জন্য বিএফআইইউ ১৯টি ব্যাংক, একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও একটি মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রদানকারী নিয়ে ৩৩ জেলার ৫২টি স্থানে পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। এ পাইলট প্রকল্পের আলোকে এবং বিভিন্ন অংশীজনের সুপারিশের ভিত্তিতে আলোচ্য নীতিমালা জারি করা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement