০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`


যমুনার ভাঙনে বিলুপ্তির পথে চরকাটারী (ভিডিও)

- ছবি : নয়া দিগন্ত

পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে যমুনা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে প্রায় তিন শতাধিক বসতবাড়ি। বিলীন হয়েছে বাপ-দাদার পুরান ভিটি, স্কুল, মাদ্রাসাসহ শত শত বিঘা ফসলি জমি। ইউনিয়নের সব কয়টি ওয়ার্ডই যমুনার অতলে বিলীন হয়ে নিঃস্ব হয়েছে হাজার পরিবার। মানিকগেঞ্জর দৌলতপুরের চরকাটারী ইউনিয়নের উত্তরখন্ডের অস্তিত্ব এখন বিলীন হওয়ার পথে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার চরকাটারি ইউনিয়নের উত্তরখন্ড কাঠালতলা বাজার এলাকার খুব কাছাকাছি চলে এসেছে নদী। কড়াল গ্রাসে হুমকির মুখে পড়েছে বসতবাড়ি, ফসলী জমিসহ বাজার রাস্তাঘাট ও স্কুল-মাদ্রাসা। সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়েছে। মুহুর্তের মধ্যেই ভেঙ্গে যাচ্ছে বসতি এলাকা। কেউ কেউ ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে কোন রকম ছাউনি তৈরী করে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বসবাস করছে খোলা আকাশের নীচে। আবার অনেকে আশ্রয় নিয়েছে পার্শ্ববর্তী স্কুল বা ভাড়া চুক্তি করে অন্যের জমিতে।

দৌলতপুর চরকাটারীর উত্তরখন্ড কাঠালতলা বাজার এলাকার বাসিন্দা টাঙ্গাইল জেলার সরকারি কুমুদিনী কলেজের সহযোগীে অধ্যাপক মোঃ ছায়েদুর রহমান এ প্রতিনিধিকে জানান, চার জেলার সীমান্তবর্তী এ উত্তরখন্ড এলাকাটি মানিকগঞ্জ জেলার ইতিহাস ঐতিহ্য বহন করে আসছে যুগ যুগ ধরে। গত বছর উত্তরখন্ডের আংশিক ও আশপাশের প্রায় এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এই দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বিলীন হয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা। ভাঙনে ভাঙ্গতে নদী খুব কাছে চলে এসেছে। এভাবে ভাঙ্গতে থাকলে কাঠালতলা বাজার এলাকাসহ বিলীন হয়ে যাবে চরকাটারীর অস্তিত্ব। অচিরেই উত্তরখন্ড নাম ছাড়া এর কোন অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যাবে না।

তিনি আরো জানান, কয়েক দিন আগে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক এলাকা পরিদর্শন করে গেছেন। তবে ক্ষমতার সীমাবদ্ধতার কথা জানিয়েছেন তিনি। ভাঙ্গনের হাত থেকে অস্তিত্ব রক্ষার জন্য সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

চরকাটারী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বারেক নিশ্চিত করে জানান, ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৭নং ওয়ার্ডে প্রায় শতাধিক এবং ৯নং ওয়ার্ডে প্রায় তিনশতাধিক বসতবাড়ি ছাড়া চরকাটারী ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এভাবে ভাংতে থাকলে চরকাটারী ইউপির সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যাবে।

ইতোমধ্যে গত বছরের রেকর্ড এবং এ বছরের রেকর্ড অনুযায়ী এ ইউনিয়নের ৭টি ওয়ার্ডই নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এই দুই সপ্তাহের ব্যবধানে নদীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫৮ নং ডাক্তারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪৫ নং চরকাটারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৬৪নং চরকাটারী (৩)নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় তিনটিই বিলীন হয়ে গেছে।

এছাড়াও করিম মন্ডলের পাড়া মহিলা মাদ্রাসাটি সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে পড়েছে কাঠালতলা দারুল উলুম মাদ্রাসা, অনি হাজীপাড়া মহিলা মাদ্রাসা ও ছালাম মন্ডলের পাড়া মহিলা মাদ্রাসা এ তিনিটিও।

মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক ১৩৩ পরিবারকে চাউল দিয়ে গেছেন এবং এর আগে ৬১ পরিবারকে চাউল দিয়েছিলেন।

তিনি জানান, নতুন করে টিন দেওয়ার আশ্বাস পেয়েছি। তবে এখনো হাতে পাইনি। চরকাটারী ইউনিয়ন রক্ষার্থে সরকারের সুদৃষ্টি প্রয়োজন।


আরো সংবাদ



premium cement