দক্ষিণ চট্টগ্রামে শঙ্খ নদীর দুই তীরে বিস্তীর্ণ আলু ক্ষেতে মোজাইক ভাইরাস (পাতা মোড়ানো রোগ) দেখা দেয়ায় চন্দনাইশ ও সাতকানিয়ার পাঁচ শতাধিক কৃষক আলুর ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
গত ১৫ জানুয়ারি সকালে নদীর উভয় তীরের সাতকানিয়া ও চন্দনাইশ উপজেলায় গিয়ে দেখা গেছে ক্ষেতের পর ক্ষেত মোজাইক বাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এতে দুই উপজেলার আলুচাষিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। সাতকানিয়ার খাগরিয়ার আলুচাষি রিদোয়ান পারভেজ বলেন, এবার তিনি এক একর জমিতে দোহাজারী জাতের আলু রোপণ করেছেন। তার পুরো আলু ক্ষেত মোজাইক ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। তাই তিনি আলুর ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। পারভেজ বলেন, প্রতি একর জমিতে আলুবীজ সার প্রয়োগ ও শ্রমিকের মজুরিসহ প্রায় ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। গত মওসুমে তিনি একই পরিমাণ জমিতে আলু রোপণ করে প্রতি একরে প্রায় ২০০ মণ ফলন পেয়েছেন। গত বছর জমিতে মোজাইক ভাইরাস আক্রান্ত হলেও ফলন ভালো হয়েছে। এবার জমিতে ভাইরাস এমনভাবে আক্রান্ত হয়েছে, আমার মতো শত শত কৃষক আলুর ফলন নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
চন্দনাইশ উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হাসান ইমাম বলেন, এবার চন্দনাইশ উপজেলায় দোহাজারীর জাত ৫৬০ হেক্টর ও উচ্চফলনশীল জাতের ১০০ হেক্টর জমিতে আলুচাষ হয়েছে। তাদের হিসাব অনুযায়ী এই উপজেলায় ২৫ হেক্টর জমিতে মোজাইক ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।
লোহাগাড়া কৃষি অফিসার (সাতকানিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত) শামিম হোসাইন বলেন, সাতকানিয়া উপজেলায় পাঁচ হাজার কৃষক এবার ১২০০ হেক্টর জমিতে আলু রোপণ করেছেন। এর মধ্যে ৫০ হেক্টর রয়েছে উচ্চফলনশীল জাতের। উপজেলায় এবার ১০ ভাগ জমিতে মোজাইক ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। কৃষি অফিসারের হিসাব মতে এই উপজেলায় পাঁচ শতাধিক চাষি আলু ক্ষেতে মোজাইক ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ায় ফলন নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর চট্টগ্রাম জেলার উপপরিচালক আমিনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, কয়েক বছর ধরে সাতকানিয়া ও চন্দনাইশ উপজেলায় মোজাইক ভাইরাস দেখা দিয়েছে। বছরের পর বছর ধরে কৃষকরা দোহাজারী জাতের আলুচাষ করার ফলে আলুবীজ ও জমি রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ায় এখন মোজাইক ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। এ জন্য উপজেলার চাষিদের অন্তত ৩-৪ বছর এই জাতের আলুচাষ না করার জন্য পরার্মশ দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, এখন দেশে অনেক জাতের উচ্চফলনশীল দেশী আলু রয়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ওই জাতের আলুচাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। মোজাইক ভাইরাস দমনে কার্যত প্রতিরোধব্যবস্থা নেই। এ জন্য আক্রান্ত জাতের ওই দেশী আলু অন্তত ৩-৪ বছর চাষ বন্ধ রাখতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা