২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ছাতকে কামারগাঁও-কলকলি সড়কের কাজ শেষ হয়নি ৩ বছরেও

-

সুনামগঞ্জের ছাতকে কৈতক-হায়দরপুর ভায়া কলকলি সড়কের পাকাকরণ কাজ চলছে ধীরগতিতে। এতে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন ছাতক উপজেলার জাউয়া, ভাতগাঁও, সিংচাপইড় ও জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলি ইউনিয়নের লোকজন।
স্থানীয় জনসাধারণের অভিযোগ, সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি করার কারণে তিন বছর ধরে বর্ষায় কাদা ও শুকনো মওসুমে ধুলা গায়ে মেখেই চলাফেরা করতে হয়। আরটিআইপি-২ প্রজেক্টের আওতায় সড়কের কামারগাঁও থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত সাত কিলোমিটার পাকাকরণ কাজের টেন্ডার হয় ২০১৫ সালে। সাত কোটি ৪৪ লাখ ৯৯ হাজার টাকায় কাজটি হাতে নেয় টাওয়ার এন্টারপ্রাইজ। দুইটি ব্রিজ নির্মাণসহ সড়কের অপর অংশের কাজ ভাগিয়ে নেন ঠিকাদার নুরুল ইসলাম। প্রায় সাত কোটি টাকার এ কাজের মধ্যে কেবল যুগলনগর ব্রিজের কাজ এ যাবৎ সম্পন্ন হয়েছে। কেওয়ালীপাড়া ব্রিজের কাজ সবেমাত্র শুরু হয়েছে।
এ দিকে জিওবির বরাদ্দের কৈতক-কালিপুর অংশে বিটুমিন কারপেটিংয়ের কাজ কিছুটা সম্পন্ন হয়েছে। শেষ হয়েছে কালিপুর-কামারগাঁও বাজার পর্যন্ত বিটুমিন কারপেটিংয়ের কাজ। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে সড়কের দুই অংশের পৃথক টেন্ডারে ছয় কিলোমিটার কাজ পেয়েছে শহিদ ট্রেডার্স দুই কোটি ৬২ লাখ টাকায়। এ কাজের একটি অংশ সম্পন্ন হয়েছে। স্থানীয়দের ক্ষোভ তিন বছর ধরে পড়ে থাকা কামারগাঁও থেকে হায়দরপুর হয়ে কলকলি সড়কের কাজ সম্পন্ন হচ্ছে না। টাওয়ার এন্টারপ্রাইজের ঠিকাদার সুব্রত চক্রবর্তী সড়কের কাজে ব্যাপক অনিয়ম করছেন বলে জানা গেছে। সড়ক ভাঙা কংক্রিট ও মাটি দিয়ে রুলিং করাসহ হালকা বিটুমিন কারপেটিং করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
স্থানীয় হায়দরপুর গ্রামের কবির মিয়া, আশিক মিয়া, জালাল উদ্দিন, মণ্ডলপুর গ্রামের আখলুছ মিয়া, জহিরপুর গ্রামের লেবু মিয়া, সোহেল মিয়া, কলকলি গ্রামের মিজানুর রহমান, মামদপুর গ্রামের ছইল মিয়া ও কামারগাঁও গ্রামের লুৎফুর রহমান জানান, সড়ক খুঁড়ে রাখা হয়েছে তিন বছর ধরে। ফলে বর্ষায় কাদা ও হেমন্তে ধুলার মধ্যে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এ সড়কের পাশে সিরাজগঞ্জ বাজার, কামারগাঁও বাজার, কালিপুর, তাজগঞ্জ বাজারসহ কয়েকটি জনসমাগম স্থান। ঝিগলী উচ্চবিদ্যালয়, জালাল উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়, সমতা উচ্চবিদ্যালয়, হায়দরপুর উচ্চবিদ্যালয়, কলকলি কলেজ ও হাইস্কুলের শিক্ষার্থীদেরও সড়কটির কারণে দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
২০১৫ সালের ২৯ ডিসেম্বর সড়ক পাকাকরণ কাজ শুরু হলেও এ পর্যন্ত কাজের কাজ কিছুই হয়নি। সড়ক খোঁড়াখুঁড়িতে জনদুর্ভোগ বাড়ছেই। ঠিকাদার নুরুল ইসলাম ও সুব্রত চক্রবর্তী সড়কে নিম্নমানের কাজ করে যাচ্ছেন বলে এলাকার লোকজন অভিযোগ করেছেন। অপর দিকে মণ্ডলপুর পয়েন্ট থেকে ইউনিয়ন পরিষদের সংযোগ সড়ক খুঁড়ে রাখা হয়েছে চার বছর ধরে। আরসিসি পাকা করণ কাজের জন্য ৪০ লাখ টাকা বরাদ্দ হলেও এ সড়কে খোঁড়াখুঁিড় ছাড়া আর কোনো কাজ হয়নি।
ইউপি চেয়ারম্যান আওলাদ হোসেন মাস্টার সড়কের কাজ মন্থরগতিতে হওয়ায় জনদুর্ভোগ বৃদ্ধির কথা স্বীকার করে দ্রুত সড়ক পাকাকরণ ও কেওয়ালীপাড়া ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানান।
এ ব্যাপারে ঠিকাদার নুরুল ইসলাম জানান, তার দু’টি ব্রিজের মধ্যে একটি ব্রিজের কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। অ্যাপ্রোচ সড়কসহ অন্য ব্রিজটির কাজ শিগগিরই সম্পন্ন করা হবে।
ছাতক উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) আবুল মনসুর মিয়া জানান, কৈতক থেকে হায়দরপুর হয়ে কলকলি সড়কের পাকাকরণ ও সংস্কারকাজ চারটি ভাগে টেন্ডার হয়েছে। দুইটি ভাগের কাজ শেষ হওয়ার পথে। কামারগাঁও বাজার থেকে কলকলি পর্যন্ত সড়ক ও ব্রিজের কাজ দু’জন ঠিকাদারের আওতায় রয়েছে। তারা মাঝখানে বেশ কিছুদিন কাজ বন্ধ করে রেখেছিলেন। বর্তমানে কারপেটিং কাজ চলছে। দ্রুত কাজ সম্পন্ন করার জন্য ঠিকাদারদের তাগিদ দেয়া হয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement