০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`


কাশ্মির : লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ওমর আবদুল্লাহর

দ্রাস সেক্টরে ওমর আব্দুল্লাহ - ছবি : সংগৃহীত

ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও ন্যাশনাল কনফারেন্সের ভাইস-প্রেসিডেন্ট ওমর আবদুল্লাহ বলেছেন, আমরা ৩৭০ ও ৩৫-এ ধারা পুনর্বহাল করার জন্য রাজনৈতিক ও আইনিভাবে লড়াই চালিয়ে যাব।

শুক্রবার কারগিলে তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে ওই মন্তব্য করেন।

ওমর আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণ হবে। আমরা রাজ্যের পরিবেশ নষ্ট করতে চাই না।’

শুক্রবার বিকেলে ওমর আব্দুল্লাহর নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদল জম্মু-কাশ্মিরের জন্য পরবর্তী উপায় বের করার জন্য সেখানকার লোকদের সাথে পরামর্শের উদ্দেশে কারগিল সফর করেন।

জম্মু-কাশ্মিরের জনগণের অধিকারের জন্য শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার দৃঢ়সংকল্প প্রকাশ করে ওমর আব্দুল্লাহ বলেন, ‘পিপলস অ্যালায়েন্স ফর গুপকার ডিক্লারেশন’ (পিএজিডি) সকলের সাথে কথা বলতে প্রস্তুত যাতে তাদের দাবির বিষয়ে ব্যাপকভাবে ঐক্যমত্যে পৌঁছানো যায়।

এরআগে, দ্রাস সেক্টরের জনগণকে সম্বোধন করে ওমর বলেন, ‘গত বছরের (৫ আগস্ট, ২০১৯) কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের (৩৭০ ধারা বাতিল) বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত থাকবে। কারণ এটি পূর্ববর্তী রাজ্যের জনগণের সাথে পরামর্শ না করেই তাকে ‘অবৈধভাবে’ চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল।”

জম্মু-কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা ৩৭০ ধারা ও ৩৫-এ ধারা বহাল করার জন্য ন্যাশনাল কনফারেন্স, পিডিপিসহ সাতদলীয় জোট ‘পিপলস অ্যালায়েন্স ফর গুপকার ডিক্লারেশন’ (পিএজিডি) গঠন করেছেন। এর সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন জম্মু-কাশ্মিরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও ন্যাশনাল কনফারেন্স প্রধান ডা: ফারুক আব্দুল্লাহ।

ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আব্দুল্লাহ এর আগে গত বৃহস্পতিবার জম্মু-কাশ্মিরের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সংশোধিত নয়া ভূমি আইনের সমালোচনা করে বলেন, ‘জম্মু-কাশ্মীরের নয়া ভূমি আইনের চেয়ে দেশের অন্যান্য রাজ্যে ভূমি আইন আরো কঠোর। ভারতের মানুষ হিমাচল প্রদেশ, লাক্ষাদ্বীপ, নাগাল্যান্ডের মতো রাজ্যেও জমি কিনতে পারে না। আমাদের কী দোষ তা জানি না, জম্মু-কাশ্মিরে জমি কেনার অনুমতি দেয়া হয়েছে। যদি আমরা এর বিরুদ্ধে কথা বলি তাহলে আমাদের দেশবিরোধী বলা হবে।’

এদিকে, নয়া ভূমি সংস্কার আইনের সমালোচনা করে ‘রিকনসিলেশন, রিটার্ন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন ফর মাইগ্র্যান্টেস’ সংগঠনের চেয়ারম্যান সতীশ মহলদার বলেন, গত ৩১ বছর ধরে অপেক্ষায় রয়েছি, কবে আমরা নিজেদের ভূমিতে ফিরে যাব। কিন্তু সরকার আমাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করেই কাশ্মিরের জমি বিক্রির জন্য ছেড়ে দিচ্ছে। আমাদের আশঙ্কা, এবার আমাদের মন্দির, ধর্মীয়স্থল, কাশ্মিরি পণ্ডিতদের প্রতিষ্ঠানগুলোর দখল নেবে জমি মাফিয়ারা। আমাদের দাবি, কাশ্মিরের নয়া জমি আইন নিষিদ্ধ করে আমাদের ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করতে হবে সরকারকে।’

তিনি আরো বলেন, ‘পাঁচ লাখ কাশ্মিরি পন্ডিত ঘরছাড়া হয়ে আছেন। আর কতদিন আমাদের এই নরকযন্ত্রণা ভোগ করতে হবে?

জম্মু-কাশ্মিরের ‘বিশেষ মর্যাদা’ বাতিলের আগে কেবল সংবিধানের ৩৫-এ অনুচ্ছেদে বর্ণিত ‘স্থায়ী বাসিন্দা’রাই জম্মু-কাশ্মিরে স্থাবর সম্পত্তি কিনতে পারতেন। কিন্তু এবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক এক বিজ্ঞপ্তিতে বেশ কয়েকটি আইন পরিবর্তন করে সব ভারতীয়কেই সেই অধিকার দেয়া হয়েছে। স্থাবর সম্পত্তি নিয়ে লেনদেনের ক্ষেত্রে ‘জম্মু-কাশ্মির উন্নয়ন’ আইনের ১৭ নম্বর ধারা প্রযোজ্য। ওই ধারায় ‘স্থায়ী বাসিন্দা’ শব্দটি বাদ দেয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সেখানকার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন ক্ষোভ প্রকাশ করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।

সূত্র : পার্সটুডে


আরো সংবাদ



premium cement