০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫
`


লাখ লাখ টাকা খরচ করে সৌদি গিয়ে ফিরলেন শূন্য হাতে

-

লাখ লাখ টাকা খরচ করে ভাগ্য বদলের আশায় সৌদি আরব গেলেও ভাগ্যের চাকা ঘোরার আগেই শূন্য হাতে দেশে ফিরেছেন আরো ১৩৭ বাংলাদেশি নাগরিক।

রোববার রাত ১১টা ২০ মিনিটে ও রাত দেড়টায় সৌদি এয়ারলাইন্সের এসভি ৮০৪ ও এসভি ৮০২ বিমানযোগে দেশে ফেরত আসেন তারা। এ নিয়ে গত পাঁচ দিনে ৪৫৪ জন বাংলাদেশি নাগরিক দেশে ফেরত এসেছেন।

ফেরত আসাদের মাঝে খাবার, পানিসহ নিরাপদে বাড়ি পৌঁছানোর জন্য জরুরি সহায়তা প্রদান করে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম। এছাড়া বিদেশ থেকে ফেরত আসাদের কাউন্সিলিং ও আর্থিকভাবে সহযোগীতার কর্মসূচিও গ্রহণ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

ফিরে আসাদের মধ্যে সুনামগঞ্জের নরুত্তমপুর গ্রামের বাসিন্দা আকমিনা আক্তার (৩০) বলেন, ৭ মাস আগে গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে সৌদি আরব গেলেও নিয়োগকর্তার শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে শূন্য হাতে দেশে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।

আকলিমা বলেন, ‘সৌদি যাওয়ার পর থেকে দৈনিক ১৮ থেকে ২০ ঘণ্টা কাজ করতে হত। কাজ করলেও বেতন না দিয়ে আমাকে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে বলে হুমকি দিত মালিক।’

ভয়াবহ নির্যাতনের কারণে বিমানবন্দরে পৌঁছনোর পর ঠিকমতো দাঁড়াতেও পারছিলেন না গৃহকর্মী হিসেবে সৌদি যাওয়া হবিগঞ্জের হাসিনা (২৭)। আট মাস আগে কাজ নিয়ে সৌদি আরব গিয়েছিলেন বলে জানান তিনি।

ফেরত আসা টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার উপজেলার সাদ্দাম হোসেন জানান, এক বছর আগে এসি টেকনিশিয়ানের কাজ নিয়ে চার লাখ দশ হাজার টাকা খরচ করে গিয়েছিলেন সৌদি আরবে। সেখানে চার মাস কাজ করলেও সঠিক বেতন পাননি তিনি। এরমধ্যেই আকামা থাকার পরও কাজ থেকে ফেরার পথে পুলিশ আটক করে তাকে দেশে ফেরত পাঠায়।

একই পরিস্থিতির শিকার হয়ে ফিরেছেন সুমানগঞ্জের আবুল কালাম, চট্টগ্রামের সগির হোসেন, সিরাজুল কবির, সিলেটের ফুরকান, মো. শাহ আলম, রফিক, নোয়াখালীর শামসুদ্দিনসহ অন্যরা।

দেশে ফেরা অনেক কর্মী অভিযোগ করেন, আকামা তৈরির জন্য কফিলকে (নিয়োগকর্তা) টাকা প্রদান করা হলেও তারা আকামা করে দেননি। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পর কফিলের সাথে যোগাযোগ করলেও তারা কর্মীর দায় দায়িত্ব না নিয়ে ভিসা বাতিলের কথা বলে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়ার কথা বলছে প্রশাসনকে।

ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান জানান, ২০১৯ সালে সৌদি আরব থেকে ২৪ হাজার ২৮১ জন বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। আর নতুন বছরের শুরুর চার দিনে ফিরলেন ৪৫৪ জন। এভাবে ব্যর্থ হয়ে যারা ফিরছেন তাদের পাশে সবার দাঁড়ানো উচিত। আর কাউকে যেন প্রতারিত না হতে হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে রাষ্ট্র ও দূতাবাসকে। এক্ষেত্রে রিক্রটিং এজেন্সিকেই সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব নিতে হবে।

আর কাউকে যেন শূন্য হাতে ফিরতে না হয় সেজন্য ব্যবস্থা নেয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সরকারের নেয়া সাম্প্রতিক ১২ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়িত হলে নারী কর্মীদের ওপর নিপীড়ন কমে আসবে।’
সূত্র : ইউএনবি


আরো সংবাদ



premium cement

সকল