২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পুরস্কার তিরস্কার ও বিনোদন

-

নয়া দিগন্তের দেড় যুগ পূর্তি উৎসব উপলক্ষে বিশেষ ক্রোড়পত্রের দ্বিতীয় পর্ব প্রকাশিত হয়েছিল ৬ নভেম্বর। ফলে, ৬ নভেম্বর রোববার আমার নিয়মিত কলাম প্রকাশিত হয়নি। রাতেই আসতে থাকে ফোন। কয়েকজনের ফোন এড়ানো গেলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ইউসুফের ফোনটি এড়ানো গেল না। এড়ানো গেল না কুমিল্লার খাজা মঈন উদ্দিনসহ আরো কয়েকজনের ফোন। বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় যারা লেখেন তাদের অজান্তেই একটা পাঠক বলয় গড়ে ওঠে। পাঠকের সংখ্যা বলা সম্ভব না হলেও এই বলয়ের পরিধি উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরু পর্যন্ত বিস্তৃত। তথ্যের প্রয়োজন হলেই আমরা গুগলের সাহায্য নিই। গুগলে ঢুকলেই বের হয়ে আসে শত শত লেখকের লেখা ও তথ্য। আমরা যেভাবে অন্যের লেখা পাঠ করি অন্যরাও সেভাবে আমাদের লেখা পাঠ করে। সুইডেনের লিনিয়াস বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র লেকচারার; বাড়ি মুন্সীগঞ্জ। কাঠ বিষয়ে পিএচডি লেকচারার, আমার ভিজিটিং কার্ডের ছবির দিকে তাকিয়েই, আমি নয়া দিগন্ত থেকে আপনার লেখা পড়ি। উত্তর মেরুর দেশ সুইডেনে কাগজের পত্রিকা যায় না, তারা পত্রিকার ভাষা ও কথা পাঠ করেন ওয়েবসাইট থেকেই। এ রকম বিশ^জুড়েই রয়েছে পাঠকবলয়। এই পাঠকবলয়ের ভালোবাসার কারণেই, দেশের বাইরে গিয়েও মূল্যবান উপহারসহ পেয়েছি অনেক ভালোবাসা। আমি মূলত ভ্রমণকাহিনী লেখক। আমার লেখার শুরু ‘টুইন টাওয়ারের দেশে, বিলেতের পথে পথে, তুষার কন্যার দেশে, দিল্লি আগ্রা ও আজমির’ ইত্যাদি সবই ভ্রমণ কাহিনী। আমার পাঠের তালিকায়ও প্রথম পছন্দ ভ্রমণকাহিনী। বইমেলায় ঢুকেই খোঁজ করি নতুন ভ্রমণকাহিনীর।

রাব্বুল আলামিন-এর ভাষার (সূরা ১২ আয়াত ১০৯) তাৎপর্য অনুসারে মানবজীবন (আত্মা) অনন্ত ভ্রমণের ভ্রমণকারী। ইসলাম ধর্মে ভ্রমণকারীর জন্য রয়েছে নানা সুযোগ-সুবিধা। ভ্রমণ একজনকে সঙ্কীর্ণতার কূপমণ্ডুক থেকে বৃহত্তের দিকে আহ্বান করে। আমরা অপরিচ্ছন্ন শহরের ঘনবসতিপূর্ণ অসুখী দেশের মানুষ। সুখী দেশ দেখার শখ বহুদিনের। উদ্দেশ্য, সুখী দেশের সুখের কারণগুলো খুঁজে খুঁজে অসুখী দেশে এনে অবমুক্ত করা। এই উদ্দেশ্যেই এবারের দেশভ্রমণ। এবারের ভ্রমণ তালিকায় সুইডেন, ডেনমার্ক, ফ্রান্স ও লন্ডন (ইংল্যান্ড) এই চার দেশের মধ্যে প্রথম দু’টি দেশ প্রতি বছর সুখী দেশের তালিকায় প্রথম দশের মধ্যে অবস্থান করে। এখন যেসব দেশকে সুখ-শান্তির দেশ বলা হচ্ছে এক সময় বাসের অযোগ্য ছিল সেসব দেশ। অযোগ্য দেওদানার দেশ ছিল; পাহাড়, ডোবা-নালা-হ্রদ, ঝোপ-জঙ্গল, বরফাচ্ছন্ন। ইতিহাসে পড়েছি, ভাইকিং জলদস্যুরা সমুদ্রের জাহাজসহ আশপাশের দেশ লুটপাট করে ওইসব ঝোপ-জঙ্গলে আত্মগোপন করতো। দেওদানা আর জলদস্যুর দেশ আবার বিশ্বের শীর্ষ সুখী দেশ হয় কী করে? এসব জানার জন্যই গিয়েছিলাম, শুরু করেছিলাম লেখাও। হঠাৎ চোখ পড়ে, ‘এক আইনজীবীর ১২ কোটি টাকা ফি’! এক আইনজীবীর এক টাকা ফি-ও আমি দেখেছি। আদালতপাড়ার জানা-অজানা কাহিনী নিয়ে শুরু হয় লেখালেখি। টানা আড়াই মাস পর আমার প্রকাশক জানতে চায়, ভ্রমণকাহিনী কতটুকু হলো?

প্রায় এক যুগ দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকায় মতামত বিভাগে লেখালেখি। বছর দু’য়েক থেকে নিয়মিত উপসম্পাদকীয়তে। উপসম্পাদকীয়ের এবং ভ্রমণকাহিনীর ভাষা এক নয়। চটুল ভাষাসহ পরতে পরতে ছবি ছাড়া ভ্রমণকাহিনী জমে না। গুরুগম্ভীর ও রাশভারী চালের উপসম্পাদকীয়তে ভ্রমণের বাহারি ছবি মানায় না। শুধু পাঠকপ্রিয়তার কারণে পত্রিকা কর্তৃপক্ষ উপসম্পাদকীয়ের পাতায় ভ্রমণকাহিনী প্রকাশ করেছেন। একদিকে আইন পেশা, ভ্রমণকাহিনী, উপসম্পাদকীয় চাপ, অপর দিকে পাঠক বলয়ের অকৃত্রিম ভালোবাসা প্রাপ্তির লোভ। লোভটা ছাড়তে পারছি বলেই কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছি যে, উপসম্পাদকীয়ের রাশভারী লেখার মাঝে লঘু চালের ভ্রমণকাহিনী পাঠকের কাছে মন্দ লাগবে না, বরং ঝাল-টক-মিষ্টি চাটনির মতো কাজ করবে।

ভ্রমণকাাহিনী লেখক হওয়ার জন্য লেখালেখির সক্ষমতা ছাড়াও আর্থিক যোগ্যতা লাগে। আর্থিক যোগ্যতা ছিল না আমারও। আমি একটি রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আইন উপদেষ্টা। প্রতিষ্ঠানটি কাজ আদায়ের দিক দিয়ে কঠোর, ভ্রমণ-বিনোদনের দিক দিয়ে কোমল। তাই, আমার নতুন ভ্রমণকাহিনী শুরু করার আগে যে প্রতিষ্ঠানের হাতে বিদেশ ভ্রমণের হাতেখড়ি সে প্রতিষ্ঠানের ভ্রমণ-বিনোদন প্রকাশ না করে পারছি না। কর্মীবান্ধব প্রতিষ্ঠানটি এই কঠিন-কোমল নীতির কারণেই ‘রূপায়ণ আর্ট ভিউ’ নামক সাইনবোর্ড ব্যবসায়ের সামান্য গুল্ম থেকে আজ মহীরুহ। মহীরুহের আকার ধারণ করার কারণটি টের পাই নতুন নিয়োগকালে। আইন শাখায় নিয়োগকালে ইন্টারভিউ বোর্ডে আমিও উপস্থিত থাকি। যদি প্রশ্ন করি- এই প্রতিষ্ঠানের নিয়মনীতি খুবই কড়া, কাজে আগমনের সময় নির্ধারিত হলেও প্রস্থানের সময় নির্ধারণ নেই। তার পরেও অন্য প্রতিষ্ঠান ছেড়ে এখানে আসতে চান কেন?

-স্যার, এই প্রতিষ্ঠানে কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে যেকোনো প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করা সহজ।

অর্থাৎ এ প্রতিষ্ঠানে যেসব নীতি অনুসরণ করা হয় এর মধ্যে অন্যতম, ১. এখানে রয়েছে পুরস্কার তিরস্কার ও বিনোদনের সহাবস্থান ২. মেধা বিকাশের উপযুক্ত স্থান ৩. একাডেমিক সার্টিফিকেট নয়- কাজই যোগ্যতার মাপকাঠি এবং ৪. ধৈর্যশীলদের উপরে ওঠার সিঁড়ি। প্রতিষ্ঠানের ভ্রমণ-বিনোদনের স্পট কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন, মালয়েশিয়া, নেপাল, দিল্লি, আজমির ইত্যাদি দর্শনীয় স্থান ও দেশ। তাদের প্রতিটি ভ্রমণ-বিনোদনে বরাবরই আমি উপস্থিত থাকি। আমার মুখে ‘সত্তরের দশকে সেন্টমার্টিন’-এর কাহিনী শুনেই শুরু হয় ভ্রমণ।

২০০১ সালের ডিসেম্বর মাস। লক্ষ্য সেন্টমার্টিন দ্বীপ। ট্যুরিস্ট সংখ্যা ৩৫ জন। ঢাকা থেকে টেকনাফ কমবেশি ১২ ঘণ্টার পথ। টেকনাফ থেকে নদী ও সাগরপথে ৩ ঘণ্টার পথ সেন্টমার্টিন। আসা-যাওয়া করতে হবে জোয়ার-ভাটা ধরে। দ্বীপে খাওয়ার ব্যবস্থা থাকলেও থাকার ব্যবস্থা তখনো ছিল না। যেহেতু থাকার ব্যবস্থা নেই, সেহেতু দ্বীপ দেখা শেষ করে দিনে দিনেই ফিরে আসতে হবে। সাগরের বিপদসঙ্কুল পথে রাতবিরাতে চলাচল নিষিদ্ধ। কক্সবাজার পার হয়ে ইনানি পৌঁছতেই রাত হয়ে যায়। সেখানে রাত কাটিয়ে সকাল ৮টায় পৌঁছে যাই টেকনাফ। ‘নাফ’ ও ‘নাফ সীমান্ত’ নামক দুই হোটেল থেকে আটটি কক্ষ ভাড়া করি। বড় সাম্পান রিজার্ভ করে দুপুর ১২টার দিকে দ্বীপে পৌঁছে যাই। নারিকেল আর শুঁটকির রাজ্য সেন্টমাটিন। সাগরের ঢেউ, টানাজাল টেনে মাছ ধরা দেখাসহ শুঁটকি কিনে সাম্পানে ফিরতে দেরি হয়ে পড়ে। সাম্পান যখন টেকনাফ পৌঁছে তখন সাগরে ষোলোআনা ভাটা। ভাটার কারণে মাঝনদীতেই সাম্পানের তলা আটকে যায়। সাম্পানের তলায় কোমর পরিমাণ গ্যালগ্যালে কাদা। এখন উপায়! জোয়ারের অপেক্ষায় গভীর রাত পর্যন্ত বসে থাকা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। সাম্পানের সামনে বাংলাদেশ, পেছনে মিয়ানমার। মাঝামাঝি স্থানটা মোটেও নিরাপদ নয়। সাম্পানেরই এক লোক উপায় হিসেবে এক অভিনব প্রস্তাব নিয়ে এলো। তার প্রস্তাব অনুমোদনের পরগ্যালগ্যালে কাদার ওপর দিয়ে কয়েকজন লোক ডিঙ্গি নৌকা টেনে সাম্পানের কাছে নিয়ে আসে। এক সাথে চার-পাঁচজন করে ডিঙ্গিতে উঠার পর কাদার ওপর দিয়ে ঠেলে পাড়ে নিয়ে যায়। এ পদ্ধতিতে ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই আমরা টেকনাফে অবতরণ করি।

২০০২ সাল। পেট্রোনাস টাওয়ার যখন বিশ্বের সর্বোচ্চ ভবন তখন তা দেখার জন্য রূপায়ণের পরিচালক, উপদেষ্টা ও শুভানুধ্যায়ী এক সপ্তাহের জন্য কুয়ালালামপুর। উঠেছিলাম হোটেল হিলটনে। ‘টুইন টাওয়ারের দেশে’ হাস্যরসে-ভরপুর বইটি তখনই লিখেছিলাম। ২০০৫ সাল ২০ জনের বহর নিয়ে ১৫ দিনের ভ্রমণে বের হয়ে পড়ি। কাঠমান্ডু ও পোখারায় সাত দিন। বিশে^র একমাত্র হিন্দু রাষ্ট্র, যেখানে ১২ মাসে ১৩ পূজার মহাসমারোহ। গরিব হলেও আনন্দের জোয়ারে উচ্ছলতা দেখা শেষ করে ৮ দিনের জন্য কাঠমান্ডু হয়ে দিল্লি। দিল্লি থেকে জয়পুর হয়ে হজরত খাজা মঈনুদ্দিন চিশতি (রহ:) মাজার দর্শন করার জন্য আজমির।

২০০৭ সালের অক্টোবর মাস। ভ্রমণ তফসিল কক্সবাজারে অবস্থানসহ রাঙ্গামাটি। রূপায়ণের চেয়ারম্যানসহ ৫৪ জন। কক্সবাজার দুই রাত কাটতে না কাটতেই শুরু হয় ওয়ান ইলেভেন। কাল থেকে অবরোধ। একদিন আগেই গাড়ি চলাচল বন্ধ। কত দিন অবরোধ চলে কেউ বলতে পারছে না। আমরা ফোন করে ঢাকা-চট্টগ্রামের অবস্থা এবং রাজনৈতিক খবরাখবর নিয়ে জানতে পেরেছি, ঢাকার মোড়ে মোড়ে গণ্ডগোল হচ্ছে। চট্টগ্রামে হরতালসহ অবরোধ শুরু হয়েছে। দূরপাল্লার গাড়ি চলাচল দূরের কথা, স্কুটার চলাচলও বন্ধ। চট্টগ্রামের ওপর দিয়ে রাঙ্গামাটি পৌঁছা কিছুতেই সম্ভব নয়। ঢাকার রাজনৈতিক মাঠ দখলে রাখতে সবাই মরিয়া। যুদ্ধ যুদ্ধ অবস্থা। অনেকেই হতাহত হচ্ছে। অবরোধ না উঠানো পর্যন্ত এখান থেকে নড়াচড়া সম্ভব নয়। কক্সবাজার আটকে পড়ায়, দর্শনীয় স্থানগুলো কিভাবে বিরক্তিকর ও কুদর্শনীয় হয়ে ওঠে তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিলাম কক্সবাজার ১৩ দিন আটকা পড়ে।

কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে বছর দুয়েক ভ্রমণ ও বিনোদন বন্ধ ছিল। মহামারীর প্রকোপ কমতেই আবার শুরু হয়। শুরু ল’ শাখা দিয়ে। রূপায়ণের চারজন ল’ উপদেষ্টাসহ ল’ শাখার কর্মকর্তা ও কর্মচারী। বিনোদনের স্থান ইধংব ঈধসঢ় শফিপুর, সাভার গাজীপুর। ৯ সেপ্টেম্বর ২০২২। ৪ উপদেষ্টার মধ্যে খলিলুর রহমান প্রধান। খলিল ভাই; হাউজিং ও রিয়েল এস্টেট লাইনে কয়েক যুগের অভিজ্ঞতা। তার নিজেরও একটা রিসোর্ট আছে। নাম বর্ণচ্ছটা। ইধংব ঈধসঢ় ট্রেনিং সেন্টার যেখানে আর্মি, পুলিশ ও আনসারদের শারীরিক ব্যায়াম ও প্রশিক্ষণের সরঞ্জাম ও ব্যবস্থা রয়েছে। নাস্তা করার পর ফুটবল খেলা। প্রচণ্ড গরমে স্থানটি মোটেও বিনোদনের উপযোগী ছিল না- ছিল না সুইমিংপুলও। লাঞ্চের পর সবাই বর্ণচ্ছটার উদ্দেশ্যে বের হয়ে পড়ি।

বর্ণচ্ছটা পিকনিক স্পট অ্যান্ড রিসোর্ট। স্থান গোলাপ গ্রাম, সাভারের সাদুল্লাহপুর। রিসোর্টের প্রধান আকর্ষণ শত বছরের পুরনো বটবৃক্ষ। ঠেসমূলসহ গাছটির বেড় ৭০ ফুট আর গোড়ার বাঁধানো এলাকার বেড় ১২০ ফুট। সেই অনুপাতেই প্রসারিত অংশ। বটবৃক্ষ ছাড়াও দেশী-বিদেশী ভাস্কুলার (শিকড়, কাণ্ড এবং পাতা আছে) উদ্ভিদ-এ ভর্তি বর্ণচ্ছটা। এক দিকে বেণীগাছের বেণী দুলছে অপর দিকে গাছ ছাঁটাই করে বানানো হয়েছে হাতির প্রতীক। ‘বর্ণচ্ছটা’ নামটাও লেখা হয়েছে গাছ ছাঁটাই করে। খলিল ভাই নিজে ঘুরে দেখাচ্ছেন হাজার প্রকারের দেশী-বিদেশী গাছ। এক জায়গায় কয়েক প্রকারের ক্যাকটাস দেখে মনে পড়ে গেল লন্ডনের কিউ গার্ডেনের কথা। বিশে^র লাখ উদ্ভিদ নিয়ে কিউ গার্ডেন যেখানে বিশ্বের প্রায় তিন লাখ ৯১ হাজার প্রজাতির ভাস্কুলার উদ্ভিদ রয়েছে। বটগাছের ছায়ায় বসে বাউল ও ভাটিয়ালী গান। ‘ওকি গাড়িয়াল ভাই’-এর সুরের মূর্ছনায় হারিয়ে গিয়েছিলাম অতীন্দ্রিয় জগতে। সুইমিংপুলে নেমে আর উঠতেই মন চাইছিল না। রাতে সুইমিংপুলের চার পাশে পানির তলাসহ বাতি জ্বলে ওঠে। লাল, নীল, হলুদ বাতি। একপাশে গানের আসর। আবার শুরু, ‘তিন পাগলে হলো মেলা নদে এসে’। গান শেষে সন্ধ্যার মায়াবী পরিবেশে কানে আসে বিমানের শব্দ। কাছেই শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। বিদেশ থেকে আগত বিমানগুলো এদিক দিয়েই নামতে শুরু করে। একই দিক থেকে কিছুক্ষণ পর পর বিমান নামতে দেখে মনে পড়ে গেল লন্ডনের ডিয়ার পার্কের কথা। লন্ডনের ‘হিথ্রো বিমানবন্দর’ আর ‘ডিয়ার পার্ক’ যে অবস্থানে আছে সে অবস্থানে রয়েছে, ‘শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর’ আর ‘বর্ণচ্ছটা’ও। বর্ণচ্ছটার বর্ণের সম্মোহনে দিন শেষে সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত গভীর থেকে গভীরতর হয়ে যাওয়ার বিষয়টি একটুও টের পাইনি।

লেখক : আইনজীবী ও কথাসাহিত্যিক
E-mail: adv.zainulabedin@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement