২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ধর্মপাশায় ফসল রক্ষাবাঁধের নামে হিজল বাগান ধ্বংস

-

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় ফসল রক্ষাবাঁধের নামে কোটি কোটি টাকার সরকারি হিজল-করছ বাগান ধ্বংস করা হচ্ছে। একাধিক পিআইসি (পাউবোর) নীতিমালা তোয়াক্কা না করে প্রকল্পের স্থানের দূর্বা গাস পরিষ্কার না করে ড্রাম ট্রাক দিয়ে বাঁধের গোড়া থেকে বালু মাটি দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবোর) নীতিমালা অনুযায়ী প্রকল্পিত স্থানে দূর্বা গাস পরিষ্কার করার কথা থাকলেও একাধিক পিআইসিরা দলীয় প্রভাব খাটিয়ে বাঁধের থেকে বালু মাটি তুলে বাঁধের ওপর ফেলছে। ফলে বাঁধগুলোর নির্মাণ শুরুতেই ত্রুটিপূর্ণ হচ্ছে।
বাংলাদেশ পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে কাবিখা প্রকল্পের অর্থায়নে সুনামগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) তথ্যাবধানে ধর্মপাশা উপজেলায় আটটি হাওরে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার ফসল রক্ষাবাঁধ বাস্তবায়নে প্রায় ১৮০টি উপপ্রকল্প তৈরি করা হয়। এর বিপরিতে ১৮০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি (পিআইসি) কমিটি গঠন করা হয়। হাওরে যেসব কৃষকের জমি আছে তারাই প্রকল্প বাস্তবায়ন (পিআইসি) কমিটির সভাপতির নাম অন্তর্ভুক্ত হবে। ওই হাওরে যে কৃষকের জমি নেই তারা পিআইসি হতে পারবেন না। এসব প্রকল্প ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯ প্রকল্পের কাজ শুরু করে ২৮ফেব্রুয়ারী ২০২০ এর মধ্যে সবগুলো প্রকল্পের কাজ শতভাগ বাস্তবায়নের নির্দেশ দেয়া হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবোর) নির্ধারিত সময়সিমার মধ্যে অর্ধেক প্রকল্পের কাজও বাস্তবায় সম্ভব নয়। কারণ সময়মতো টাকা না দেয়ায় পিআইসিরা কাজ করতে পারছে না। টাকার অভাবে একাধিক প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে। জ্বালানি তেলের অভাবে অনেক ভ্যাকো মেশিন-ড্রাম ট্রাক বন্ধ রয়েছে। কোনো কোনো প্রকল্পের কাজ এখনো শুরুই হয়নি। এক পিআইসি পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবোর) নীতিমালার তোয়াক্কা না করে বাংলাদেশ সরকারের বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের হিজল-করছ বাগান ধ্বংস করে বাঁধ নির্মাণ করছে।
উল্লেখ্য উপজেলার চামরদানী ইউনিয়নের বিশারা গ্রামের নূপেন্দ্র তালুকদারের ছেলে নিকসন তালুকদার, সে চামরদানী ইউনিয়নের অন্তর্গত পাশুয়ার জলমহাল তীরবর্তী (হরিপুর) নামক স্থানে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের বিশাল হিজল-করছ বাগান ধ্বংস করে বাগানের ২০ থেকে ৩০টি হিজল-করছ গাছ কেটে ওই গাছগুলো গুম করে ওই স্থানের মাটি কেটে বিশাল গর্তের সৃষ্টি করেছে। এতে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের প্রথম শ্রেণীর হিজল-করছ বাগানটির কোটি কোটি টাকার সম্পদ ধ্বংস করছে। ওই স্থানের পিআইসি নিকসন তালুকদার প্রকল্প নম্বর-১০৫। বাগানের ভেতরে ভ্যাকো মেশিন দিয়ে মাটি তোলে বিশাল গর্তের সৃষ্টি করে ড্রাম ট্রাক দিয়ে ওই মাটি দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ফলে সরকারের প্রথম শ্রেণীর হিজল-করছ বাগানটি চিরদিনের জন্য ধ্বংস হয়েছে।
শুধু তাই নয়, বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নে গুড়মা হাওর উপপ্রকল্প পিআইসি রূপন সরকার প্রকল্প নম্বর-৯১, পার্শ্ববর্তী পিআইসি মনিন্দ্র সরকার প্রকল্প নম্বর-৯৩, চন্দ্রসোনার থাল হাওর উপপ্রকল্প পিআইসি রুবেল মিয়া প্রকল্প নম্বর-১৬০ ও পার্শ¦বর্তী পিআইসি রতন মিয়া প্রকল্প নম্বর-১৬১ সহ একাধিক প্রকল্প ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প মনিটরিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আবু তালেব বলেন, হরিপুর সরকারি হিজল-করছ বাগানটি পরিদর্শন করে ওই পিআইসির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। বেড়িবাঁধগুলো পরিদর্শন করে কাজের পরিমাণে টাকা দেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement