২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্ম্য

রোগী ও স্বজনরা দিশেহারা
-

ঝালকাঠি আধুনিক সদর হাসপাতালে রোগী ও স্বজনেরা দালালদের দৌরাত্ম্যে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। মূল ফটক থেকে ভেতরের ওয়ার্ড পর্যন্ত হাসপাতালজুড়ে দালালদের আধিপত্যে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে রোগীরা বলে অভিযোগ রোগী ও স্বজনদের।
ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের ভাষ্যÑ বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টি সেন্টার ও রোগ নির্ণয়কেন্দ্রের নিয়োগ করা এসব দালালের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে হাসপাতালটির স্বাস্থ্যসেবা। মাঝে মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও পুলিশের অভিযানে দালালের আনাগোনা কিছুটা কমলেও কয়েক বছর থেকে তা আগের অবস্থায় ফিরে আসে।
২০১৭ সালে র্যাব-৮ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: গাউছুল আজমের নেতৃতে ঝালকাঠির বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করেছিল। তখন সদর হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ৯ নারী দালালকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছিল।
এই দালালরা ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল থেকে রোগী বাগিয়ে নেয়ার কাজে জড়িত। এরা হাসপাতালে আসা রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য শহরের স্কায়ার ক্লিনিক, বানী ডায়াগনস্টিক, মৌমিতা ও মমতাজ ডায়াগনস্টিকসহ বিভিন্ন ডায়াগনস্টিকে নিতে প্রলুব্ধ করে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের মূল ফটক, জরুরি বিভাগের ভেতরে-বাইরে, বহির্বিভাগে চিকিৎসকদের প্রায় প্রতিটি দরজার সামনে ও আন্তর্বিভাগের সব ক’টি ওয়ার্ডেই দালালদের অপতৎপরতা।
জেলা শহরের পুরনো কলাবাগান এলাকার মুনিরা বলেন, তার এক নিকট আত্মীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় জরুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হয়। হাসপাতালে প্রতিটি পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকলেও দালালরা তাকে বাইরের রোগ নির্ণয়কেন্দ্র থেকে পরীক্ষার জন্য প্রভাবিত করেন। এ ধরনের একই অভিযোগ অনেকের।
রোগী ও স্বজনরা বলেন, দালালরা প্রথমে নিজেদের হাসপাতালের কর্মী হিসেবে পরিচয় দেন। তারা হাসপাতালের অব্যবস্থাপনার কথা বলে রোগী ও স্বজনদের উন্নত চিকিৎসার প্রলোভন দেখিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভাগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। রোগীদের হাসপাতালের যন্ত্রপাতি অচল ও নি¤œমানের বলে বেসরকারি রোগ নির্ণয়কেন্দ্রে নিয়ে যান। হাসপাতালের বেশ কয়েকজন চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীর সাথেও দালালদের সখ্য রয়েছে।
এ ব্যাপারে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডাক্তার মো: আবুয়াল হাসান বলেন, সিভিল সার্জন মহোদয়ের পরামর্শে হাসপাতালকে দালালমুক্ত করতে উদ্যোগ নিয়েছি। প্রশাসনের পাশাপাশি হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটি প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিলে দালালদের অপতৎপরতা বন্ধ হবে।


আরো সংবাদ



premium cement