২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


সুশাসন

সংবিধানের দোহাই দিয়ে সংবিধানের অবমাননা

সংবিধানের দোহাই দিয়ে সংবিধানের অবমাননা - ফাইল ছবি

সংবিধানের মাধ্যমে রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থা পরিচালিত হয়। একটি রাষ্ট্রের আইন, শাসন ও বিচার বিভাগ কিভাবে গঠিত হবে, এদের গঠন ও ক্ষমতা কী হবে, জনগণ রাষ্ট্রপ্রদত্ত কী কী অধিকার ভোগ করবে, একটি সরকারের মেয়াদান্তে কার অধীনে ও কী পদ্ধতিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং জনগণ ও সরকারের মধ্যকার সম্পর্ক কেমন হবে, সংবিধানে এসব বিষয়ের সবিস্তারে উল্লেখ থাকে। একটি দেশ সংবিধান অনুযায়ী চললে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসন সমুন্নত থাকে। অপর দিকে সংবিধানের নির্দেশনার ব্যত্যয়ে রাষ্ট্র পরিচালিত হলে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসন ভূলুণ্ঠিত হয়।

স্বেচ্ছাচারিতা অর্থ সংবিধান ও আইনের তোয়াক্কা না করে নিজের ইচ্ছেমাফিক রাষ্ট্রক্ষমতার ব্যবহার। রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিরা সংবিধান ও আইনের অনুসরণে নৈতিকতা ও সততা দ্বারা উজ্জীবিত হয়ে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে ব্রতী হলে শুদ্ধাচারের উন্মেষ ঘটে।
আমাদের সংবিধান প্রণয়নকালীন সংসদীয় পদ্ধতির সরকারব্যবস্থার উল্লেখ থাকলেও প্রণয়ন পরবর্তী তিন বছর অতিক্রান্তের অব্যবহিত পর রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারব্যবস্থার প্রবর্তন করা হয়। অতঃপর ১৯৯১ সালের শেষার্ধে পুনঃসংসদীয় পদ্ধতির সরকারব্যবস্থায় প্রত্যাবর্তন করা হয় যা অদ্যাবধি বিদ্যমান আছে।

সংবিধান প্রণয়নকালীন জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানবিষয়ক বিধানে উল্লেখ ছিল মেয়াদ অবসানের কারণে সংসদ ভেঙে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভেঙে যাওয়ার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে এবং মেয়াদ অবসান ব্যতীত অন্য কোনো কারণে সংসদ ভেঙে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভেঙে যাওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে সংসদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচন পরবর্তী সংসদের প্রথম বৈঠকের তারিখ হতে পাঁচ বছর অতিবাহিত হলে সংসদ ভেঙে যায়। প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও ষষ্ঠ এ পাঁচটি সংসদ মেয়াদ অবসানের পূর্বেই ভেঙে যাওয়ায় সংসদ বহাল রেখে অথবা বহাল না রেখে ক্ষমতাসীন দলীয় সরকার অথবা দলীয় সরকারবহির্ভূত অপর কোনো ধরনের সরকারের অধীন জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এ আলোচনাটি মুখ্য হিসেবে দেখা দেয়নি। দলীয় সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত এ পাঁচটি নির্বাচনের প্রতিটিতেই ক্ষমতাসীনরা দুই-তৃতীয়াংশের অধিক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে নিজেদের জয় হাসিল করে। পঞ্চম সংসদ নির্বাচনটি জন-অভিপ্রায়ে সংবিধানের নির্দেশনার ব্যত্যয়ে কর্মরত প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন অস্থায়ী সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এ নির্বাচনটি তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ছিল এবং দেশের বড় দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কোনোটিই সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ না করায় জামায়াতে ইসলামীর সমর্থন নিয়ে বিএনপি সরকার গঠন করে।

পঞ্চম সংসদ বহাল থাকাকালীন অবস্থায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগ ও জামায়াতে ইসলামী দেশব্যাপী ব্যাপক গণ-আন্দোলন গড়ে তোলে। গণ-আন্দোলনটিকে তীব্রতর করার প্রয়াসে এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগ ও জামায়াতে ইসলামী সংসদ হতে পদত্যাগ করলে অগত্যা ক্ষমতাসীন বিএনপিকে সংবিধান সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় সংসদ ভেঙে দিয়ে আগাম নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হয়। ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচন আওয়ামী লীগ ও জামায়াতে ইসলামীর বর্জনে ব্যাপক গোলযোগ ও সহিংসতার মুখে একতরফাভাবে অনুষ্ঠিত হয়।

