২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


সুশাসন

সংবিধান মানা-না মানা ও কিছু কথা

সংবিধান মানা-না মানা ও কিছু কথা - প্রতীকী ছবি

নাগরিক সমন্বয়ে রাষ্ট্র গঠিত। রাষ্ট্র প্রত্যেক নাগরিককে যেমন কিছু অধিকার দেয়, আবার এর বিনিময়ে প্রত্যেক নাগরিকের রাষ্ট্রের প্রতি দায়িত্ব রয়েছে। অধিকার ও দায়িত্ব পরস্পর নির্ভরশীল ও একটি অপরটির পরিপূরক। একজন নাগরিকের দায়িত্বের মধ্যে অন্যতম হলো- রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ। এর অর্থ- প্রতিটি নাগরিককে রাষ্ট্রের সংবিধান ও আইন মেনে চলতে হবে। প্রত্যেক নাগরিককে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, অখণ্ডতা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুণœ রাখতে সদাসর্বদা সচেষ্ট থাকতে হবে।

রাষ্ট্র প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিককে ভোটাধিকার দিয়ে থাকে। নাগরিকের দায়িত্ব হলো- সততা ও সুবিবেচনার সাথে ভোটাধিকারের প্রয়োগ। একজন নাগরিক সততা ও সুবিবেচনার সাথে ভোটাধিকার প্রয়োগ করলে সৎ, যোগ্য, আন্তরিক, ত্যাগী ও দেশপ্রেমিক ব্যক্তি জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হবেন। দেশের প্রত্যেক সচেতন নাগরিকের দায়িত্ব হলো অসৎ, অযোগ্য ও দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিকে ভোটদানে বিরত থাকা। যেকোনো রাষ্ট্রকে সঠিকভাবে পরিচালনায় সময়োপযোগী ও যুগোপযোগী নেতৃত্বের প্রয়োজন। যেকোনো দেশের শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে চারটি গুণাবলি যথা- সততা, আন্তরিকতা, ত্যাগ ও দেশপ্রেমের সমন্বয় ঘটলে তিনি দেশকে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সম্মানজনক পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারেন। এ বিষয়ে সমকালীন বিশ্বে যুতসই উদাহরণ হলো সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া।

রাষ্ট্র যাবতীয় ব্যয়ভার নাগরিক প্রদত্ত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর থেকে মিটিয়ে থাকে। নাগরিকদের দায়িত্ব হলো- সঠিক সময়ে সঠিক পরিমাণ কর দিয়ে রাষ্ট্রকে সুন্দরভাবে পথচলায় সহযোগিতা করা।

রাষ্ট্র আইন, বিচার ও নির্বাহী বিভাগ- এ তিন অঙ্গের সমন্বয়ে গঠিত। এই তিন অঙ্গ কিভাবে পরিচালিত হবে তা রাষ্ট্রের সংবিধান ও আইনে উল্লেখ থাকে। রাষ্ট্রের আইন বিভাগের কাজ রাষ্ট্রের জন্য আইন প্রণয়ন ও বিদ্যমান আইনের সংস্কারসাধন। রাষ্ট্রের আইন বিভাগ আইনসভার মাধ্যমে আইন প্রণয়ন ও আইন সংস্কারের কাজ সম্পন্ন করে থাকে। আমাদের আইনসভার নাম জাতীয় সংসদ। জাতীয় সংসদের সদস্যরা একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়ে থাকেন। স্পিকার বা ডেপুটি স্পিকার জাতীয় সংসদের সভায় সভাপতিত্ব করেন। তাদের উভয়কে দায়িত্ব পালনের শুরুতে সংবিধান নির্দেশিত শপথ পাঠ করতে হয়।

আমাদের রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার সদস্যরা নির্বাহী বিভাগের অন্তর্ভুক্ত। রাষ্ট্রপতি সংসদ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত, অন্যদিকে সংসদ সদস্যরা প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক প্রদত্ত প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার সদস্যরা সাংবিধানিক পদধারী এবং তারা সংবিধান নির্দেশিত শপথ পাঠ ছাড়া পদে আসীন হন না।

আমাদের বিচার বিভাগ উচ্চ আদালত ও অধস্তন আদালত সমন্বয়ে গঠিত। উচ্চ আদালতের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগ নামে দু’টি পৃথক বিভাগ রয়েছে যা সুপ্রিম কোর্ট নামে অভিহিত। প্রধান বিচারপতিসহ সুপ্রিম কোর্টের বিচারকরাও সাংবিধানিক পদধারী এবং নিয়োগ-পরবর্তী সংবিধান অনুযায়ী শপথ পাঠ ছাড়া তারাও রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার সদস্যদের মতো পদে আসীন হন না। অধস্তন আদালতের বিচারকদের নিয়োগ, পদোন্নতি ও শৃঙ্খলা রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত এবং তিনি এসব কাজ সুপ্রিম কোর্টের সাথে পরামর্শক্রমে সমাধা করে থাকেন।

আমাদের দেশে নির্বাচন কমিশন নামে একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সংস্থাটি একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অপরাপর কমিশনার সমন্বয়ে গঠিত। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অপর কমিশনাররা সাংবিধানিক পদধারী হিসেবে শপথ পাঠ ছাড়া পদে আসীন হন না। নির্বাচন কমিশনের ওপর সাংবিধানিকভাবে যেসব দায়িত্ব ন্যস্ত তা হলো- রাষ্ট্রপতি ও সংসদ সদস্যদের নির্বাচন অনুষ্ঠান, সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ এবং উভয় নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা প্রস্তুতকরণ। এর বাইরে সংবিধান বা অন্য কোনো আইনের অধীন নির্বাচন কমিশনকে অপর কোনো দায়িত্ব দেয়া হলে সাংবিধানিক দায়িত্বের অংশ হিসেবে সে সব দায়িত্বও পালন করে থাকে। আমাদের দেশে স্থানীয় শাসনব্যবস্থার অধীন পরিচালিত প্রতিষ্ঠান, যেমন- জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত এবং নির্বাচন কমিশন এসব দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী আইনের অধীন পরিচালনা করে থাকে।
রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিসভার সদস্য, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, প্রধান বিচারপতিসহ সুপ্রিম কোর্টের বিচারকরা এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অপর নির্বাচন কমিশনারদের শপথ গ্রহণ করাকালীন অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি স্পষ্টভাবে ব্যক্ত করতে হয়- তারা সংবিধানের রক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তা বিধান করবেন।

আমাদের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭(২)-এ উল্লেখ রয়েছে, সংবিধান রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন এবং সংবিধানের সাথে অন্য কোনো আইন অসামঞ্জস্য হলে সে আইনের যতখানি অসামঞ্জস্যপূর্ণ ততখানি বাতিল হবে।

আমাদের সংবিধানের প্রস্তাবনাকে বলা হয় সংবিধানের প্রাণ। সংবিধানের প্রস্তাবনায় সুস্পষ্টরূপে উল্লেখ রয়েছে- রাষ্ট্রের অন্যতম মূল লক্ষ্য হবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এমন এক শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রিক সমাজের প্রতিষ্ঠা, যেখানে সব নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত হবে। প্রস্তাবনার এই বক্তব্য অবলোকনে প্রতীয়মান হয়- রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব যাদের ওপর ন্যস্ত হবে তারা গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হবেন। তাদের দায়িত্ব দুর্নীতিমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে রাষ্ট্রের সব নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিতকরণ।
গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১-এ ব্যক্ত করা হয়েছে- রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় নাগরিকদের মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা থাকবে, মানবসত্তার মর্যাদা ও মূল্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নিশ্চিত হবে। প্রশাসনের সব পর্যায়ে নির্বাচিত প্রতিনিধির মাধ্যমে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে। সংবিধানের এ অনুচ্ছেদের সাথে অনুচ্ছেদ ৫৯(১) ও ৬৫(২)(৩) ও (৩ক) বিশেষভাবে সম্পৃক্ত। অনুচ্ছেদ ৫৯(১) স্থানীয় শাসন-বিষয়ক। এ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- আইন অনুযায়ী নির্বাচিত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর প্রজাতন্ত্রের প্রত্যেক প্রশাসনিক একাংশের স্থানীয় শাসনের ভার ন্যস্ত থাকবে। অনুচ্ছেদ ৬৫(২)(৩) ও (৩ক) জাতীয় সংসদের নির্বাচন-বিষয়ক। এ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- একক আঞ্চলিক নির্বাচনী এলাকাগুলো থেকে প্রত্যক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে আইন অনুযায়ী নির্বাচিত ৩০০ সদস্য এবং তাদের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে নির্বাচিত ৫০ মহিলা সদস্য, সর্বমোট ৩৫০ সদস্য সমন্বয়ে সংসদ গঠিত হবে।
আমাদের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২১(১)-এ সুস্পষ্টরূপে বিবৃত হয়েছে- সংবিধান ও আইন মেনে চলা, শৃঙ্খলা রক্ষা করা, নাগরিক দায়িত্ব পালন করা এবং জাতীয় সম্পত্তি রক্ষা করা প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য।

আমাদের সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে অনুচ্ছেদ (৭ক) সন্নিবেশন করে কতিপয় অসাংবিধানিক কাজকে রাষ্ট্র্রদ্রোহিতাসম অপরাধ গণ্যে প্রচলিত আইনের অন্যান্য অপরাধের জন্য নির্ধারিত দণ্ডের মধ্যে সর্বোচ্চ দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, প্রচলিত আইনের নির্ধারিত দণ্ডগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ দণ্ড হলো মৃত্যুদণ্ড। অনুচ্ছেদটির ভাষ্য থেকে ধারণা পাওয়া যায়, অনুচ্ছেদটিতে বর্ণিত অসাংবিধানিক কাজের সাজা মৃত্যুদণ্ড। অনুচ্ছেদটির ১(ক) ও (খ) দফায় বিবৃত হয়েছে- কোনো ব্যক্তি শক্তি প্রদর্শন বা শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে বা অন্য কোনো অসাংবিধানিক পন্থায় এ সংবিধান বা এর কোনো অনুচ্ছেদ রদ, রহিত বা বাতিল বা স্থগিত করলে বা তা করতে উদ্যোগ গ্রহণ বা ষড়যন্ত্র করলে কিংবা এ সংবিধান বা এর কোনো বিধানের প্রতি নাগরিকের আস্থা, বিশ্বাস বা প্রত্যয় পরাহত করলে কিংবা তা করতে উদ্যোগ গ্রহণ বা ষড়যন্ত্র করলে- তার এ কাজ রাষ্ট্রদ্রোহিতা হবে এবং সে ব্যক্তি রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে দোষী হবে।

অনুচ্ছেদ (৭ক) সংবিধানে সন্নিবেশন-পরবর্তী দেশের সচেতন নাগরিকদের মধ্যে প্রশ্নের উদয় হয়েছে, অনুচ্ছেদটিতে বর্ণিত অসাংবিধানিক পন্থার ব্যাপ্তি কতটুকু? সচেতন নাগরিকদের একটি অংশের ধারণা, অনুচ্ছেদটি সন্নিবেশনের মাধ্যমে সংবিধান রদ, রহিত বা বাতিল বা স্থগিত করে যেকোনো ধরনের অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতার পালাবদল নিষিদ্ধ করে এটিকে অপরাধ গণ্যে সর্বোচ্চ সাজার দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান করা হয়েছে। সচেতন নাগরিকদের অপর অংশটি উল্লিখিত ধারণার সাথে সহমত ব্যক্ত করে অভিমত পোষণ করে যে, সংবিধান পরিপন্থী যেকোনো কাজই সংবিধান বা এর কোনো বিধানের প্রতি নাগরিকের আস্থা, বিশ্বাস বা প্রত্যয় পরাহত করাকে আকৃষ্ট করে। আর তাই একজন সাংবিধানিক পদধারী তার শপথের ব্যত্যয়ে বা দেশের যেকোনো নাগরিক তার নাগরিক দায়িত্বের ব্যত্যয়ে সংবিধান পরিপন্থী কোনো কাজ করলে তা স্পষ্টত অনুচ্ছেদ ৭ক(১)(খ) কে আকৃষ্ট করে, এমনটিই প্রতীয়মান হয়।

আমাদের দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী প্রণয়ন-পরবর্তী অনুষ্ঠিত হয়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, দশম সংসদ নির্বাচনে ১৫৩টি সংসদীয় আসনের প্রার্থী বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রার্থীর এ ধরনের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৫(২)-এর ভাষ্য অনুযায়ী বৈধ কি-না স্বভাবত প্রশ্নটি দেখা দেয়। একাদশ সংসদ নির্বাচন বিষয়ে দেশের ও বিদেশের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা যায়, আনুষ্ঠানিক ভোটগ্রহণ শুরুর আগের রাতে ব্যালট পেপারে সিল মেরে ভোটের বাক্স পূর্ণ করা হয়। আনুষ্ঠানিক ভোটগ্রহণকালে ভোটার উপস্থিতি নগণ্য থাকলেও প্রায় প্রত্যেক প্রার্থীর ক্ষেত্রে দেখা গেছে, বিপুল ভোট পেয়ে নির্বাচিত হওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। জাতীয় সংসদ বা স্থানীয় শাসনব্যবস্থার অধীন পরিচালিত নির্বাচনে ভোটগ্রহণ কখন অনুষ্ঠিত হবে তা সংশ্লিষ্ট আইনে সুস্পষ্টরূপে উল্লিখিত রয়েছে। সংশ্লিষ্ট আইনে উল্লিখিত সময়ের উপেক্ষায় বা অবজ্ঞায় অন্য কোনো সময় অবৈধ পন্থায় ভোটগ্রহণ করা হলে তা কখনো সংশ্লিষ্ট আইন ও সংবিধানের দৃষ্টিতে বৈধ নয়। এ ধরনের অবৈধ কাজ সংবিধান বা এর বিধানের প্রতি নাগরিকের আস্থা, বিশ্বাস বা প্রত্যয় পরাহত করার শামিল নয়, এ ধরনের যুক্তি দেখানোর অবকাশ কোথায়?

আইন, বিচার ও সংসদ-বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক মুদ্রিত সংবিধানের বাংলায় পাঠ ও ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ উভয়টি নির্ভরযোগ্য মর্মে সংবিধানে উল্লেখ রয়েছে। সংবিধানের বাংলা পাঠটি সহজ, সরল ও সাবলীল। স্বাভাবিক জ্ঞানসম্পন্ন দেশের যেকোনো সচেতন নাগরিক সংবিধানের বাংলা পাঠটি পড়লে তার পক্ষে নাগরিকের অধিকার ও দায়িত্ব বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা লাভের অবকাশ ঘটে। সাধারণ পাঠের মাধ্যমে যেসব বিষয়ে সংবিধানের ব্যক্ত অবস্থান সম্পর্কে সহজে ধারণা পাওয়া যায় তা নিয়ে অহেতুক বিতর্ক কোনোভাবে কাম্য নয়। সংবিধান ও আইনের ব্যক্ত অবস্থান মেনে চলে আমরা যদি আমাদের জাতীয় ও নাগরিক জীবনের সর্বাঙ্গীণ কার্যক্রম পরিচালনা করি তাহলে দেশের স্থিতিশীলতা, উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি অবধারিত আর এর ব্যত্যয় কখনো রাষ্ট্রপরিচালনার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য সুখকর নয়।

লেখক : সাবেক জজ, সংবিধান, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষক
Email : iktederahmed@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement