০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ভারতে ‘দুই সন্তান নীতি’ চান বিজেপির শতাধিক এমপি

বিজেপির বিতর্কিত এমপি সাক্ষী মহারাজ -

ভারতে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে যাতে 'দুই সন্তান নীতি' চালু করা হয়, সেই দাবি জানিয়ে দেশের সোয়া শ' এমপি রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন জানিয়েছেন।

এই আবেদনে যারা সই করেছেন তাদের বেশির ভাগই ক্ষমতাসীন দল বিজেপির, তবে আরও দু-তিনটি দলের এমপিরাও তাতে সামিল হয়েছেন।

এই দাবির পক্ষের ক্যাম্পেনাররা বলছেন, যেভাবে ভারতের জনসংখ্যা অচিরেই চীনকেও টপকে যেতে চলেছে - তাতে দুই সন্তানের পর শাস্তির বিধান রেখে আইন করা ছাড়া কোনও গতি নেই।

তবে বিরোধী দলগুলি আবার মনে করছে, যে বিজেপির অনেক নেতাই হিন্দুদের বেশি বেশি সন্তানের জন্ম দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করে থাকেন - সেই দলের এমপিদের মুখে অন্তত এধরনের দাবি মানায় না।

জনসংখ্যা সমাধান ফাউন্ডেশন নামে দিল্লির একটি এনজিও গত চার বছর ধরে গবেষণার পর দাবি করছে, চীন যেভাবে এক সময় কঠোরভাবে এক সন্তান নীতি প্রয়োগ করেছিল, ভারতেও অনেকটা সেই ধাঁচে দুই সন্তান নীতি চালু করলেই কেবল জনবিস্ফোরণ ঠেকানো সম্ভব।

তাদের প্রস্তাব নিয়ে তারা প্রায় শতিনেক এমপি-র কাছে গিয়েছিলেন, যার মধ্যে ১২৫জন তাতে সম্মতি দিয়েছেন এবং গত সপ্তাহে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের হাতে সেই পিটিশন তারা তুলেও দিয়েছেন।

ওই এনজিও-র চেয়ারপার্সন অনিল চৌধুরী বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, "যেভাবে ১৩৫ কোটি মানুষের দেশ ভারতে রিসোর্সের ওপর চাপ বাড়ছে - হাসপাতালে জায়গা নেই, কলেজে ভর্তির জায়গা নেই, রাস্তায় জায়গা নেই - তাতে বেশি সন্তান উৎপাদন করলে কড়া শাস্তি ছাড়া কোনও উপায় নেই।"

"আমরা প্রতি বছর দেশে একটা অস্ট্রেলিয়ার সমান জনসংখ্যা যোগ করছি। তাই আমরা মনে করছি দুই সন্তানের বেশি হলে বাবা-মার ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া হোক, প্রয়োজনে জেলেও পাঠানো হোক।"

ভারতে স্টেরিলাইজেশন অস্ত্রোপচারের ৮৬ শতাংশই করা হয় মেয়েদের ওপর, ওই ফাউন্ডেশনের জাতীয় আহ্বায়ক মমতা সেহগল মনে করেন এই আইন চালু হলে জন্মনিয়ন্ত্রণের দায় মেয়েদের দিকে ঠেলে দেওয়ার প্রবণতাও কমবে।

সেহগলের কথায়, "দেখুন, এই দায়িত্ব তো শুধু মেয়েদের হতে পারে না। বাবা-মা মিলেই সন্তানকে পৃথিবীতে আনেন, কাজেই দায় দুজনেরই সমান। এই জন্যই আমরা বলছি আইন চালু হলে সবাইকে তা মানতে হবে, আর আইনটাও হতে হবে কঠোর আইন।"

এই কড়া দাওয়াইতে যারা সম্মতি দিয়েছেন তার মধ্যে শতাধিক এমপি-ই বিজেপির, এছাড়া দক্ষিণপন্থী দল শিবসেনার জনা পনেরো ও তেলুগু দেশমের দু-চারজন এমপিও আছেন।

কিন্তু যে বিজেপির এমপি সাক্ষী মহারাজ ও আরও কোনও কোনও নেতা-নেত্রী এক সময় হিন্দুদের পাঁচ-দশটি করে সন্তান জন্ম দেওয়ার কথা বলেছেন, সেই দলই কেন এখন দুই সন্তান নীতিতে সমর্থন করছে?

সাতনার বিজেপি এমপি গণেশ সিং ওই পিটিশন নিয়ে নিজে রাষ্ট্রপতির কাছে গিয়েছিলেন, তিনি অবশ্য বিবিসির কাছে দাবি করছেন "ওইসব কথাবার্তা কারো ব্যক্তিগত বিশ্বাস হতে পারে, কিন্তু হিন্দুধর্ম কখনও এমন কথা বলে না।"

গণেশ সিং আরো বলছিলেন, "জনসংখ্যার বিস্ফোরণ দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা, একে ধর্ম-জাতপাতের দৃষ্টিতে দেখাই উচিত নয় - এবং এই আইন সবার জন্য প্রযোজ্য হওয়া দরকার।"

কংগ্রেস নেতা নওয়াব মালিক অবশ্য বলছেন, "বিজেপি যতক্ষণ না তাদের সাধ্বী নেত্রী বা সাক্ষী মহারাজের মতো নেতাদের বোঝাতে না-পারছে, ততক্ষণ এই সব আইন প্রণয়নের পিটিশন তাদের দ্বিচারিতা ছাড়া কিছুই নয়।"

দিনদশেক আগেই ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পার্লামেন্টে বিজেপিরই এক এমপি রাজকুমার সাইনির প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছে, দেশে এই মুহুর্তে দুই সন্তান নীতি চালু করার কোনও পরিকল্পনা তাদের নেই।

কিন্তু শতাধিক বিজেপি এমপি-র এই পিটিশন থেকেই স্পষ্ট, এই প্রস্তাবে দেশে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া হয় শাসক দল সম্ভবত সেটাই পরখ করতে চাইছে।


আরো সংবাদ



premium cement
দুদকের প্রথম নারী মহাপরিচালক শিরীন দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ : পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেকর্ড বিদ্যুৎ উৎপাদন, তারপরও লোডশেডিং বড় চমক ছাড়াই প্রস্তুত বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দল দোয়ারাবাজারে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ করে হত্যা, আটক ১ বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের বাধাহীন প্রবেশের দাবি সম্পাদক পরিষদ ও নোয়াবের পেকুয়া উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন বিএনপির ২ প্রার্থী নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন ১৮৫ দিন : শিক্ষামন্ত্রী মঙ্গলবার ২ হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং, দুর্ভোগে মানুষ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা আবাহনীর ২২তম শিরোপা

সকল