এ নির্বাচনটিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকায় দুই-তৃতীয়াংশের অধিক আসনে বিএনপির প্রার্থীরা বিজয় লাভ করে। নির্বাচন-পরবর্তী বিএনপি নেতৃত্ব প্রজ্ঞার পরিচয় দেয় এবং দেশের স্থিতিশীলতা, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির স্বার্থে স্বীয় উদ্যোগে বিরোধী দলের দাবিকে জন-অভিপ্রায় বিবেচনায় নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিধান সংবিধানে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সন্নিবেশনকরত নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে এ ব্যবস্থাটিকে স্থায়ী রূপ দেন।
পরবর্তীতে সপ্তম ও অষ্টম সংসদ নির্বাচন সাংবিধানিকভাবে গঠিত নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত হয়। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত এ দুটি সংসদ নির্বাচন তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ছিল। এর প্রথমটিতে জাতীয় পার্টি ও জাসদ (রব)-এর সমর্থন নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। দ্বিতীয়টিতে বিএনপি ও এর জোটভুক্ত দল দুই-তৃতীয়াংশের অধিক সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে।

নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন-পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান বিষয়ে আগেকার বিধান রদ করে নতুন বিধানের প্রবর্তন করা হয়। প্রবর্তিত বিধানে বলা হয় মেয়াদ অবসানের কারণে অথবা মেয়াদ অবসান ব্যতীত অন্য কোনো কারণে সংসদ ভেঙে যাওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অষ্টম সংসদের মেয়াদ অবসানের পর নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান নিয়োগবিষয়ক সব বিকল্প নিঃশেষিত না করে বিদ্যমান রাষ্ট্রপতিকে প্রধান করে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হয়। এ সরকারটি সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপে পদত্যাগে বাধ্য হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত গভর্নরের নেতৃত্বাধীন সেনাসমর্থিত অসাংবিধানিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আগমন ঘটে। অসাংবিধানিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নবম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও এর জোটভুক্ত দলের ভূমিধস বিজয় ঘটে এবং আওয়ামী লীগ এককভাবে দুই-তৃতীয়াংশের অধিক আসনে বিজয় হাসিলে সমর্থ হয়।
অসাংবিধানিক সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারটি এ যাবৎকাল পর্যন্ত সংসদ কর্তৃক বৈধতা প্রাপ্ত না হলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল বিষয়ক রিট মামলাটির আপিলের রায়ে বিচার্য বিষয় বহির্ভূত অপ্রাসঙ্গিক আলোচনার অবতারণায় সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় কৃত কর্মকে বৈধতা দেয়ার প্রয়াস নেয়া হয়। এ ধরনের বৈধতা প্রদান কতটুকু আইনানুগ এর সমাধান ভবিষ্যতের অনুকূল পরিবেশে নির্ধারিত হবে এমটিই প্রতিভাত।

অসাংবিধানিক ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত নবম সংসদ নির্বাচন পরবর্তী গঠিত সংসদে আওয়ামী লীগ জনমত ও জন-অভিপ্রায়কে অবজ্ঞা ও উপেক্ষাপূর্বক সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিষয়ক ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের বিতর্কিত রায়কে উপলক্ষ বিবেচনায় সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী প্রবর্তনের মাধ্যমে একতরফা সিদ্ধান্তে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার অবসান ঘটায়।

সংসদ গঠনবিষয়ক সংবিধানের বিধানাবলিতে উল্লেখ রয়েছে- একক আঞ্চলিক নির্বাচনী এলাকা থেকে প্রত্যক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত ৩০০ এবং তাদের আনুপাাতিক প্রতিনিধিত্বের ভোটে নির্বাচিত ৫০ জন মহিলা সদস্য, সর্বমোট ৩৫০ সদস্য সমন্বয়ে সংসদ গঠিত হবে। দশম সংসদ নির্বাচন-পরবর্তী প্রত্যক্ষ করা যায় সংসদের উন্মুক্ত ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৪টি আসনের প্রার্থী বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে। এরূপ নির্বাচিত সংসদ সদস্য সমন্বয়ে গঠিত সংসদ সাংবিধানিক না কি অসাংবিধানিক সে প্রশ্নের উত্তর একমাত্র ভবিষ্যতের প্রভাবমুক্ত বিচারব্যবস্থার নিকটই প্রত্যাশিত।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনের ভোট আনুষ্ঠানিক ভোটগ্রহণের তারিখের আগেকার রাত পুলিশ ও প্রশাসনের সহায়তায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সম্পন্ন করায় সে সংসদ নির্বাচন বিষয়ে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যে বিতর্ক রয়েছে তার কোনো সদুত্তর ক্ষমতাসীনদের কাছ থেকে অদ্যাবধি পাওয়া যায়নি। এরূপ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সংসদ সাংবিধানিকভাবে বৈধ কিনা সে বিতর্ক অসাড়।

গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনটি দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির অংশগ্রহণ ব্যতিরেকে অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনটিতে যেসব আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের একক প্রার্থী ছিল সেসব আসনের নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দেখানোর প্রয়াসে একই দলের অপরাপর নেতাকে স্বতন্ত্র বা ডামি প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ করানো হয়। অপর দিকে সমঝোতার ভিত্তিতে জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের শরিক দলগুলোকে যে কয়টি আসন ছেড়ে দেয়া হয় সে আসনগুলোতেও দেখা গেল স্বতন্ত্র বা ডামি নামে আওয়ামী লীগের নেতারা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ। নির্বাচনটির ফলাফল ঘোষণা পরবর্তী যে চিত্রটি ফুটে উঠেছে তাতে প্রতীয়মান হয় পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিভিন্ন আসনের প্রার্থী যারা একই নেতৃত্বের প্রতি অনুগত তারই সিদ্ধান্তে তাদের জয়-পরাজয় নিশ্চিত করা হয়েছে। এ নির্বাচনটিতে সরেজমিন প্রত্যক্ষ করেছেন এমন ব্যক্তিসবার ভাষ্য মতে, ভোটার উপস্থিতির হার খুবই হতাশাব্যঞ্জক।

সংবিধানসহ দেশের অপরাপর আইন জনঅভিপ্রায়ে প্রণীত হয় এবং জনঅভিপ্রায়েই সংবিধান ও আইনসমূহের সংযোজন, বিয়োজন ও প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে সংশোধন করা হয়। গতিশীল সমাজে স্থবির আইন সময় ও যুগের চাহিদা মেটাতে পারে না। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে অনুচ্ছেদ ৭খ সন্নিবেশন করে যেভাবে সংবিধানের প্রস্তাবনা, প্রথম ভাগের সব অনুচ্ছেদ, দ্বিতীয় ভাগের সব অনুচ্ছেদ, নবম-ক ভাগে বর্ণিত অনুচ্ছেদসমূহের বিধানাবলিসাপেক্ষে তৃতীয় ভাগের সব অনুচ্ছেদ এবং একাদশ ভাগের ১৫০ অনুচ্ছেদসহ সংবিধানের অন্যান্য মৌলিক কাঠামো সংক্রান্ত অনুচ্ছেদসমূহের বিধানাবলি সংযোজন, পরিবর্তন, প্রতিস্থাপন, রহিতকরণ কিংবা অন্য কোনো পন্থায় সংশোধনের অযোগ্য করা হয়েছে তা কোনোভাবেই গণতান্ত্রিক চিন্তা-চেতনা ও জনঅভিপ্রায়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। নবম, দশম ও একাদশ সংসদ যে সংবিধান ও আইনের বিধানাবলির অবজ্ঞায় ও উপেক্ষায় গঠিত হয়েছে তাকে অস্বীকার করা হলে সংবিধানের স্বাতন্ত্র্য ও স্বকীয়তা বিপন্ন হয়। দ্বাদশ সংসদটি গঠিত হলে পূর্বের ধারাবাহিকতার পুনরাবৃত্তি ঘটবে এমনটিই প্রতিভাত।

বাংলাদেশে বর্তমানে যে রাজনৈতিক বিরোধ তা হলো সংসদ ভেঙে যাওয়া পরবর্তী কোন্ ধরনের সরকারের অধীন জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশে ক্ষমতীনদের অধীন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা কখনো পরাভূত হয়নি। জনসমর্থন বা জনমত যা-ই হোক না কেন ভবিষ্যতের অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন ক্ষমতাসীনদের অধীনে হলে তাদের বিজয় যে সুনিশ্চিত তা দেশবাসী আগাম অনুধাবনে সক্ষম।

জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচন-পরবর্তী সরকার পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রিবর্গ শপথের অধীন। শপথ গ্রহণ করাকালীন তাদেরকে সুস্পষ্টরূপে অপরাপর বিষয়ের পাশাপাশি ব্যক্ত করতে হয় যে তারা সংবিধানের রক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তা বিধান করবেন। নবম, দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রেক্ষাপট ও সামগ্রিক কার্যক্রম বিবেচনায় নেয়া হলে উপরোক্ত শপথবাক্য অনুসৃত হয়েছে কি হয় নাই তা অতিসহজেই অনুমেয়। আর অনুসৃত না হয়ে থাকলে এর পরিণতি কী হবে তা দেখার জন্য দেশবাসী আগামীর পথপানের অপেক্ষায়। জনঅভিপ্রায়ে সংবিধানে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার সন্নিবেশন ঘটলেও জনঅভিপ্রায়কে অবদমিত করে স্বেচ্ছাচারিতার বহিঃপ্রকাশে এর বিলোপসাধন করা হয়েছে। আর তাই সংবিধানের দোহাই দিয়ে এর অবমাননায় নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ন্যায় অনুরূপ নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি বায়ুকোণের কালো মেঘের ধ্বংসলীলার আড়ালে নবকেতন উড্ডয়নের পদধ্বনি।

লেখক : সাবেক জজ, সংবিধান, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষক
E-mail: iktederahmed@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement