২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বাগমারার আলু গাছের পাতায় পচন আবাদ নিয়ে শঙ্কায় কৃষকেরা

-

ঘনকুয়াশা আর প্রতিকূল আবহাওয়ায় আলুর আবাদ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন রাজশাহীর বাগমারার কৃষকেরা। হঠাৎ ঘনকুয়াশা ও শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্ষেতের আলু গাছের সবুজ পাতায় পচন ধরার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আলু গাছের পচন রোধে ছত্রাকনাশক কীটনাশক ছিটিয়ে আবাদ রক্ষার চেষ্টা করছেন কৃষকেরা।
সরজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষি মাঠ এখন আলুর কচি সবুজ গাছে ভরে গেছে। কোনো কোনো এলাকায় আরো আগে থেকেই আগাম জাতের আলু বাজারে আসতে শুরু করেছে। আর কিছু দিন পরই পুরোদমে শুরু হবে আলু তোলার কাজ। সেই অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন উপজেলার কৃষক পরিবারগুলো।
অন্যান্য ফসলের তুলনায় বর্তমান আলুর বাজার দর ভালো। তাই চাষিরা খুশি। কিন্তু হঠাৎ শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে আকাশ থেকে ঘন কুয়াশা ঝরতে থাকায় আলুর আবাদ নিয়ে দুঃচিন্তায় পড়েছেন কৃষকেরা। কারণ ঘন কুয়াশা আলুগাছের সবুজপাতা ও ডগায় পচন ধরে। আর এই রোগ একবার দেখা দিলে তা দ্রুত পুরো ক্ষেতে ছড়িয়ে পড়ে। এর প্রভাবে ক্ষেতের আবাদ উজাড় হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই ঘনকুয়াশা আর শীতের কবল থেকে ক্ষেতের আলুগাছের পচন রোধে ছত্রাকনাশক কীটনাশক ছিটিয়ে আবাদ রক্ষার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষকেরা।
সরজমিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাঠে মাঠে কৃষকদের আলুর ক্ষেতে কীটনাশক ছিটিয়ে আবাদ রক্ষার চেষ্টা করতে দেখা গেছে। হাটগাঙ্গোপাড়া এলাকার মিঠু ও শিকদারি এলাকার মাসুমসহ কয়েকজন আলুচাষি জানান, আলুর আশানুরূপ ফলন পেতে হলে জমিতে কমপক্ষে ৮৫ থেকে ৯০ দিন পর্যন্ত আলুর গাছ টিকিয়ে রাখতে হবে। তা না হলে আলুর ভালো ফলন আশা করা যায় না।
ঝিকরা ইউনিয়নের ঝাড়গ্রামের কৃষক আব্দুল জব্বার ও মনির উদ্দিন জানান, আলুগাছের সবুজ পাতায় একবার পচন ধরলে তা পুরো ক্ষেতে ছড়িয়ে পড়তে বেশি সময় লাগে না। তাই সঠিক সময়ে ব্যবস্থা নিতে না পারলে মাত্র দুই-তিন দিনের মধ্যেই পুরো ক্ষেত উজাড় হয়ে যায়।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও দু’টি পৌর এলাকায় এবার মোট ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে কার্ডিনাল তিন হাজার ৬২০ হেক্টর, হোলান্ড ২ হাজার ৫০০ হেক্টর, গোল আলু ২ হাজার ২০০ হেক্টর, লাল গোল আলু ২ হাজার ২০০ হেক্টর, ডায়মন্ড ২ হাজার ৪১০ হেক্টর, দেশী গোল আলু ২ হাজার ৪৫ হেক্টর ও অন্যান্য জাতের আলু চাষ হয়েছে ১ হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় এক হাজার হেক্টর জমিতে আগাম জাতের আলু চাষ করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিবুর রহমান বলেন, বাগমারার বড়বিহানালী, ঝিকরা, মাড়িয়া, গোয়াকান্দি, হামিরকুৎসা, যোগীপাড়া, শ্রীপুর, গণিপুর, বাসুপাড়া ও শুভডাঙ্গা ইউনিয়নসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাটি অত্যন্ত উর্বর ও আলু চাষের উপযোগী।
এ কারণে এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর আলু চাষ হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং কৃষকেরা সঠিক সময়ে জমিতে বীজ রোপণ করতে পারায় এ উপজেলায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। তবে ঘন কুয়াশা ও শীতের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পারলে ফলনও ভালো হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।


আরো সংবাদ



premium cement