দিরাই-মদনপুর সড়কের মরা সুরমা নদীর উপরের কাঠইড় বেইলী ব্রীজ এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এই ব্রীজটির কয়েকটি স্থানে ষ্টীলের বড়-বড় অংশ খসে পড়ায় প্রতিনিয়ত বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করার সময় দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে। এই সড়কে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলছেন যাত্রী সাধারণ। গত সোমবার সকাল ৮ টায় কয়েকটি যাত্রীবাহী বাস আটকা পড়লে শত শত যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে ।
গত এক বছরে এ ব্রীজ দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে একটি মালবাহী ট্রাকও ব্রীজ ভেঙ্গে মাঝামাঝিতে আটকে যায়। এ ছাড়া এই বেইলী ব্রীজ দিয়ে ভারী কোন যানবাহন চলাচল করতে পারছে না বলে জানান, দিরাই, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, জামালগঞ্জসহ বিভিন্ন হাট বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
এলাকাবাসী তাদের প্রয়োজনীয় ভারি মালপত্র নিয়ে যাতাযাতে সমস্যা হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ এ ব্রীীজটি দ্রুত সংস্কার করা না করা হলে যে কোন সময় ভেঙ্গে পরে এ সড়কের যান চলাচল বন্ধসহ বড় ধরণের দুর্ঘটনা হতে পারে। এলাকাবাসী ব্রীজটি দ্রুত সংস্কার বা নতুন ব্রীজ নির্মাণের জোর দাবী জানিয়েছেন।
এলাকাবাসী জানায়, দিরাই-মদনপুর সড়ক দিয়ে সুনামগঞ্জ জেলার হাওর পাড়ের অধিকাংশ মানুষজন জেলা শহর সুনামগঞ্জ, বিভাগীয় শহর সিলেট ও বাংলাদেশের প্রাণকেন্দ্র ঢাকা শহরে প্রতিনিয়ত যাতাযাত করছেন। কিন্তু এই বেহেলী ব্রীজের বেহাল দশা দেখার যেন কেউ নেই।
এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দিরাই- মদনপুর সড়কে সুরমা নদীর উপর নির্মিত হয়েছে এই কাঠইড় বেইলী ব্রীজ। বহু দিন যাবত এ ব্রীজটি নির্মাণের পর থেকে আর কোন সংস্কার করা হয়নি। এই ব্রীজ দিয়ে প্রতিদিন হাজার-হাজার লোক যাতায়াত করে থাকেন।
ব্রীজটি সংস্কার বা নতুন ব্রীজ নির্মাণ করা না হওয়ায় প্রতিদিনই কোন না কোন দূর্ঘটনায় পতিত হতে হয় জনসাধারণকে। ব্রীজটি জনসাধারণের জন্য খুব্ই গুরুত্বপূর্ণ। এ ব্রীজের স্থায়ীত্ব হারিয়ে ফেলার কারনে জেলার অধিকাংশ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের চরম বিপাকে পরতে হচ্ছে।
এদিকে ঝুঁকিপূর্ণ ব্রীজের পশ্চিম পাড়ে রয়েছে, সিলেট সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক ও দিরাই রাস্তার পয়েন্ট, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানা এবং উপজেলা পরিষদ। পূর্ব পাড়ে অনেক ছোট বড় হাট বাজার, বিভিন্ন স্কুল কলেজ, মাদরাসার শিক্ষার্থীরাও চলছেন ঝুঁকি নিয়ে।
জেলার নোয়াখালী বাজার, পাথারিয়া, দিরাই, শাল্লা ও জামালগঞ্জের অনেক ব্যবসায়ীরা জানান, এ ব্রীজটি পুরানো হয়ে যাওয়ার কারনে আমরা ট্রাকযোগে আমাদের বিক্রির পন্যসামগ্রী দোকানে আনতে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। ব্রীজটি ঝুকিপূর্ণ থাকায় সড়ক পথে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালামাল না এনে নৌকা যোগে আমরা মালামাল নিতে হচ্ছে। এতে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়। মাস শেষে মাল বিক্রি করে কোন লাভ পাইনি। লসের বোঝা মাথায় নিয়ে আমাদের ঘূরতে হয়।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, সোমবার সকালে এই ব্রীজটির মাঝে কিছুটা লোহার পাঠাতন ফাটল ধরে। আমরা খবর পেয়ে ইঞ্জিনিয়ার পাঠিয়ে দিয়েছি দ্রুত গাড়ি চলা চলের কোন রকম ব্যবস্থা করে দিয়েছি। ঝুঁকিপূর্ণ ব্রীজটি কিছু দিনের মধ্যেই সংস্কার করা হবে।