২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ব্রেক্সিট ইস্যুতে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সঙ্ঘাতের আশঙ্কা

- সংগৃহীত

ব্রেক্সিট ইস্যুতে ব্রিটেনের আইনপ্রণেতাদের মধ্যে মতবিরোধ আরো বেড়েছে। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আশঙ্কা করা হচ্ছে সঙ্ঘাতের। চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এড়াতে ব্রিটেনের পার্লামেন্টে বিরোধীদের প্রস্তাব পাস হলে অক্টোবর মাসেই আগাম নির্বাচন ডাকতে পারেন প্রধানমন্ত্রী জনসন। তিনি ইইউর সাথে বোঝাপড়ায় অগ্রগতির দাবি করেছেন।

গতকাল মঙ্গলবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টের অধিবেশন শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এক বিতর্কিত পদক্ষেপের মাধ্যমে সেই অধিবেশনের সময়কাল সংক্ষিপ্ত করে আনা সত্ত্বেও বিরোধীরা চুক্তিহীন ব্রেক্সিট ঠেকাতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে চান। ক্ষমতাসীন টোরি দলের মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ দানা বাঁধছে। হাতেগোনা কয়েকজন পার্লামেন্ট মেম্বার বিরোধীদের উদ্যোগে সমর্থন দিলেও ক্ষমতার ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এমন প্রেক্ষাপটে দুই শিবিরই সংগ্রামের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী জনসন সোমবার তড়িঘড়ি করে ডাকা মন্ত্রিসভার এক বৈঠকের পর ব্রেক্সিটকে ঘিরে একাধিক মন্তব্য করেছেন। তার দাবি, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে বোঝাপড়ার সম্ভাবনা বেড়ে চলেছে। তবে সেই প্রচেষ্টা বিফল হলেও তিনি কোনো অবস্থায় ৩১ অক্টোবরের নির্ধারিত সময়সীমা বাড়াতে প্রস্তুত নন। তার মতে, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রয়োজনে চুক্তি ছাড়াই ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন-ইইউ ত্যাগ করবে।

নিজের দলের মধ্যে বিদ্রোহের আশঙ্কার মুখে এমপিদের প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়ে আগাম নির্বাচনের ইঙ্গিত দিয়েছেন জনসন। টোরি দলের কয়েকজন নেতা জানিয়ে দিয়েছেন, পার্লামেন্টে যারা সরকারের বিরুদ্ধে ভোট দেবেন, তারা আর দলের মনোনয়ন পাবেন না। এমনকি তাদের দল থেকে বহিষ্কারও করা হতে পারে। সংবাদ সংস্থা ডিপিএ সরকারি সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে যে, পার্লামেন্টে সরকারের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাস হলে জনসন অক্টোবর মাসেই নির্বাচন ডাকতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ১৪ অক্টোবর নির্বাচনের তারিখ স্থির হতে পারে। তবে এই সিদ্ধান্তের জন্যও সংসদে কমপক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থনের প্রয়োজন হবে।

পার্লামেন্টে বিরোধী পক্ষ চলতি সপ্তাহেই সম্মিলিতভাবে এক প্রস্তাব অনুমোদনের উদ্যোগ নিচ্ছে। তার আওতায় ১৯ অক্টোবরের মধ্যে ইইউর সাথে চুক্তি নিয়ে ঐকমত্য সম্ভব না হলে ব্রেক্সিটের সময়সীমা আরো তিন মাস পেছানো হবে।

উল্লেখ্য ১৭ ও ১৮ অক্টোবর ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে ব্রেক্সিট নিয়ে বোঝাপড়ার বিষয়ে ফয়সালা হয়ে যাবে। আগামী বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় কাজে লাগিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে বোঝাপড়া নিশ্চিত করতে হবে। সেই লক্ষ্যে পার্লামেন্টে প্রাথমিক ভোটে বিরোধীদের জয় হলে প্রধানমন্ত্রী আগাম নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। কারণ এই ভোটাভুটির পরেই বিরোধী লেবার দল সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনবে বলে ধরে নেয়া হচ্ছে। মাত্র একটি আসনের ব্যবধানে সরকারি জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় সরকারের পরাজয়ের আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না।

বিভিন্ন জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী জনসনের দৃঢ় অবস্থান অনেক ভোটারের মনে ধরছে। কিন্তু ব্রেক্সিট কার্যকর হওয়ার আগে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে শেষ পর্যন্ত কোন শিবির সমর্থন পাবে সে বিষয়ে ধোঁয়াশা রয়ে যাচ্ছে। কোনো পক্ষই যথেষ্ট সমর্থন না পেলে নতুন করে রাজনৈতিক অচলাবস্থার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না।


আরো সংবাদ



premium cement