মানি লন্ডারিং ও দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত ব্রিটেনে অবস্থানরত পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পাসপোর্ট বাতিল করছে ইসলামাবাদ। আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি দেশটির রাজনৈতিক দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএলএম-এন) এই প্রধানের পাসপোর্ট বাতিল করা হবে বলে বুধবার জানিয়েছেন পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ আহমেদ।
তিনি বলেছেন, অর্থপাচারকারী হিসেবে আদালতে বিরোধীদের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। দেশের প্রতি সৎ না থাকার কারণে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নেতা হওয়ার পরও তারা ইকামা (কাজের অনুমতি) নিজের জন্য অনুমোদন করেছিলেন।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ বলেন, কেন প্রধানমন্ত্রীকে ইকামা নিতে হবে? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আমি যদি ইকামা গ্রহণ করি, তাহলে এর অর্থ দাঁড়ায় এখানে সন্দেহজনক কিছু আছে এবং জন্মভূমির প্রতি আমার বিশ্বাস নেই।
তিনি বলেন, দুর্নীতি এবং অর্থপাচারের মাধ্যমে নিজেদের সম্পদের পাহাড় গড়ার পর চোরেরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলেন। আদালতে এটা প্রমাণিত হলেও তারা হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছেন।
এর আগে, মঙ্গলবার দেশটির সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পিএমএল-এনের জ্যেষ্ঠ নেতা খাজা আসিফকে গ্রেফতার করে পুলিশ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসিফের পর কে গ্রেফতার হতে যাচ্ছেন— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ রশিদ বলেন, এটা এখনও পরিষ্কার নয়। আমরা আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি নওয়াজ শরিফের পাসপোর্ট বাতিল করবো। তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত আর কোনো তথ্য দেননি পাক এই মন্ত্রী।
চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি পাওয়ার পর গত বছরের নভেম্বরে লন্ডনে পাড়ি জমান সাবেক পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। তখন থেকে সেখানেই অবস্থান করছেন নওয়াজ শরিফ।
চলতি মাসের শুরুর দিকে ইসলামাবাদের হাইকোর্ট পিএমএল-এনের এই নেতাকে অ্যাভেনফিল্ড ও আল-আজিজিয়া দুর্নীতি মামলায় পলাতক আসামি হিসেবে ঘোষণা দেন। একই দিন পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের উপদেষ্টা মীর্জা শাহজাদ আকবর বলেন, দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে দেশে ফেরত পাঠাতে যুক্তরাজ্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, নওয়াজের চিকিৎসার জন্য নেয়া ভিসা বাতিল করার অনুরোধ জানিয়ে ব্রিটেনের কাছে একটি চিঠি লেখা হয়েছে।
গত মাসে ব্রিটেনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র পাকিস্তানি পত্রিকা ডনকে জানায়, পাকিস্তানের শীর্ষ এক কর্মকর্তা ব্রিটেনের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তার সাথে স্বাক্ষাৎ করে নওয়াজ শরিফকে দেশে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছেন।
তবে নওয়াজকে দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি এখন ব্রিটেন এবং পাকিস্তানের হালকা কোনো ইস্যু নয়। পলাতক এই সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ফেরত পাঠাতে ব্যর্থ হলে ব্রিটেনের সাথে পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে পারে।
এর আগে, গত অক্টোবরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান প্রয়োজনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে নওয়াজ শরিফকে দেশে ফেরত পাঠানোর ইস্যু নিয়ে কথা বলবেন বলে জানিয়েছিলেন।
সূত্র : ডন ও এক্সপ্রেস ট্রিবিউন
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা