২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`


কিসের নেশায় কেমন করে

নেপালের পোখারা - ছবি : সংগৃহীত

চিরতরে হারিয়ে গেলেন টাইটানের ৫ আরোহী। টাইটান উদ্ধার অভিযানের করুণ পরিসমাপ্তি, সর্বত্র শোকের ছায়া। অজানাকে জানার, অদেখাকে দেখার কৌতূহল মানুষের চিরন্তন। অজানাকে জানার হাতছানি দেয় সাগরের তলা এবং পাহাড়ের চূড়াও। অদম্য আগ্রহ মানুষকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে তা টাইটানের পরিণতি না দেখলে বিশ^াস করা যায় না। টাইটানের ৫ আরোহীর মধ্যে তিনজন হলেন হামিশ হাডিং (ব্রিটিশ বিলিয়নিয়ার), ব্রিটিশ ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদ ও তৎপুত্র সোলেমান দাউদ। তাদের এই মর্মান্তিক অভিযানের ঘটনায় মনে পড়ে গেল নেপালে সূর্যাস্ত দেখার জন্য পাহাড় চূড়ায় আরোহণের ভয়ঙ্কর অভিযানের কথা। বেলা ৩টায় ফিয়ালেক থেকে হোটেলে চলে আসি। গাইড কৃষ্ণ প্রসাদ আচার্য্য সাড়ে ৪টায় এসে সূর্যাস্ত দেখাতে নিয়ে যাবে। বলে গেছে- ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যে আমরা যেন লাঞ্চ সেরে প্রস্তুত থাকি। সে মোতাবেক ড্রাইভারকে নির্দেশ দিয়ে লেক সাইড এলাকা থেকেই চলে যায় গাইড। সাড়ে ৪টায় গাড়িসহ আচার্য্য আসে।

লেক সাইড থেকে যে পথ দিয়ে এসেছিলাম ঠিক সে পথ ধরেই অগ্রসর হয় গাড়ি। লেক সাইডের কাছাকাছি গিয়ে ডান দিকে টার্ন করে পাহাড়ের উপরে উঠতে থাকে। একবার ডানে একবার বামে, ঘুরে ঘুরে ক্রমশ ওপরে উঠছি তো উঠছি। পোখারা ভ্যালিটা একবার চোখে আসে আবার আড়ালে চলে যায়। যতই উপরে উঠছি পোখারা ভ্যালি যেন ততই ছোট হয়ে আসছে। বাড়িঘর দালান-কোঠা ছবির মতো দেখাচ্ছে। মাঝে মাঝে চায়ের দোকান। মোড়ে মোড়ে ভূমির ঢালু অংশ সমান করে দোকান বসিয়েছে। বিক্রি করছে চিপস্, বিস্কুট, চা, কফি ও নানারূপ পানীয়। এভাবে চল্লিশ মিনিট চলার পর বেশ প্রশস্ত এক জায়গায় গাড়ি থামে। আমাদের আগেও কয়েকটা গাড়ি থেমেছিল সেখানে। আমরা মোট রাস্তার নব্বই পারসেন্ট পৌঁছে গেছি। টেন পারসেন্ট পায়ে হাঁটতে হবে, বিশ মিনিটের বেশি লাগবে না বলে জানায় গাইড।

বেলা ডোবার তখনো চল্লিশ মিনিট বাকি আছে। তাহলে আমরা বিশ মিনিট আগেই পৌঁছতে পারব। আমাদের বাম দিকে ফিয়ালেক আর ডান দিকে অন্নপূর্ণা পর্বতমালা। অন্নপূর্ণার বিচ্ছিন্ন একটা চূড়া বেয়াড়াভাবে একেবারে সামনে চলে এসেছে এর নাম মচ্ছপুচ্ছ (ঋরংয ঃধরষ)। মচ্ছপুচ্ছের তুষারগুলো খুব নিকটে দেখা যাচ্ছে। মনে হয়-চোখ বুজে দৌড় দিলে এইবেলা পৌঁছে যেতে পারব। ঢালে পাথরের নির্মিত সিঁড়ি বেয়ে মিনিট দশেক হাঁটার পর ডানদিকে আরো একটা টি-স্টল। সঙ্গীদের অনেকে আর উপরে উঠতে রাজি হলো না। আমার চিকিৎসক আমাকে সিঁড়ি বেয়ে তিন তলায় উঠতেই বারণ করে দিয়েছিল।

সব মিলিয়ে তিনশ তলার বেশি উঠে গেছি। আরো উঠতে হবে। শিশু-কিশোর পর্যটকরা আমাদের ছেড়ে গাইডের পেছনে পেছনে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। দল নেতাকে পেছনে ফেলে আমাদের এক দলনেত্রীও উপরের দিকে যাচ্ছে। আমারও ইচ্ছে- যে করেই হোক উপরে উঠব। আমার ঢাকার ফ্ল্যাট দশতলায়, লিফটে ওঠানামা করতে হয়। কোনো কারণে লিফট বন্ধ থাকলে সমস্যা দেখা দেয়। কর্তৃপক্ষ তখন এক তলা পরপর চেয়ার পেতে রাখে। যারা আমার মতো- তারা কয় সিঁড়ি ওঠার পর চেয়ারে বসে বিশ্রাম নেয়। তারপর আবার অভিযান শুরু করে। সূর্যান্ত দেখার জন্যে পর্বতারোহণ অভিযানে আমি সেভাবেই উপরে উঠতে চাই। বাধা হয়েছে সময়। আমার মতো করে উঠলে আজকের সূর্যাস্ত দেখার আশা বাদ দিতে হবে। ক্ষুদে পর্যটকদের কথা আলাদা। ওরা খেলার মাঠে যেভাবে দৌড়ায় পাহাড়ের ঢালে সেভাবেই দৌড়ায়। একটানে আকাশে ওঠে যেতে চায়।
আমি আর পারছিনে-এর পরেও খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে জিরিয়ে জিরিয়ে কেবলই উপরের দিকে যাচ্ছি। আমার আগে আগে যাচ্ছে দলনেত্রী। পরনে হলুদ রঙের সালোয়ার কামিজ। দলনেত্রীর হাত ছাড়া হয়ে আগে আগে যাচ্ছে তিন শিশু। শিশুদের বয়স চার থেকে আট বছরের মধ্যে। সবার আগে গাইডের পেছনে পেছনে গেছে আমাদের তিন তরুণ পর্যটক। মিনিট দশেক হাঁটার পর আমি হাঁফিয়ে উঠি বিশ্রাম ছাড়া আর হাঁটা সম্ভব নয়। রণেভঙ্গ দিয়ে পেছনে রয়ে গেছে সাত জন। এ অবস্থায় বিশ্রাম নিতে গেলে আমি দল ছুট হয়ে পড়ব। বাম দিকের দোকান বরাবর আসতেই দলনেত্রী আমার দিকে ফিরে,

-দুলা ভাই, আপনি এক বোতল কোক নিয়ে আসেন। আমাকে ছেড়েই উপরে চলে গেছে বাচ্চারা। আমি বাচ্চাদের থামাতে পারছি না।
আমি কোক নিয়ে দাম চুকিয়ে দেখি, নেত্রীও অনেক দূর পৌঁছে গেছে। বেলা ডুবতে আর বেশি বাকি নেই। তিন দিন আগে অমাবস্যা গিয়েছে- আঁধারের রেশ এখনো কাটেনি। বেলা ডোবার পর পর আঁধার যখন জেঁকে বসতে শুরু করবে তখন ওপর থেকে নিচে নামা সমস্যা হবে। আগে যারা গিয়েছে তাদের ডেকে থামিয়ে দেবো, সে সুযোগ নেই। আমার কাঁধে ট্যুরিস্ট ব্যাগ, হাতে কোকের বোতল। বেলা ডুবতে মাত্র দশ মিনিট বাকি। দশ মিনিটে কিছুতেই চূড়ায় ওঠা সম্ভব হবে না। কষ্ট করে উঠলেও সূর্যাস্ত দেখা যাবে না। এ জাতীয় সুবিধা অসুবিধার হিসাব করে অসুবিধার পাল্লা বেশি ভারী হয়ে পড়ায় আর একটু উঠে ডান পাশের টিস্টলে বসে পড়ি। টি-স্টলের পশ্চিম দিক খোলা। খোলা অংশের বাইরে ভূমির সাথে বিশেষভাবে সংযুক্ত একজোড়া বেঞ্চ ছাড়াও ছিল দুটো হাতলবিহীন চেয়ার। ওখানে বসে সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখার সাধ কিছু পূরণ হবে বলে জানায় একমাত্র মহিলা বিক্রেতা।

মহিলার পরামর্শে সেখানে বসে পশ্চিমাকাশের সূর্য দেখতে চেষ্টা করি। সূর্যের রশ্মি দেখতে পাই। এভাবে দুধের স্বাদ ঘোলে মিটিয়ে পর্যটকদের নেমে আসার অপেক্ষায় বসে রইলাম। মিনিট বিশেক পার হয়ে গেল। অভিযাত্রীদের কেউ অবতরণ করছে না। আলো আঁধারি পরিবেশ। ওপরে নিচে ওঠানামার পথে কিছু দূর পরপর মিটমিট করে জ্বলছে বৈদ্যুতিক বাতি। মানুষের ওঠানামার কোনো সাড়া শব্দও পাওয়া যাচ্ছে না। তবে কি নিচে নামার জন্যে ভিন্ন কোনো রাস্তা আছে? সে পথ দিয়ে কি নেমে গেলো তারা! আমি যে এখানে আছি কেউ জানে না। সবাই গাড়িতে উঠে আমার জন্যে অপেক্ষা করছে নাতো! এ রকম নানা কথা ভাবতে ভাবতে নিচে নামতে শুরু করি। মিনিট দশেকের মধ্যে গাড়ির নিকট চলে আসি। দেখি, রণে ভঙ্গ দেয়া পর্বতারোহীরা পাশের দোকানে বসে গাইডের উদ্দেশ্যে গালাগাল করছে। গালাগালের কারণ হলো, ফিয়ালেকের পাশেই সূর্যাস্ত দর্শনের উঁচু পাহাড়। বেলা ৩টায় হোটেলে না ফিরে লেকের পাশের কোনো খাবারের দোকান থেকে খাওয়া দাওয়া করে পর্বতারোহণ শুরু করলে সূর্যাস্তের পূর্বে চূড়ায় ওঠা সম্ভব হতো। ও বেটা যে পথ বিশ মিনিটে ওঠা যাবে বলে জানিয়েছিল সে পথ পার হতে আমাদের কমপক্ষে এক ঘণ্টা লাগবে। সূর্যাস্ত দেখা গেল না। সূর্যাস্ত দেখার জন্যে আমাদের যারা উপরে গিয়েছে তাদেরও দেখা যাচ্ছে না। তিন শিশুসহ দলনেত্রী মহিলাটা নিয়ে সবার দুশ্চিন্তা বাড়ছে।

জাহাঙ্গীর ভাই সম্পূর্ণ ব্যাপারটি পরিদর্শন করে এই মাত্র রিপোর্ট দিয়েছে। তার রিপোর্ট অনুসারে তিনি দলনেত্রীর হলদে সালোয়ার পরা একজনকে নামতে দেখেছেন। বিশ্বাস হলো-হলদেটা আমাদেরই লোক। নিশ্চিত হয়ে ছোলা মিলিয়ে ঝালমুড়ি খেতে শুরু করি। মিনিট ত্রিশেক পার হয়ে গেল, ছোলা ঝালমুড়ি ফুরিয়ে গেল-তার পরেও ওরা আসছে না। পনের জনের মধ্যে মাথা গুনে আটজন উপস্থিত পাওয়া গেল, বাকি সাতজনই উপরে গিয়েছে। এমন অন্ধকারে উপরে গিয়ে খোঁজ খবর নিয়ে আসব সে সাধ্য কারো নেই। সময় যতই বাড়ছে ভয় আতঙ্ক ততই বাড়ছে, বিশেষ করে একজন মায়ের পক্ষে তিনজন শিশু নিয়ন্ত্রণে রেখে নিচে নেমে আসা সহজ কথা নয়। ছোলা মুড়ি খেয়ে পানি পান করতে গিয়ে দেখি, রেস্টুরেন্টে পানি নেই। বোতল কিনতে হবে। মনে করলাম, পানি বিক্রির নতুন কৌশল। নেপালের প্রাকৃতিক পানি যে একবার পান করবে সে কারখানার বাজারজাত পানি পান করতে যাবে কেন? এমন সময় হ্যাংলো মতো একজন লোক সিলভারের পাত্রে করে পানি নিয়ে হাজির। অনুমান বিশ পঁচিশ লিটার পানিসহ পাত্রের গলায় রশি বেঁধে রশির উপরের অংশ কপালে ঠেকিয়ে তরতর করে চলে এসেছে। পানির পাত্রসহ মেদহীন লোকটা যে পথ হেঁটে এসেছে সে পথ হেঁটে আসতে আমার একদিন লাগবে।

রাত ৭টার দিকে দলনেত্রী তিন শিশু পর্যটকসহ হাঁফাতে হাঁফাতে নেমে আসে। কেন উঠেছিল, কিভাবে উঠেছিল, ওঠার পরে কি হয়েছিল নামলোই বা ক্যামোন করে, হাঁপিয়ে হাঁপিয়ে সে অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করতে শুরু করে। মানুষ যত শিক্ষিতই হোক, উচ্ছ্ব¡াস আর আবেগের সময় আঞ্চলিক ভাষায় ভাব প্রকাশ করতে হয়। আমাদের দলনেত্রীও আঞ্চলিক ভাষায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে শুরু করেন।

‘উপরে কি এমনে গেছি। হোলাহাইন আমারে রাই উপরে চলি যাইচ্ছে। আই অ¹ারে ধইল্লে আরো¹াা চলি যায়। বলাইলেও হুনে না। ইয়ার লাই আঁই গেছি হেগুনের হিছনে হিছনে। সামনে যাই দেই-দু’দিগে দুই আন হথ। আই কন দিগে যাইম। হোলাহাইন যে দিগে যায় আঁইও হে দিগে যাই। কদ্দুর উপরে যাই, আঁই দেই-কি সুন্দর বাড়ি ও দোয়ান এককান। সূর্য কতকনে ডুবি গেছে আঁই কইতাম হাইডাম ন। সূর্য কেমনে ডুবে-হেইটা দেওন লাগত ন। হোলাহাইন এগুনরে লই কেন্নে নামুম চিন্তায় ভালা লাগে না। হাত্তর দি সিঁড়ি বানাইচে, সিঁড়ি ঠিক মতো বানান অয় ন। ওঠন তুন নামন বেশি কষ্ট অইবো। আমার মাইয়াগা নামতে সিঁড়ি দি ঠেঙ হালাইতে অন্য সিঁড়িত ঠেঙ হড়ি গেছে। লগে লগে ধরি হালাইছি। অল্পের লাই এনা তুই বাঁচি গেছত। হোলা ইগার ঠেঙের জুতা হড়ি গেছে, আবার লাগাউম হেটাও হাইডাম ন। ঠেঙ একখান খালি রাই চলি আইছি।'

পরদিন সূর্যোদয় দেখানো হবে। সূর্যোদয় দেখতে হলে যেতে হবে নগরকোট। সেদিনই চলে গিয়েছিলাম নগরকোট। নগরকোট পাহাড়ের চূড়ায় সাত হাজার দু'শো ফুট ওপরে হিমালয় ক্লাবে রাত্রিবাস। নগরকোট সূর্যোদয় দেখার অপর একটা স্পট। সেখান থেকে সূর্যোদয় আরো ভালো দেখা যায়। আগের দিন সকালে পোখারা থেকে রওয়ানা হয়ে নগরকোট হিমালয় ক্লাবে সন্ধ্যায় পৌঁছতে পেরেছি। ফিয়া লেক সাইডের মহেন্দ্রকেভ পাহাড়ের উচ্চতার চেয়ে হিমালয় ক্লাবের উচ্চতা দেড় হাজার ফুট বেশি। কাঠমান্ডু থেকে ত্রিশ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে নগরকোট। কাঠমান্ডু ভ্যালি ছেড়ে আসার পরপরই শুরু হয় পাহাড়। ত্রিশ কিলোমিটার পুরো এলাকাই পাহাড়, যার মধ্যে ঘুরে ফিরে শুধু উপরেই উঠেছি। দশ কিলোমিটার দূর থেকে পাহাড়ের চূড়ায় আকাশের কাছাকাছি যে পিংক বর্ণের চিহ্নটি দেখেছিলাম, বিকেলের সূর্যালোক যেখানে প্রতিফলিত হয়ে ঠিকরে গিয়ে আমাদের চোখে পড়েছিল- বাসে বসে বুঝতে পারিনি যে, আমরা আকাশের কাছাকাছি সে গোলাপি চিহ্নের দিকেই এগুচ্ছি। গোলাপি চিহ্নিত স্থানটিই ক্লাব হিমালয়। নগরকোট আসার পথে দু’পাশের গিরিখাদে হাজার হাজার গাছ দেখেছি। এক একটা গাছের উচ্চতা আনুমানিক সোয়া শ’ফুট। সূর্যোদয় দেখতে হলেও উঠতে হবে ভোর সাড়ে ৫টায়। পৌঁছতে হবে পাহাড়ের চূড়ায়। নগরকোট হিমালয় ক্লাবের সামনেই পাহাড়চূড়া। সাপের মতো এঁকেবেঁকে গাড়িই চলে এসেছে পাহাড়চূড়ায়।

ভোর ৫টার দিকে চূড়ায় উঠেই বামদিকেই শুনি শ’ শ’ মানুষের কলকোলাহল। রাঙা সূর্যোদয় দেখার জন্যে আর চাঙ্গা মনোবলের প্রয়োজন হবে না। যেখানে দাঁড়িয়েছি সেখান থেকেই সূর্যোদয় দেখা যাবে। বামদিকে ছোট একটা টিলা। টিলায় গিজগিজ করছে লোকজন। পূর্বাকাশ তখনো কালো। কালোতে আলো দেখার জন্যেই এ শীতের মাঝে উষ্ণ বিছানা ছেড়ে অন্ধকারে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে প্রতীক্ষা করছে দর্শনার্থীরা। মানুষের বিচিত্র সব পিপাসা। লাখ লাখ বছর ধরে সূর্য ওঠা-ডোবা করছে। জন্মের পর থেকে এর কোনো অনিয়ম দেখছি না। সে সূর্য কেমন করে ওঠে। অস্ত যায় কেমন করে? তা দেখার জন্যে কষ্টার্জিত টাকা খরচ করে এতদূর চলে এসেছে। মৃত্যুকে উপেক্ষা করে পাহাড়ের চূড়ায় উঠে চোখ মেলে প্রতীক্ষা করছে, কখন সূর্য উঠবে। পূর্বাকাশ যতোই ফর্সা হচ্ছে দর্শনার্থীদের আনন্দ চঞ্চলতা, ততই উজ্জ্বল হয়ে উঠছে। পূর্ব গগনে কুমকুম ছড়িয়ে পড়তেই ক্যামেরায় ক্লিক ক্লিক শুরু হয়ে যায়। দক্ষিণ-পূর্ব দিকের কাঞ্চনজঙ্ঘার পেছন থেকে লাল টুকটুক কমলার মতো সূর্য উঠতে শুরু করে। দেখতে না দেখতে লাল কমলার শরীরে যৌবন আসতে শুরু হয়। পলকের মধ্যে বদলে যায় এর চেহারা। জোশ তেজ বাড়ছে। এখন আর তাকানোই যাচ্ছে না সূর্যের দিকে। অজানাকে জানার, অদেখাকে দেখার কৌতূহলও শেষ, আস্তে আস্তে লোকজন কমতে শুরু করে। (সময়কাল ০৩/১১/০৫ ইং)
লেখক : আইনজীবী ও কথাসাহিত্যিক

E-mail : adv.zainulabedin@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement
বিএনপি গরিবের পাশে দাঁড়ায় আর আ’লীগ সরকারি ত্রাণ চুরি করে : ইশরাক চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে বৃষ্টির পূর্বাভাস সেন্ট লুইসে ইসরাইলবিরোধী সমাবেশ থেকে আটক মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জিল স্টেইন গাজা বিষয়ক সম্মেলনে আতিথেয়তা করবে সৌদি আরব চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড শ্রীনগরে নাতিকে মাদরাসায় দিয়ে ফেরার পথে ট্রেনের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু ইউক্রেনের ১৭টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে রাশিয়া গ্রেফতারের আতঙ্কে নেতানিয়াহু, প্রতিরোধের চেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্রও চলছে মেসি ঝলক, আবারো জোড়া গোল উল্লাপাড়ায় গাড়িচাপায় অটোভ্যানচালক নিহত থাইল্যান্ড সফর শেষে সোমবার দেশে ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী

সকল