৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


তানোরে আলুর বাম্পার ফলন : দামও ভালো

-

রাজশাহীর তানোরের সর্বত্রই আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো দর পাওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। বিগত বছরগুলোতে অনেকটা ক্রেতাশূন্য ছিল এখানকার আলুর বাজার। কিন্তু এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। ক্রেতারা ভিড় করছেন ক্ষেত থেকে আলু কেনার জন্য। এ ছাড়া কৃষকেরা ক্ষেত থেকে আলু তোলার পর বিভিন্ন পাইকারি ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছেন বেশ ভালো দামেই।
হাটবাজারগুলোতে নতুন আলু বিক্রির শুরুতেই বাড়তি দাম পেয়ে কৃষকদের মধ্যে উৎসাহ দেখা দিয়েছে। দিন দিন বাড়ছে আলু চাষের আগ্রহ। তবে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয় কর্তৃপক্ষের গভীর নলকূপের অপারেটরদের কাছে প্রান্তিক কৃষকেরা দিন দিন জিম্মি হয়ে পড়েছেন।
এর পরেই গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে ওঠেছে। আলু চাষের সাথে জড়িত হাজার হাজার কৃষক রয়েছেন ফুরফুরে মেজাজে।
উপজেলার সার্বত্র প্রচুর আলু কেনাবেচা হচ্ছে। আর সেই আলু বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হচ্ছে। উপজেলার মাটি আলু চাষের জন্য খুবই উপযোগী এবং পরিবেশ অনুকূলে থাকায় এ বছর আলুর আবাদ ভালো হয়েছে। কিন্তু বিগত বছরগুলোতে সার, বীজ, কীটনাশক, সেচ ও শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির ফলে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি এবং সেই সাথে বাজারে ভালো দাম না পাওয়ায় সাধারণ কৃষক আলুর আবাদ কমিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু দুই বছর ধরে ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকদের আলু চাষের আগ্রহ বেড়ে গেছে।
উপজেলার গ্রামের রবিউল ইসলাম সারওয়ার হোসেন জানান, তারা এ বছর ছয় বিঘা জমিতে আলু রোপণ করেছিলেন। সবমিলিয়ে খরচ হয়েছে প্রায় দুই লাখ টাকা। আলু উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৪৫০ মণ। বিক্রি হয়েছে প্রায় তিন লাখ টাকায়। তবে ডায়মন্ড আলুর আবাদ ও ফলন তুলনামূলক বেশি হয় বলে তিনি জানান।
প্রাণপুর গ্রামের কৃষক কামরুজ্জামান জানান, তিনি ৯ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। তার খরচ হয়েছে পৌনে তিন লাখ টাকা। আলু বিক্রি করেছেন চার লাখ টাকার মতো।
কৃষকদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, প্রতি কেজি আলুর উৎপাদন খরচ পড়েছে সাত আট টাকা। এর সাথে জমি থেকে আলু উত্তোলন, বাজারজাতকরণ, পরিবহন ও শ্রমিক খরচ মিলে প্রতি কেজি আলুর খরচ পড়ছে ৮-১০ টাকা। স্থানীয় হাটবাজারগুলোতে খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১৬-২০ টাকা কেজি দরে।
আলু ক্রেতা শাফিউল ইসলাম জানান, তানোরে এখন আলু পাইকারি বিক্রি হচ্ছে গড়ে ১৪ থেকে ১৬ টাকা দরে। প্রতিদিন তানোর থেকে শত শত বস্তা আলু গুদামজাতের পর চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন বাজারে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, কার্ডিনাল, রোজাগোল্ড, স্টোরিক, বিনেলা জাতের আলু রোপণ করা হয়। মাটিতে জো আসার সাথে সাথে আলুবীজ রোপণ করা হয়। অল্প দিনেই চারা গজিয়ে যায়। আগাছা দমন, সার, কীটনাশক দিতে হয়। অগ্রহায়ণ, পৌষ ও মাঘÑ এই তিন মাস আলু চাষের সব চেয়ে ভালো সময় বলে তারা জানান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জানান, চলতি মওসুমে উপজেলায় প্রায় চার হাজার ১৪ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর আলুর আবাদ ভালো হয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement