২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আদমদীঘিতে ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজে হাজার হাজার গরু আক্রান্ত

-

বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় হাজার হাজার গরু নতুন ভাইরাস রোগÑ ‘ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজ’-এ আক্রান্ত হয়েছে। এলাকার কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তাদের আক্রান্ত গরু নিয়ে। শত শত মানুষ চিকিৎসার জন্য আদমদীঘি উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে এসে ভিএস এবং প্রাণিসম্পদ অফিসারকে না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন চিকিৎসা না পেয়ে।
অফিস সূত্রে জানা গেছে, আদমদীঘি উপজেলা ভিএস ও প্রাণিসম্পদ অফিসার বর্তমানে ট্রেনিংয়ে রয়েছেন। এ দিকে মহামারী আকারে এ রোগ ছড়িয়ে পড়লেও প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে এ পর্যন্ত কোনো ধরনের সেমিনার কিংবা এ রোগসংক্রান্ত কোনো লিফলেট বিতরণ করা হয়নি জনগণের মধ্যে।
প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে এ রোগ একেবারে নতুন। আফ্রিকায় কয়েক বছর আগে শত শত ব্রাহমা জাতের গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছিল এবং এ রোগে অসংখ্য গরু মারা গিয়েছিল। এটা ভাইরাসজনিত রোগ হওয়ায় যেকোনোভাবে এ রোগ বাংলাদেশে এসেছে। প্রায় ১৫-২০ দিন আগে থেকে আদমদীঘি উপজেলার সর্বত্র এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে হাজার হাজার গরু। বর্তমানে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে এ রোগ। অভাবের সময় কৃষকদের গরুগুলো আক্রান্ত হওয়ায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। কোনো ওষুধে ফল পাওয়া যাচ্ছে না বলে ভুক্তভোগী কৃষকরা জানিয়েছেন।
এ রোগে আক্রান্ত গরুর শরীরে প্রথমে চামড়া অল্প অল্প ফুলে উঠছে। সেই সাথে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আক্রান্ত গরু থরথর কাঁপছে। শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে উঠছে ১০৩ থেকে ১০৫ ডিগ্রিতে। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে বেশ কিছু বাছুর মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা: মাহাবুব সান্তাহারে একটি গরু এ রোগে মারা যাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন। এ রোগে বড় গরুগুলো সহসা মারা না গেলেও গরুর শরীরে আক্রান্ত স্থানগুলোর চামড়া ফেটে গিয়ে কষ ঝরছে। তারপর সেখান থেকে গোশত পচে বৃহৎ ক্ষতের সৃষ্টি হচ্ছে। কৃষকরা বলছেন, এটি বসন্ত রোগ; কিন্তু প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এটি ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজ।
অফিস সূত্রে জানা যায়, আদমদীঘি উপজেলায় শঙ্কর ও দেশী জাতের প্রায় ৮২ হাজার ৭৩০টি গরু রয়েছে। এর মধ্যে অসংখ্য গরু আক্রান্ত হয়েছে। যেহেতু ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজ একটি ভাইরাসজনিত রোগ, সেহেতু ১০০% গরু এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার কথা।
আদমদীঘি প্রাণিসম্পদ অফিস জানিয়েছে, এ রোগে আক্রান্ত হলে গরুকে অন্য গরু থেকে আলাদা রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। আক্রান্ত স্থানগুলো জীবানুনাশক ভায়োডিন দ্বারা পরিষ্কার করতে হবে। গরুকে যেন মশা-মাছি না কামড়ায় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং আক্রান্ত গরুকে পুষ্টিসম্মৃদ্ধ খাবার খাওয়াতে হবে। এ ছাড়া জ্বরের জন্য ট্যাবলেট ও ব্যথানাশক ট্যাবলেট দেয়া যেতে পারে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ কে এম আব্দুল্লাহ বিন রশিদের সাথে কথা বলা হলে তিনি জানান, এ বিষয় সম্পর্কে তিনি অবগত নন। তবে পরে এ সম্পর্কে জেনে তিনি কথা বলবেন।


আরো সংবাদ



premium cement